উত্তর কাট্টলীতে মেয়র: লকডাউন জবরদস্তি-দমনমূলক নয়, সেবামূলক দায়বদ্ধতা

সংবাদ ডেস্ক, দৈনিক চট্টগ্রাম >>>
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেছেন, করোনাকালে অবনতিশীল পরিস্থিতি মোকাবেলায় সরকার ঘোষিত লকডাউন কার্যকর করা একটি কঠিন কাজ।  জনস্বার্থ বিবেচনায় লকডাউন জবরদস্তি ও দমনমূলক নয়, এটি সেবামূলক দায়বদ্ধতা।  এই বোধ জাগ্রত করে চট্টগ্রাম মহানগরীর উত্তর কাট্টলীতে প্রথমবারের মতো এলাকাভিত্তিক লকডাউনের অর্জিত সফল অভিজ্ঞতা পরবর্তীতে অন্যান্য এলাকায় প্রয়োগ করা হলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে অবশ্যই ইতিবাচক সুফল বয়ে আনবে।  তিনি বলেন, স্বাস্থ্য বিভাগ, প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, স্বাস্থ্যকর্মী ও প্রশিক্ষিত স্বেচ্ছাসেবকদের নিয়ে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সার্বক্ষণিক তত্ত্বাবধানে লকডাউন চলাকালে সংশ্লিষ্টরা সকলেই সাধারণ মানুষের মন জয় করে নিজেদের দায়িত্ব পালন করেছেন।  সেজন্য সকলেই সাধারণ মানুষের আস্থা অর্জন করা সম্ভব হয়েছে।
গত ১৬ জুন থেকে নগরীর ১০ নম্বর উত্তর কাট্টলী ওয়ার্ডে টানা ২১ দিন লকডাউনের সমাপনী দিনে মঙ্গলবার (৭ জুলাই) সকালে সিটি গেইট সংলগ্ন সুজানা স্কয়ারে খতমে কোরআন ও দোয়া মাহফিল শেষে সংশ্লিষ্টদের সাথে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে একথাগুলো বলেন।  সিটি মেয়র ১০ নম্বর উত্তর কাট্টলী ওয়ার্ডে লকডাউন চলাকালীন অভিজ্ঞতা তুলে ধরে বলেন, এলাকাটি আবাসিক এবং এখানে গার্মেন্টসসহ ছোট-বড় শিল্প ও কলকারখানা রয়েছে।  তাই প্রথমদিকে লকডাউন কার্যকর করতে গিয়ে এর সাথে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে বেশ বেগ পেতে হয়েছে।  তবে দুই-একদিন পর থেকে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্তৃপক্ষ ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য এবং স্বেচ্ছাসেবকরা এলাকাবাসীর চাহিদা এবং দৈনন্দিন চাওয়া পাওয়ার সাথে সম্পৃক্ত হয়ে সেবা দিতে সচেষ্ট হওয়ার পর একটি অনুকূল পরিবেশ তৈরি হয়।  লকডাউন চলাকালীন সময়ে এখানে কোনো হতদরিদ্র অভুক্ত ছিলেন না।  প্রতিদিন প্রায় ২ হাজার মানুষকে খাবার তুলে দেয়া হয়েছে।  এছাড়াও প্রয়োজন অনুযায়ী এলাকাবাসীকে চিকিৎসাসেবাও দেয়া হয়েছে।  রোগের নমুনা পরীক্ষার জন্য বুথ ও রোগী পরিবহনের জন্য সার্বক্ষণিক অ্যাম্বুলেন্স ব্যবস্থাও চালু রাখা হয়েছিল।  লকডাউন শুরু হওয়ার আগে এই এলাকায় করোনা সংক্রমণের সংখ্যা ছিল ১১৪ জন।  আজ পর্যন্ত এখানে আক্রান্তের সংখ্যা মাত্র ১১ জন।  ইতোমধ্যে ৫৮ করোনা আক্রান্ত রোগী সুস্থ হয়ে ঘরে ফিরে গেছেন। এতে বোঝা যায় পরিকল্পিত এলাকাভিত্তিক লকডাউন চলাকালীন স্বাস্থ্য বিধি, সামাজিক দূরত্ব এবং অন্যান্য নিষেধাজ্ঞা যথাযথভাবে আরোপিত হলে পরিস্থিতি যাই হোক কেন ভয়, উদ্বেগ, উৎকন্ঠার অবসান হবে।  সিটি মেয়র উত্তর কাট্টলী ওয়ার্ডে এলাকাভিত্তিক লকডাউন সফলভাবে কার্যকরণে সক্রিয় ভূমিকা রাখার জন্য স্থানীয় সংসদ সদস্য, সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র, কাউন্সিলর, স্বাস্থ্য বিভাগ, প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, চসিকের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা-কর্মচারী, প্রশিক্ষিত স্বেচ্ছাসেবকগণ, গণমাধ্যমকর্মী, রাজনৈতিক দল ও অঙ্গ-সংগঠনের নেতা-কর্মীসহ এলাকাবাসীকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান।
এসময় কাউন্সিলর ও প্যানেল মেয়র ড. নিছার উদ্দিন আহমেদ মঞ্জু, মহিলা কাউন্সিলর আবিদা আজাদ, মেয়রের একান্ত সচিব মোহাম্মদ আবুল হাশেম, জেলা প্রশাসকের পক্ষে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ আলী হাসান, সহকারী পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ আরিফ, পাহাড়তলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) রাশেদুল হক, আকবরশাহ থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি সুলতান আহমদ চৌধুরী, সহ-সভাপতি লোকমান আলী, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আবু সুফিয়ান, উত্তর কাট্টলী ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহবায়ক মো. ইকবাল চৌধুরী, নগর যুবলীগের সদস্য আবুল কালাম আবু, নগর ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক রোকন উদ্দিন চৌধুরী, ওয়ার্ড ছাত্রলীগ নেতা মোহাম্মদ হারুনুর রশিদসহ ওয়ার্ডের বিভিন্ন মসজিদের ঈমাম ও খতিবগণ উপস্থিত ছিলেন।

ডিসি/এসআইকে/আইএস