খুলশী থানা আওয়ামী লীগের মিলাদ মাহফিল ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত

নগর প্রতিবেদক, দৈনিক চট্টগ্রাম >>>
জাতির আরাধ্য সন্তান, স্বাধীন বাংলাদেশের রূপকার জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারের সদস্যদের শাহাদাতবরণের ৪৫ বছর তথা জাতীয় শোক দিবস, ১৭ আগস্ট দেশব্যাপি পরিকল্পিত সিরিজ বোমা হামলার ঘটনা এবং ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় নিহতদের আত্মার মাগফেরাত কামনায় দোয়া, মিলাদ মাহফিল ও আলোচনা সভার আয়োজন করে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের খুলশী থানা কমিটি ও থানার আওতাধানী ১৩ নম্বর পাহাড়তলী ওয়ার্ড কমিটি।
সোমবার (১৭ আগস্ট) দুপুরে চট্টগ্রাম নগরের ১৩ নম্বর পাহাড়তলী ওয়ার্ডের টাইগারপাস বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে ধারাবাহিক কর্মসূচির অংশ হিসেবে এই কোরআন খতম, দোয়া ও মিলাদ মাহফিল এবং আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।  থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সাবেক ভারপ্রাপ্ত মেয়র, ১৩ নম্বর পাহাড়তলী ওয়ার্ডের সদ্য সাবেক কাউন্সিলর মোহাম্মদ হোসেন হিরণের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সদ্য সাবেক সিটি মেয়র আলহাজ্ব আ জ ম নাছির উদ্দীন।
অনুষ্ঠানের শুরুতে স্থানীয় বিভিন্ন মাদ্রাসা ও এতিমখানার শিশুদের পরিবেশনায় কোরআন খতম ও মিলাদ-কিয়াম অনুষ্ঠিত হয়।  এরপর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন আ জ ম নাছির উদ্দীনসহ থানা-ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ।  পরে খুলশী থানা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মমিনুল হক ও ১৩ নম্বর পাহাড়তলী ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কায়ছার মালিকের সঞ্চালনায় আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

এতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি ইতিহাসের রাখাল রাজা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের হত্যার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশকে নেতৃত্ব শূন্য করবার প্রক্রিয়া শুরু হয়।  এরপর চিহ্নিত হত্যাকারীদের রক্ষা করার জন্য তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় থেকে কালো আইন পাশ করেন।  আর জননেত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় এসে সেই কালো আইন বাতিল করে বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের হত্যা মামলার রায় বাস্তবায়ন করে বাঙালিকে দায়মুক্ত করার প্রয়াস চালান।  আজ সেই রায় বাস্তবায়ন করে দেশের যে কলঙ্কচিকা ছিল তা মুছে দিয়ে ইতিহাস সৃষ্টি করেছেন।  নতুন প্রজন্ম জানতে পারছে দেশের সঠিক ইতিহাস।  এখনও দেশের বাহিরে থাকা আরো পাঁচ মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিকে দেশে এনে রায় কার্যকরের প্রক্রিয়া অব্যাহত আছে।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু আজীবন মানব কল্যাণে কাজ করে গেছেন। তাদেরই অনুসারী আমরা বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বাস্তবায়ন করে সোনার বাংলা গড়তে শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে কাজ করে যাবো।
সভাপতির বক্তব্যে মোহাম্মদ হোসেন হিরণ বলেন, বারংবার দেশকে পেছনে নিয়ে যেতে প্রচেষ্টা চালানো হয়েছে।  আর এই প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে প্রথমে জাতির জনককে স্ব-পরিবারে হত্যার ঘটনা, জাতীয় চারনেতাকে হত্যার মাধ্যমে দেশকে নেতৃত্বশূণ্য করবার চেষ্টা করা হয়েছে।  কিন্তু বিধ্বস্ত আওয়ামী লীগ বার বারই সোজা হয়ে দাঁড়িয়েছে।  সর্বশেষ ১৭ আগস্ট সারাদেশব্যাপি সিরিজ বোমা হামলা করে দেশকে অস্থিতিশীল এবং সর্বশেষ ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেণেড হামলা করে আবারো বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তোলায় অগ্রণী ভূমিকা পালনকারী জননেত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার চেষ্টা করা হয়।  এই ঘটনায় ২৪ নেতাকর্মী প্রাণ দিয়ে নেত্রীকে রক্ষা করে।  এই নরপিশাচদের প্রজন্ম এখনো মাথাচাড়া দিয়ে ওঠার চেষ্টা করছে।  আমাদের দলের প্রতিটি কর্মীকে মানবঢাল হয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকে, জাতির জনকের পরিবারকে, দেশের মানুষকে রক্ষা করতে হবে।  কোনোভাবেই এ দেশকে লুটেরাদের নিয়ন্ত্রণে যেতে দেয়া যাবে না।
অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন নগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নোমান আল মাহমুদ, জাতীয় শ্রমিক লীগের যুগ্ম সম্পাদক শফর আলী, সদ্য সাবেক নারী কাউন্সিলর আবিদা আজাদ, ১৪ নম্বর লালখান বাজার ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক দিদারুল আলম মাসুম, যুবলীগ নেতা মো. মাহমুদুর রহমান মাহমুদ, আওয়ামী লীগ নেতা আলী আশরাফ মজুমদার, টাইগারপাস বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মোজাম্মেল হক, মহানগর যুবলীগ নেতা অধ্যাপক কাজী মো. মজিবুর রহমান মজিব, মাসুদ রেজা, রতন মল্লিক , মো. আবু সুফিয়ান, মো. রিদোয়ান ফারুকসহ নোফেল আহমেদ, নুরুল আলম রাহাত, আলী আকবর, মো. আমানত, মো. আনোয়ার হোসেন, নাদিরা সুলতানা হেলেন, মো. আকবর হোসেন, আনোয়ার হোসেন বাবু, জাফর উল্লাহ মজুমদার, এবিএম আকরামুল হক, মো. শহিদ উল্লাহ শহিদ, বেলাল হোসেন কিরণ, আয়েশা আক্তার পান্না, হালিমা আক্তার, আবদুল মতিন, সঞ্জয় কুমার, আব্দুল হান্নান হীরা, আবু বক্কর, যুবলীগ নেতা নজরুল ইসলাম মিয়াজী, মাজহারুল ইসলাম ফরহাদ, হাসান মুরাদ চৌধুরী, মো. দিদারুল আলম দিদার, মো. আমির হোসেন সরদার, দেলোয়ার হোসেন বাবুল, মোহাম্মদ মানিক, বেলাল হোসেন মনা, আলী এরশাদ, মো. শামসুদ্দিন শামসু, মো. নুরুল হক নুরু, মো. জসিম উদ্দীন, মো. আকবর আলী প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে খুলশী থানা আওয়ামী লীগের বিভিন্ন ওয়ার্ডের নেতৃবৃন্দসহ সহযোগী সংগঠনসমূহের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।  শেষে ১৫ আগস্ট ও ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় নিহতদের স্মরণে বিশেষ দোয়া ও মুনাজাত পরিচালনা করেন আমবাগান কেন্দ্রী জামে মসজিদের পেশ ইমাম মাওলানা মাহমুদুল হক।

ডিসি/এসআইকে/আইবি