উত্তর পাহাড়তলী ওয়ার্ড আ’লীগের আহ্বায়ক এস এম আলমগীরের শোকসভা সম্পন্ন

ভ্রাম্যমাণ প্রতিনিধি, দৈনিক চট্টগ্রাম >>>
চট্টগ্রাম নগরের ৯ নম্বর উত্তর পাহাড়তলী ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক ও সাবেক ছাত্র ও যুবনেতা এস এম আলমগীরের শোক সভা সম্পন্ন হয়েছে।  সোমবার (২৮ ডিসেম্বর) সকাল থেকে শুরু হওয়া এই শোক সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী।  বিশেষ অতিথি ছিলেন একই দলের নগর সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন।  স্থানীয় সংসদ সদস্য দিদারুল আলম, চসিকের মেয়রপ্রার্থী এম রেজাউল করিম এবং চসিক প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজনের নাম ব্যানারে থাকলেও তাঁরা কেউই সভায় উপস্থিত ছিলেন না।
সভায় মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী বলেন, দল এক যুগেরও সময়ের কাছাকাছি ক্ষমতায় থাকায় অনেক সুযোগ সন্ধানী বহিরাগত ঢুকে পড়ায় পরীক্ষিত, ত্যাগী ও দুঃসময়ের নেতা-কর্মীরা কোণঠাসা হয়ে যাচ্ছেন।  এটা কিছুতেই মেনে নেওয়া যায় না।  কারণ এরাই দলের মূল সম্পদ।  যারা কখনো আদর্শচ্যূত হতে পারেন না।  আমরা তাদেরকে অবশ্যই মূল্যায়ন করতে চাই এবং নেতৃত্বের আসনে বসাতে সচেষ্ট।  তিনি বলেন, এসএম আলমগীর অকালে ঝরে গেলেন।  তিনি সংগঠনের দুঃসময়ের কান্ডারী ছিলেন।  তাঁর মত নেতার মৃত্যু তৃণমূল নেতা-কর্মীদের জন্য বড় আঘাত।  এ শোককে শক্তিতে পরিণত করে ত্যাগী ও পরীক্ষিত নেতাদের সামনের কাতারে আনতে চাই।
সাবেক সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, মহানগর আওয়ামী লীগসহ সহযোগী সংগঠনের নগর, থানা ও ওয়ার্ড পর্যায়ের অনেক কমিটি মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে গেছে।  কোনো কোনো কমিটির মেয়াদ ১০-১২ বছর আগেই শেষ হয়ে গেছে।  এর ফলে পরীক্ষিত নেতা-কর্মীদের পদায়ন হচ্ছে না।  তাই তাদের মধ্যে হতাশা কাজ করছে।  তিনি আরো বলেন, কোনো কোনো সিনিয়র নেতার আশ্রয়ে-প্রশ্রয়ে দলের ভেতরে বহিরাগত ও অবাঞ্ছিত লোকজন ঢুকে পড়েছে।  এরা দল ও সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হওয়ার বড় কারণ।  তাদের সনাক্ত করে বহিষ্কারই নয়, যারা তাদেরকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়েছেন তাদেরকেও সাংগঠনিক শাস্তির আওতায় আনার জন্য কেন্দ্রের কাছে সুপারিশ করা হবে।
তিনি বলেন, আমাদের মধ্যে নেতা হওয়ার প্রতিযোগিতা থাকবেই, কিন্তু তা সুশৃঙ্খলভাবে, দলীয় ও সাংগঠনিক বিধি বিধান মেনে।  দলে শুদ্ধি অভিযান চলছে, তাই আমরা পরস্পর বিরোধী পরনিন্দা, পরচর্চা ও সমালোচনা করি।  এটা কিছুতেই শোভনীয় নয় বরং আত্মঘাতী।  তাই সবচাইতে বেশি প্রয়োজন আত্মসমালোচনা করা।  এতে নিজে শুদ্ধ হওয়া যায় এবং দলের ভাবমূর্তিকেও উজ্জ্বল করা যায়।  আজ এস এম আলমগীর ভাই চলে গেছেন না ফেরার দেশে।  এই করোনাকালে নগর থেকে থানা-ওয়ার্ড ও ইউনিট পর্যায়ে আমরা ৬৪ জন নেতা-কর্মীকে হারিয়েছি।  যারা দলের সম্পদ ছিলেন।  তাঁদের মত যারা সম্পদ আছেন তাদেরকে হারাতে চাইনা, অবমূল্যায়িত করতে চাই না।  তাদেরকে মহানগর থেকে তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত সঠিক নেতৃত্বের আসনে আনতে পারলে দলের জন্য সবচেয়ে বেশি মঙ্গলজনক হবে।
৯ নম্বর উত্তর পাহাড়তলী ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত এই শোক সভায় সভাপতিত্ব করেন আকবরশাহ থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাজী আলতাফ হোসেন।  সাবেক ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও ওয়ার্ড আ’লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মো. জহুরুল আলম জসিম ও যুগ্ম আহ্বায়ক এরশাদ মামুন যৌথভাবে সভাটি সঞ্চালনা করেন।
ওয়ার্ড কাউন্সিলর অফিস সম্মুখ চত্ত্বরে অনুষ্ঠিত শোক সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নোমান আল মাহমুদ।  বক্তব্য রাখেন নগর আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য হাজী বেলাল আহমেদ, সাবেক কাউন্সিলর মোরশেদ আক্তার চৌধুরী, আকবরশাহ থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি সুলতান আহমেদ চৌধুরী, পাহাড়তলী থানা কমিটির সহ-সভাপতি নিয়াজ আহমেদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোজাফফর আহমেদ মাসুম, আকবরশাহ থানা কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ জাহিদ, ফয়েজ আহমেদ, উত্তর কাট্টলী ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মো. ইকবাল চৌধুরী, পাহাড়তলী থানা আওয়ামী লীগ নেতা ওহিদুল আমিন, মুজিবুর রহমান শরীফ, ইলিয়াস খান, মরহুম এস এম আলমগীরের সন্তান মোহাম্মদ লোটাস, জিয়াউদ্দীন রুবেল, যুবলীগ নেতা আবুল হাসনাত সৈকত, আবু সুফিয়ান, বেলাল উদ্দীন জুয়েল, আনোয়ারুল আজিম প্রমুখ।
সভার শুরুতে পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন শেখ আহম্মদ।  সভায় স্থানীয় ছাত্রলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, শ্রমিক লীগ, মহিলা আওয়ামী লীগসহ সংগঠনের বিভিন্নস্তরের নেতা-কর্মী উপস্থিত ছিলেন।

ডিসি/এসআইকে/এসএমআর