দৈনিক চট্টগ্রাম ডেস্ক >>>
নির্দলীয় নিরপক্ষে সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি জানিয়ে সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে বিএনপির মনোনীত ছয় মেয়রপ্রার্থী বলেছেন, ‘আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে দলীয়কর্মীর মতো লেলিয়ে দিয়ে রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে ভুয়া ভোট করেছে সরকার।
দেশব্যাপী নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবিতে বিগত সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে বিএনপি মনোনীত মেয়রপ্রার্থীদের নেতৃত্বে বৃহস্পতিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) বরিশাল জিলা স্কুল মাঠে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ সমাবেশ তারা একথা বলেন।
সমাবেশে বরিশাল সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী ও কেন্দ্রীয় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মজিবর রহমান সরোয়ার বলেন, নিশি ভোটের আগের দিন রাতে পুলিশি ভয় দেখিয়ে রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে ভোট করেছে সরকার। ছয় সিটি নির্বাচনে ৩১ জন প্রার্থীকে আহত করেছে। আজ সমাবেশের অনুমতি দিয়েও বিভিন্ন জেলা-উপজেলায় বিএনপির নেতাদের আসতে দেওয়া হয়নি। একদিকে তারা মিটিং করতে অনুমতি দিচ্ছে অন্যদিকে পুলিশ দিয়ে বাধা দিচ্ছে, ভয় দেখাচ্ছে। নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন হতে হবে। জনগণের অধিকার ফিরিয়ে দিতে আন্দোলন সংগ্রামের মাধ্যমে ভোটের সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে হবে’।
সমাবেশে ঢাকা সিটি দক্ষিণ কর্পোরেশন নির্বাচনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী প্রকৌশলী ইশরাক হোসেন বলেন, ২০০৮ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাত ধরে ক্ষমতায় এসেছে আওয়ামী লীগ। জনগণের ভোটে আসার সুযোগ নেই বলেই বিচার বিভাগকে প্রভাবিত করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করেছে আওয়ামী লীগ। আমরা পঞ্চদশ সংশোধনী বাতিলের দাবি জানাই এবং নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন চাই।
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী তাবিথ আউয়াল বলেন, কোনো নির্বাচনে ভোটাররা ভোট দিতে পারছে না। বর্তমান আওয়ামী সরকার বলে তারা দুর্নীতির সঙ্গে আপস করে না কিন্তু তারা দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন।
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনে বিএনপির মেয়রপ্রার্থী ও নগর বিএনপির আহ্বায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, সিটি নির্বাচনগুলোতে ভোট ডাকাতির মাধ্যমে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা কায়েম করার স্বপ্ন দেখছে সরকার। নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন চাই। তারা দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সামনে রেখে রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে ভুয়া ভোটের আয়োজন করেছে। ভোটাররা ভোট না দিলেও কাল্পনিক সংখ্যা বসিয়ে নিজেদের প্রার্থীদের জিতিয়ে দিচ্ছে। এমনকি নির্বাচন কর্মকর্তারা কন্ট্রাকে পর্যন্ত অবৈধ সরকারের দলীয় প্রার্থীদের জিতিয়ে দেয়ার অসংখ্য তথ্য আমাদের কাছে রয়েছে। সুতরাং এই অবৈধ সরকারের কাছে আর কোনো নির্বাচন সুষ্ঠু হবে- এমন আশা করা যায় না।
রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল বলেন, বিচারবিভাগ আর প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর আলাদা কিনা সেটা জানতে চাই। আমরা নির্বাচন কমিশনের পদত্যাগ চাই এবং নির্বাচন ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন চাই।
খুলনা সিটি কর্পোরেশনের নজরুল আসলাম মঞ্জু বলেন, ছয় সিটি কর্পোরেশনের প্রার্থীদের নিয়ে তারেক রহমানের নির্দেশে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবিতে সমাবেশ শুরু করেছি আমরা। শেখ হাসিনার অধীনে আর কোনো নির্বাচনে যাওয়ার প্রয়োজন নেই।
কেন্দ্রীয় বিএনপির বরিশাল বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক বিলকিস জাহান শিরিন বলেন, সমাবেশস্থলে আসতে আজ পথে পথে বাধা দেওয়া হচ্ছে। নেতাকর্মীদের মারধর করা হচ্ছে। ভোলার নেতাকর্মীদের আসতে দেওয়া হয়নি। সমাবেশস্থল ঘিরে রেখেছে পুলিশ। তারপরও নেতাকর্মীদের দমিয়ে রাখা যায়নি।
উল্লেখ্য, সবশেষ ছয় সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে অনিয়ম ও কারচুপির অভিযোগ এনে ৬ সিটিতে সমাবেশের ঘোষণা দেন বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থীরা। প্রথম সমাবেশ হলো বরিশাল জেলা স্কুল মাঠে।
ডিসি/এসআইকে/এমএসএ