বিনামূল্যের পাঠ্যবই বিতরণ শুরু

ছবি সংগৃহিত

দৈনিক চট্টগ্রাম ডেস্ক >>>
বছরের প্রথম দিন কেন্দ্রীয়ভাবে ‘বই উৎসব’ হওয়ার কথা থাকলেও করোনায় স্বাস্থ্যবিধি মানার বাধ্যবাধকতায় তা সম্ভব হয়নি। তবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের আনন্দ একটুও কমেনি। প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলো তাদের শিক্ষার্থীদের হাতে ক্লাসে বই বিতরণ করেছে।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে বলা হচ্ছে- সব বই পেয়েছে তারা। তবে রাজধানীর বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান অষ্টম শ্রেণির বই পায়নি। যদিও সব শ্রেণির বই দেওয়া যাচ্ছে না স্বাস্থ্যবিধি মানার প্রয়োজনে। কয়েকদিন পরে অষ্টম শ্রেণির বই পৌঁছালেও সমস্যা হবে না বলে জানান প্রতিষ্ঠান প্রধানরা।
শনিবার (১ জানুয়ারি) রাজধানীর বিভিন্ন স্কুলে ঘুরে এসব তথ্য জানা গেছে। বছরের প্রথম দিন থেকে বই বিতরণ শুরু করতে গত ৩০ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বই বিতরণ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন। উদ্বোধনের পর আজ শনিবার বই বিতরণ শুরু করেছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো।
রাজধানীর কিশলয় বালিকা বিদ্যালয় ও কলেজে ষষ্ঠ শ্রেণির বই বিতরণ করা হয়। কলেজের অধ্যক্ষ মো. রহমত উল্লাহ্ বলেন, ‘অষ্টম শ্রেণির বই ছাড়া সব বই পেয়েছি। বইয়ের ছাপা বাঁধাই বেশ সুন্দর। আজ প্রথম দিন ষষ্ঠ শ্রেণির বই দেওয়া হলো।
বই পাওয়া ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী জান্নাতুল ফেরদৌসী তার প্রতিক্রিয়ায় জানায়, সব বই পেয়েছি। করোনার কারণে একসঙ্গে সবাইকে দেওয়া হয়নি। তবে বই পেয়ে আমরা খুশি।
মোহাম্মদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক খায়রুন নাহার লিপি বলেন, ‘আমরা সব বই পেয়েছি। আজ বই বিতরণ শুরু হয়েছে। শিক্ষার্থীদের পর্যায়ক্রমে ক্লাসে বই দেওয়া হবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে। বই কেমন হয়েছে জানতে চাইলে খায়রুন নাহার লিপি বলেন, সুন্দর হয়েছে। শিক্ষার্থীরা বেশ আনন্দ পেয়েছে। নতুন বই বিতরণের কারণে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে এসেছে।
গত ৩০ ডিসেম্বর বই বিতরণ কার্যক্রম উদ্বোধনের পর দুই মন্ত্রণালয়ের পক্ষে দাবি করা হয়েছে নির্ধারিত সময়ে বই পৌঁছানো হবে। আর গত দুই বছরের চেয়ে এবার অপেক্ষাকৃত ভালো বই দেওয়া হচ্ছে শিক্ষার্থীদের।
শিক্ষকরা বলছেন, বইয়ের কনটেন্ট না পড়ে বলা যাবে না ভুলত্রুটি রয়েছে কিনা? তবে বই দেখে ছাপার মান, বাঁধাই করা এবং কাগজের মান ভালো বলে মনে হচ্ছে।
বই বিতরণ প্রসঙ্গে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক আলমগীর মুহম্মদ মনসুরুল আলম বলেন, ‘পর্যায়ক্রমে যেদিন যে শ্রেণির পাঠদান রয়েছে সেই শ্রেণির শিক্ষার্থীরা বই পাবে। আজ বছরের প্রথম দিন সুষ্ঠুভাবে বই বিতরণ করা হয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে সবার হাতে বই তুলে দেওয়া হবে।
বইয়ের মান সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘করোনা সংকটের মধ্যে ভালো বই দিতে পেরেছি। বিগত সময়ের চেয়ে অপেক্ষাকৃত বই ভালো বলা পাতে পারে। আর বই ভালো হওয়ার কারণ আমি নিজে দফায় দফায় পরিদর্শন করেছি। ঢাকার উপপরিচালক পরিদর্শন করেছেন। বই ছাপার সময় পরিদর্শন অব্যাহত ছিল। সে কারণে বইয়ের মান ভালো হয়েছে’।
জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) বিতরণ নিয়ন্ত্রক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মো. সাইদুর রহমান বলেন, ‘প্রাথমিকের সব বই উপজেলা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আগেই পৌঁছে গেছে। মাধ্যমিকের কিছু বই বাকি রয়েছে। এ সপ্তাহের মধ্যেই বাকি বই পৌঁছে যাবে।
এনসিটিবি বই বিতরণ কার্যক্রম উদ্বোধনের দিন জানিয়েছিল প্রাথমিকের শতভাগ এবং মাধ্যমিকের ৯৫ শতাংশের বেশি বই পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। রি-টেন্ডার হওয়ার কারণে মাধ্যমিকের বই ছাপতে এবার দেরি হয়। সিন্ডিকেট ভাঙতে রি-টেন্ডারের কারণে বই ছাপার কাজে দেরি হওয়ায় সঠিক সময়ে বই পাওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা থাকলেও সমস্যা সমাধান করা সম্ভব হয়েছে।

ডিসি/এসআইকে/এমএসএ