কমিটির বিবাহিতদের স্ত্রীর ছবি নিয়ে ছাত্রলীগের বিক্ষোভ বরিশালে

দৈনিক চট্টগ্রাম ডেস্ক >>>
বিবাহিত, অছাত্র ও বয়স বহির্ভূতদের নিয়ে বরিশাল মহানগর ছাত্রলীগের আহ্বায়ক কমিটি করার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ সমাবেশ করা হয়েছে।  এ সময় কমিটির বিবাহিতদের স্ত্রী-বাচ্চাসহ তাদের ছবি নিয়ে মিছিল করা হয়েছে।
বরিশাল মহানগর ছাত্রলীগের ব্যানারে সোমবার (২৫ জুলাই) বেলা সাড়ে ১১ টায় নগরের সোহেল চত্বর এলাকায় দলীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়।  মিছিলটি নগরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে বঙ্গবন্ধু উদ্যানে গিয়ে শেষ হয়।
এর আগে, দলীয় কার্যালয়ের সামনে ছাত্রলীগের পদবঞ্চিত নেতাদের নেতৃত্বে কর্মীদের একাংশ দলীয় কার্যালয়ে জড় হয়।  সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন- ছাত্রলীগ নেতা মেহদি হাসান, তানভীর আহমেদ, প্রিন্স সরদার, আব্দুল আলিম, রেজাউল রহমান নিওন, ইমরান হাওলাদার, আবু তালহা প্রমুখ।
এ সময় বক্তারা বলেন, সম্প্রতি বরিশাল মহানগর ছাত্রলীগের যে কমিটি গঠন করা হয়েছে, তাতে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্রকে উপেক্ষা করা হয়েছে।  কমিটিতে যাদের আনা হয়েছে তাদের মধ্যে আহ্বায়ক মো. রইজ আহম্মেদ মান্না, যুগ্ম আহ্বায়ক মো. মাইনুল ইসলামসহ বেশিরভাগেরই বয়স ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্রে বেধে দেওয়া বয়সের থেকে বেশি।  আবার কমিটিতে এমনও অনেকে রয়েছেন, যারা কোনো কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মিত ছাত্র নয়।
বক্তারা বলেন, গঠনতন্ত্রে রয়েছে বিবাহিত, ব্যবসায়ী ও চাকরিজীবীদের কমিটিতে আসার কোনো সুযোগ নেই।  অথচ কমিটির আহ্বায়ক মো. রইজ আহম্মেদ মান্না একাধিক সন্তানের পিতা ও জেলা বাস মালিক গ্রুপের একজন পদধারী নেতা।  আর জেলা বাস মালিক গ্রুপের সদস্য হতে হলেও তাকে বাসের মালিক হতে হয়।  অপরদিকে যুগ্ম আহ্বায়ক মো. মাইনুল ইসলাম ও আরিফুর রহমান শাকিলও বিবাহিত।  এছাড়া কমিটিতে থাকা সদস্য পদের বেশ কয়েকজনের পরিবার বিএনপির আদর্শে আদর্শিত হলেও তারা পদ পেয়েছেন ছাত্রলীগের কমিটিতে।
বক্তারা আরও বলেন, যাদের ব্যাকগ্রাউন্ড বিএনপি তারা বরিশালে ছাত্রলীগের রাজনীতি করবে এটা আমরা মানিনা।  বঙ্গবন্ধুর হাতে গড়া ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্রে কোনো বিবাহিত, ব্যবসায়ী, চাকরিজীবী, মাদকবিক্রেতা, সন্ত্রাসী থাকতে পারবে না।  অথচ ঘোষিত কমিটিতে এর সবকিছুই রয়েছে।
এ সময় নেতাকর্মীরা গঠনতন্ত্র পরিপন্থী সদ্য গঠিত বরিশাল মহানগর ছাত্রলীগের কমিটিকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেন।  সংক্ষিপ্ত সমাবেশ শেষে আহ্বায়কের বাচ্চাসহ ছবি, যুগ্ম আহ্বায়কদের স্ত্রীসহ ছবি দিয়ে বানানো এবং বিভিন্ন লেখা দিয়ে তৈরি প্লাকার্ড নিয়ে বিক্ষোভ মিছিলে বের করেন নেতারা।
এদিকে কর্মসূচি শেষে ছাত্রলীগের এ অংশের নেতারা জানান, সদ্য ঘোষিত মহানগর ছাত্রলীগের আহ্বায়ক রইজ আহমেদ মান্নার বয়স ৩২ বছরের কাছাকাছি, তিনি গত ১৮ আগস্ট বরিশাল সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তার বাসভবনে হামলার ঘটনায় হওয়া মামলার আসামি ছিলেন।  আর বিসিকে ব্যবসায়ীদের ওপর হামলার ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলাতেও তিনি আসামি ছিলেন।  আর এসব থেকে নিজেকে বাঁচাতে তিনি বরিশাল মহানগর বিএনপির শীর্ষ এক নেতার প্রকাশিত পত্রিকার সহ-সম্পাদকও হয়েছেন।
এদিকে এ বিষয়ে মহানগর ছাত্রলীগের সদ্য ঘোষিত কমিটির কেউ তাৎক্ষণিক কোনো প্রতিক্রিয়া না জানালেও গতকাল নগরের বিভিন্ন এলাকায় সদ্য ঘোষিত কমিটিকে অভিনন্দন জানিয়ে আনন্দ মিছিল করেছেন অনেকে।
আর নবগঠিত মহানগর ছাত্রলীগের আহ্বায়ক রইস আহমেদ মান্না সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের জন্য একটি সম্মেলন জরুরি হয়ে পড়েছে।  আর দীর্ঘ দিন ছাত্রলীগের কমিটি না থাকায় নেতাকর্মীরা পরিচয়হীন ছিলেন।  তিনমাস মেয়াদী এ আহ্বায়ক কমিটির মধ্য দিয়ে হলেও কিছু নেতাকর্মী তাদের পরিচয় পেয়েছেন।  তাই আগামি তিন মাসের মধ্যে বরিশাল মহনগর ছাত্রলীগের সম্মেলন করে পূর্ণাঙ্গ কমিটির উপহার দেওয়ার চেষ্টা করবেন তারা।
প্রসঙ্গত, মো. রইজ আহমেদ মান্নাকে আহ্বায়ক, মো. মইনুল ইসলাম এবং আরিফুর রহমান শাকিলকে যুগ্ন আহ্বায়ক করে ৩২ সদস্য বিশিষ্ট এ কমিটি ২৩ জুলাই (শনিবার) অনুমোদন দেয় কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। খবর সূত্র- বাংলানিউজ

ডিসি/এসআইকে/এমএসএ