কুসিক ভোটে সিটির বাইরের ভোট কর্মকর্তা নিয়োগের নির্দেশ ইসির

দৈনিক চট্টগ্রাম ডেস্ক >>>
আসন্ন কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন (কুসিক) নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে সিটির বাইরে থেকে ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা নিয়োগের জন্য রিটার্নিং কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।  এক্ষেত্রে তথ্য ও প্রযুক্তিজ্ঞান সম্পন্ন কর্মকর্তাদের অগ্রাধিকার দিতেও বলা হয়েছে।
ইসির নির্বাচন পরিচালনা শাখার উপ-সচিব মো. আতিয়ার রহমান নির্দেশনাটি পাঠিয়েছেন।  তিনি বলেন, কমিশনের নির্দেশনা ইতোমধ্যে রিটার্নিং কর্মকর্তাকে পাঠানো হয়েছে।
নির্দেশনায় উল্লেখ করা হয়েছে- কুসিক নির্বাচন যেহেতু ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) অনুষ্ঠিত হবে, সেহেতু সর্বাধিক সংখ্যক প্রযুক্তিগত বিশেষ করে তথ্যপ্রযুক্তি জ্ঞানসম্পন্ন কর্মকর্তাদের প্রিজাইডিং ও সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার হিসাবে নিয়োগ দিতে হবে।  ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা নিয়োগের ক্ষেত্রে সরকারি বা স্বায়ত্তশাসিত অফিস, প্রতিষ্ঠান, সংস্থার কর্মকর্তা/কর্মচারী অথবা সরকারি বা এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের প্রাধান্য দিতে হবে।
এখানে বিশেষভাবে উল্লেখ্য যে, স্থানীয় সরকার (সিটি কর্পোরেশন) নির্বাচন বিধিমালা, ২০১০ এর বিধি ৮ অনুসারে ভোটকেন্দ্রে দায়িত্ব পালনের জন্য প্রিজাইডিং অফিসার, সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার ও পোলিং অফিসার অর্থাৎ ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা নিয়োগের উদ্দেশ্যে সিটি কর্পোরেশন এলাকার বাইরে অবস্থিত অফিস/প্রতিষ্ঠান হতে কর্মরত কর্মকর্তা/কর্মচারীদের প্যানেল প্রস্তুত করার নির্দেশনা দিয়েছেন ইসি।
আগামি ১৫ জুন কুসিক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এ নির্বাচনে মেয়র পদে ছয়জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেছিলেন।  তারা হলেন- বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনোনীত আরফানুল হক রিফাত, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মো. রাশেদুল ইসলাম, স্বতন্ত্র হিসেবে কামরুল আহসান বাবুল, মো. মনিরুল হক সাক্কু (বিএনপি নেতা ও দুইবারের মেয়র), মোহাম্মদ নিজাম উদ্দিন ও মাসুদ পারভেজ খান।  তাদের মধ্যে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী মাসুদ পারভেজ খান সরে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
এছাড়া সাধারণ কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর মিলে ১৫০ জনের মতো প্রার্থী থাকছেন ভোটের মাঠে।
কুসিকে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে ১০৫টি ভোটকেন্দ্রের ৬৪০টি ভোটকক্ষে।  এ সিটির ২৭টি ওয়ার্ডে মোট ভোটার রয়েছে ২ লাখ ২৯ হাজার ৯২০ জন।  এদের মধ্যে ১ লাখ ১৭ হাজার ৯২ জন নারী ভোটার এবং পুরুষ ভোটার ১ লাখ ১২ হাজার ৮২৬ জন।  এছাড়া ‘হিজড়া’ ভোটার রয়েছে দু’জন।  ওয়ার্ডগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ভোটার রয়েছে ৩ নম্বর ওয়ার্ডে, ১৬ হাজার ৪৭৪ জন।  আর সবচেয়ে কম ভোটার রয়েছে ২৫ নম্বর ওয়ার্ডে, ৩ হাজার ৮৯৪ জন।
২০১৭ সালের ৩০ মার্চ সর্বশেষ কুসিক নির্বাচন হয়েছিল।  নির্বাচিত করপোরেশনের প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হয়েছিল ওই বছর ১৭ মে।  এক্ষেত্রে ভোটগ্রহণ করার শেষ সময় ছিল চলতি বছরের ১৬ মে।  কিন্তু বিগত কমিশন বিদায়ের সময় ঘনিয়ে আসায় আর তফসিল দেয়নি।  ফলে অতি অল্প সময়ের জন্য স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়কে এই সিটি পরিচালনায় দায়িত্ব দিতে হয়েছে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাকে।  নির্বাচনের পর নতুন মেয়র দায়িত্ব নেওয়া পর্যন্ত তিনি কর্পোরেশন পরিচালনা করবেন।
২০১৭ সালের নির্বাচনে বিএনপি নেতা মনিরুল হক সাক্কু দ্বিতীয়বারের মতো এ সিটিতে নির্বাচিত হয়েছিলেন।  কুসিকের প্রথম নির্বাচনেও ২০১২ সালে তিনি জয়লাভ করেছিলেন।  প্রথমবার বিএনপি নির্বাচন বর্জন করায় সাক্কু স্বতন্ত্র থেকে প্রার্থী হয়েছিলেন।  পরেরবার বিএনপির টিকিটে ধানের শীষ প্রতীক নিয়েও জয়লাভ করেন।  এবারও বিএনপি নির্বাচন বর্জন করেছে এবং আজীবন দল থেকে বহিষ্কার করায় সাক্কু হয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী।
দুটি পৌরসভাকে একীভূত করে ২০১১ সালে কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন গঠন করে সরকার।

ডিসি/এসআইকে/এমএসএ