চকরিয়ায় ৭৩ চেয়ারম্যানসহ ৫৮৯ প্রার্থীর মনোনয়নপত্র জমা

কক্সবাজার প্রতিনিধি, দৈনিক চট্টগ্রাম >>>
তৃতীয় ধাপে আগামি ২৮ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হচ্ছে কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার ১০টি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) নির্বাচন। প্রথমবারের মতো ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে উপজেলার সাহারবিল ও লক্ষ্যারচর ইউনিয়নে। ইউপি নির্বাচনের মনোনয়নপত্র জমার শেষ দিন মঙ্গলবার (২ নভেম্বর) বিকাল ৫টা পর্যন্ত ১০টি ইউনিয়ন পরিষদে বিভিন্ন পদে প্রতিদ্ব›দ্বী প্রার্থীরা সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে তাদের কাছে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন।
এরমধ্যে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের ১০, জাপার তিনজন ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর ৩ জন ও স্বতন্ত্র ৫৭ জনসহ মোট ৭৩ জন, সাধারণ সদস্য পদে ৩৮৩ জন এবং সংরক্ষিত নারী সদস্য পদে ১৩৩ জনসহ সর্বমোট ৫৮৯ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।
চকরিয়া উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. শহিদুল ইসলাম উপজেলার সাহারবিল, কৈয়ারবিল, পশ্চিম বড়ভেওলা ইউনিয়নে, উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা অঞ্জন চক্রবর্তী বিএমচর ও কোনাখালী ইউনিয়নে, উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা বেনজির আহমেদ ঢেমুশিয়া ইউনিয়নে, উপজেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা সুপন নন্দী পূর্ববড় ভেওলা ও বদরখালী ইউনিয়নে এবং কুতুবদিয়া উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা জামশেদুল ইসলাম সিকদার উপজেলার লক্ষ্যারচর ও কাকারা ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করবেন বলে জানা গেছে।
চকরিয়া উপজেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, আগামি ২৮ নভেম্বর অনুষ্ঠিতব্য উপজেলার ১০ ইউপির মধ্যে বদরখালী ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন ১১ জন। তারা হলেন আওয়ামী লীগের নুরে হোছাইন আরিফ, স্বতন্ত্র আবু নাইম মো. হেফাজ, আহসানুল কাদের চৌধুরী সাব্বির, জাকের আহমদ, আলী আকবর, মোহাম্মদ আলী চৌধুরী, মোহাম্মদ আলী, মিজানুর রহমান, শামসুদ্দিন, জসিম উদ্দিন ও জাতীয় পার্টির (এরশাদ) নাছির উদ্দিন। এ ইউনিয়নে সংরক্ষিত নারী সদস্য পদে ১৫ জন, সাধারণ সদস্য পদে ৪৫ জন মনোনয়ন জমা দিয়েছেন।
পূর্ববড় ভেওলা ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে ৭ জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। তারা হলেন আওয়ামী লীগের ফারহানা আফরিন মুন্না, স্বতন্ত্রপ্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান আনোয়ারুল আরিফ দুলাল, কামরুজ্জামান সোহেল, মো. আবদুল্লাহ, জাতীয় পার্টির (এরশাদ) সাইফুল ইসলাম, ইসলামী আন্দোলনের নুরুল্লাহ, স্বতন্ত্র প্রার্থী সালাহ উদ্দিন। এ ইউনিয়নে সংরক্ষিত নারী সদস্য পদে ১৮ জন এবং সাধারণ সদস্য পদে ৫৪ জন প্রার্থী মনোনয়ন দাখিল করেছেন।
কৈয়ারবিল ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে ৯ জন প্রার্থী মনোনয়ন জমা দিয়েছেন। তারা হলেন আওয়ামী লীগের জন্নাতুল বকেয়া রেখা, স্বতন্ত্রপ্রার্থী ও বর্তমান চেয়ারম্যান মক্কী ইকবাল হোসেন, মোহাম্মদ জকরিয়া, আফজালুর রহমান চৌধুরী, মো. মামুনুর রশিদ, তৌহিদুল ইসলাম, মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন, আনিছ উর রহমান জুয়েল, আবদুর রহমান আবেদ। এ ইউনিয়নে সংরক্ষিত নারী সদস্য পদে ১০ জন এবং সাধারণ সদস্য পদে ৩৭ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।
সাহারবিল ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগ মনোনীত বর্তমান চেয়ারম্যান মহসিন বাবুল, স্বতন্ত্রপ্রার্থী নবী হোছাইন চৌধুরী, আবু তৈয়ব, জুনাইদুল হক, আবদুল আলীম, মাহমুদুল হাসান, জাতীয় পার্টির (এরশাদ) জুনাইদুল হক, মুহাম্মদ খানে আলম তাদের মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। এখানে সংরক্ষিত নারী সদস্য পদে ১৩ জন এবং সাধারণ সদস্য পদে ৩১ জন প্রার্থী মনোনয়ন জমা দিয়েছেন।
পশ্চিম বড় ভেওলা ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে যারা মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন তারা হলেন আওয়ামী লীগের বর্তমান চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বাবলা, স্বতন্ত্রপ্রার্থী অ্যাড. রবিউল এহেছান লিটন, ওয়াহেদ মুরাদ, হেফাজতুর রহমান, ওয়াহেদ ফয়েজ, মো. সামউনুল ইসলাম, নুরুল বশর চৌধুরী বাচ্চু, নিয়ামত উল্লাহ। এখানে সংরক্ষিত নারী সদস্য পদে ১০ জন এবং সাধারণ সদস্য পদে ২৭ জন মনোনয়ন জমা দিয়েছেন।
ডেমুশিয়া ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন আওয়ামী লীগের এসএম মইনউদ্দিন চৌধুরী, স্বতন্ত্র মো. নুরুল আলম, কফিল উদ্দিন, মো. হোসনে মোবারক, রিদুয়ান হাফিজ চৌধুরী, সাইফুল ইসলাম, ফরিদুল আলম ও মোহাম্মদ হোছাইন। এখানে সংরক্ষিত নারী সদস্য পদে ১২ জন এবং সাধারণ সদস্য পদে ৩৩ জন মনোনয়ন জমা দিয়েছেন।
কোনাখালী ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন আওয়ামী লীগের জাফর আলম ছিদ্দিকী, জাতীয় পার্টির (এরশাদ) রুহুল কাদের মানিক, স্বতন্ত্রপ্রার্থী ও বর্তমান চেয়ারম্যান দিদারুল হক সিকদার, আনোয়ারুল ইসলাম, মোহাম্মদ ইয়াছিন, নুরুল কবির, আবদুল মাবুদ। এখানে সংরক্ষিত নারী সদস্য পদে ১৪ জন এবং সাধারণ সদস্য পদে ৩৬ জন মনোনয়ন জমা দিয়েছেন।
ভেওলা মানিকচর ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন আওয়ামী লীগের বদিউল আলম, স্বতন্ত্র বর্তমান চেয়ারম্যান এসএস জাহাংগীর আলম, নাছির উদ্দিন, মো. আবু তৈয়ব, মোহাম্মদ আলমগীর, মো. সোয়াইবুল ইসলাম, আরিফ মো. অলিউল্লাহ, আমজাদ হোসেন, ইসলামী আন্দোলনের মো. শামসুল হক। এখানে সংরক্ষিত নারী সদস্য পদে ১৫ জন এবং সাধারণ সদস্য পদে ৩৯ জন তাদের মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন।
লক্ষ্যারচর ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে ৫ জন প্রার্থী মনোয়নপত্র দাখিল করেছেন। তারা হলেন আওয়ামী লীগের মহিউদ্দিন মো. আওরঙ্গজেব বুলেট, স্বতন্ত্রপ্রার্থী ও বর্তমান চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফা কাইছার, নুর মোহাম্মদ মানিক, সাইকুল ইসলাম ও মোহাম্মদ ওসমান। এখানে সংরক্ষিত নারী সদস্য পদে ১৩ জন এবং সাধারণ সদস্য পদে ৩৫ জন প্রার্থী মনোনয়ন জমা দিয়েছেন।
কাকারা ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে ৩ জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। তারা হলেন আওয়ামী লীগের বর্তমান চেয়ারম্যান মো. শওকত উচমান, স্বতন্ত্র সাহাব উদ্দিন, মোহাম্মদ ইছমত ই-ইলাহী। এখানে সংরক্ষিত নারী সদস্য পদে ১৩ জন এবং সাধারণ সদস্য পদে ৪৬ জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।
উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম জানান, নির্বাচন কমিশনের ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী তৃতীয় ধাপে ইউপি নির্বাচনে চকরিয়া উপজেলার ১০টি ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এরমধ্যে সাহারবিল ও লক্ষ্যারচর ইউনিয়নে ইভিএমে ভোট গ্রহণ হবে। তিনি আরও বলেন, ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী এসব ইউনিয়নের মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ছিল ২ নভেম্বর। মনোনয়নপত্র বাছাই ৪ নভেম্বর ও প্রার্থীতা প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ১১ নভেম্বর। ভোট গ্রহণ হবে ২৮ নভেম্বর।
এদিকে, ইউপি নির্বাচনের তফসিল ঘোষিত হওয়ার পর থেকেই চকরিয়ার বিভিন্ন জনপদে প্রার্থীরা তাদের কর্মী সমর্থকদের সাথে নিয়ে বিভিন্ন পাড়া-মহল্লায় গণসংযোগ ও আনন্দ মিছিল করেছেন।

ডিসি/এসআইকে/এফআরইউ