খাগড়াছড়ির নতুন সড়ক মন কাড়ছে মানুষের, গতি আনছে স্থানীয় অর্থনীতিতে

আরিফুল ইসলাম মহিন, পানছড়ি প্রতিনিধি >>>
খাগড়াছড়ি পার্বত্য চট্টগ্রামের গুরুত্বপূর্ণ জেলা।  পার্বত্যাঞ্চলের অনেক ইতিহাস ও পথপরিক্রমার সাক্ষী এ জেলাটি পর্যটকদের কাছেও আকর্ষণীয়। 
খাগড়াছড়ির সড়ক যোগাযোগ পাহাড়ের অন্য দুই জেলার চেয়ে অনেকটাই উন্নত।  যা কাজে লাগিয়ে বিগত অর্ধযুগের বেশি সময় ধরে পর্যটন নির্ভর অর্থনীতিতেও জেলাটি ঘুরে দাঁড়িয়েছে।  রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার সাজেক পর্যটন কেন্দ্রের ব্যবসা খাগড়াছড়ি জেলা থেকেই অনেকাংশ নিয়ন্ত্রিত হয়।  যার বড় একটা সুযোগ করে দিয়েছে খাগড়াছড়ি থেকে সাজেকের সরাসরি সড়ক যোগাযোগ।  আর এবার রাঙামাটি জেলা সদর ও নানিয়ারচর উপজেলার সঙ্গে যোগাযোগে নতুন মাত্রা তৈরি করতে যাচ্ছে খাগড়াছড়ির নয়নাভিরাম একটি সড়ক।
সড়কটি খাগড়াছড়ির গুইমারা উপজেলার জালিয়াপাড়া থেকে মহালছড়ি উপজেলার ২৪ মাইল পর্যন্ত।  সড়কটি নির্মাণ করেছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৩৪ ইঞ্জিনিয়ার্স কনস্ট্রাকশন ব্রিগেডের তত্ত্বাবধানে ২০ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন ব্যাটালিয়ন।
এ সড়ক ব্যবহার করে ঢাকা থেকে রামগড় জালিয়াপাড়া হয়ে মহালছড়ির ২৪ মাইল এলাকা দিয়ে চালু হবে রাঙামাটির সঙ্গে সরাসরি সড়ক যোগাযোগ।  ফলে সড়ক পথে ঢাকা-রাঙামাটির দূরত্ব কমবে ৭০ কিলোমিটার, সময়ও বাঁচবে প্রায় ৩ ঘন্টা।  এ ছাড়াও নতুন সড়কটি রাঙামাটির নানিয়ারচর, খাগড়াছড়ির মহালছড়ি, গুইমারা ও লক্ষ্মীছড়ি উপজেলার কৃষি অর্থনীতিতে গতি আনবে।  নয়নাভিরাম এ সড়ক দেখতে প্রতিদিন বিভিন্ন স্থান থেকে ছুটে আসছেন অনেকেই।
মহালছড়ির ফল বাগানের মালিক হ্লাশিমং চৌধুরী দৈনিক চট্টগ্রাম ডটনেটকে বলেন- আম, ড্রাগনসহ আমার বাগানের ফল এ বছর কম সময়ে ঢাকা, চট্টগ্রামে যাচ্ছে সিন্দুকছড়ির এই নতুন সড়ক ব্যবহার করে।
মহালছড়ির বাসিন্দা মিল্টন চাকমা দৈনিক চট্টগ্রাম ডটনেটকে বলেন- আমার বাড়ি মহালছড়ি।  চাকরি করি গুইমারা উপজেলায়। আগে খাগড়াছড়ি সদর হয়ে জালিয়াপাড়া যেতে ৬০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে হতো।  আর এ নতুন সড়ক হওয়ায় দূরত্ব ২২-২৪ কিলোমিটারে নেমে এসেছে।  সময় ও খরচ দু’টোই কমেছে।
গুইমারা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান উশেপ্রু মারমা দৈনিক চট্টগ্রাম ডটনেটকে বলেন, জালিয়াড়া থেকে মহালছড়ি সিন্দুকছড়ি সড়ক খাগড়াছড়ির দুই উপজেলার কৃষি অর্থনীতি ছাড়াও কাপ্তাই হ্রদ বেষ্টিত রাঙামাটির মৎস্যখাত এবং যোগাযোগ ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন এনে দিবে।  এ অঞ্চলের মানুষ এ সড়কটি পূর্ণাঙ্গ চালুর অপেক্ষায়।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ২০ ইসিবি’র অধিনায়ক লে. কর্ণেল মো. আমজাদ হোসেন দীদার জানান, এ সড়ক নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় ১৫.৫০০ কিলোমিটার দীর্ঘ সড়ক, ২৪ কিলোমিটার সাইড ড্রেন ও ৪১০ কিলোমিটার গ্রাভিটি ওয়াল, ৬৩০ কিলোমিটার রিটেইনিং ওয়াল ও ৮০০ মিটার প্যালাসাইডিং নির্মাণ করা হয়েছে।  সড়কটি নির্মাণের মূল উদ্দেশ্য রাঙামাটি ও খাগড়াছড়ির আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন।  রাঙামাটি থেকে চট্টগ্রামের যানজট এড়িয়ে এ সড়ক ব্যবহার করে ঢাকার সঙ্গে যোগাযোগ চালু হলে দূরত্ব কমবে ৬৮ কিলোমিটার এবং সময়ও বাঁচবে প্রায় ৩ ঘণ্টা।  প্রকল্প মেয়াদের ৬ মাস আগেই কাজ শেষ হয়েছে।

ডিসি/এসআইকে/এআইএম