দুর্ঘটনার পথ পানছড়ির অবহেলিত ছনটিলা সড়ক

আরিফুল ইসলাম মহিন, পানছড়ি প্রতিনিধি >>>
পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়ির পানছড়ি উপজেলার সদর ইউনিয়নের একমাত্র দুর্ঘটনাপ্রবণ পথ দীর্ঘ যুগধরে অবহেলিত ছনটিলা সড়ক। ৩০ বছরেও উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি পানছড়ি বাজার থেকে ছনটিলামুখী এই সড়কটিতে। বছরের পর বছর স্থানীয় ভুক্তভোগীরা সংশ্লিষ্ট সকল স্থানে ধর্না দিলেও মেলেনি সমাধান।
সরেজমিনে দেখা যায়, ৬ কিলোমিটারের সড়কটির ৪ কিলোমিটার সড়কই খানাখন্দকে ভরা। উঁচু রাস্তাগুলোতে বড় আকারের গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এতে যানবাহন ও মানুষ চলাচলে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।
সাবেক ইউপি মেম্বার নায়েব আলী দৈনিক চট্টগ্রামকে জানান, নব্বই দশকের মাঝামাঝি সময়ে টিঅ্যান্ডটি টিলার পাশ ঘেঁষে উপজেলা সদর হাসপাতালের সামনে দিয়ে বৃহৎ গ্রাম দমদম এলাকা হয়ে ছনটিলা, কালানাল, আলীচানপাড়া, পুজগাং সড়ক নির্মাণ করা হয়। কালের বিবর্তনে যোগাযোগ ও সামাজিক ব্যবস্থার উন্নয়ন হলেও উন্নতি হয়নি এ সড়কের। নিত্যদিনের যোগাযোগ, মালামাল পরিবহন, জরুরি প্রয়োজনে মুমূর্ষু রোগী, গর্ভবতী রোগী নিয়ে যেতে রোগীর অবস্থা আরও খারাপ হয়ে পড়ে। প্রশাসনের নাকের ডগায় এ রাস্তাটি যেন দেখার কেউ নেই।
সিএনজি চালক ইব্রাহিম, কামরুল হোসেন, গিয়াস উদ্দিন বলেন, এ সড়কে দমদম, সাওতাল পাড়া, কালানাল, আলী চান পাড়া, ছনটিলাসহ ছয়টি গ্রামের মানুষ চলাচল করে। প্রতিদিন কমপক্ষে ১০টি সিএনজি কমপক্ষে ৪ বার করে যাতায়াত করে। প্রায়ই সড়ক খাদে পড়ে সিএনজি উল্টে পড়ে দুর্ঘটনার কবলে পড়তে হয়। সড়ক তো নয় এ যেন মরণ ফাঁদ। তবুও জীবন জীবিকার তাগিদে আমরা সিএনজি চালাই।
আলীচান পাড়ার জগদীশ চাকমা আক্ষেপ করে বলেন, এ গ্রামে ৩টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, একটি মাদ্রাসাসহ কয়েক হাজার মানুষের বসবাস। একমাত্র সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থার কারণে অর্থনৈতিক ভাবে পিছিয়ে আছে ওই গ্রামের মানুষ। সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো না থাকায় পরিবহন খরচ বেশি পড়ে। এতে আমাদের উৎপাদিত ফসলের ন্যায্য দাম পাই না। অনেক সময় ফসল বাজার জাতও করতে পারি না। অধিকাংশ মানুষ পায়ে হেঁটে বাজারে যান। যারা হাটতে পারে না তাদের সিএনজিতে নিতে হয়। তাতেও ভয় কখন উল্টে পড়ে মৃত্যু হয়। ভোটের আগে অনেকেই প্রতিশ্রুতি দেন সড়ক ঠিক করে দেবেন। কিন্তু নির্বাচিত হওয়ার পর তাঁদের আর দেখা মিলে না, সড়কও হয় না।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী অরুন কুমার দাশের কাছে জানতে চাইলে তিনি দৈনিক চট্টগ্রামকে বলেন, ‘এ সড়কটির জন্য আমাকে এমপি মহোদয়ের ডিও লেটার এনে দেওয়া হয়েছে। আমিও পিডি স্যারের কাছে পাঠিয়েছি। তদবির ছাড়া কোনো কাজ হয় না। এর জন্য তদবির করবে কে? তদবির না থাকায় কাজটির অনুমোদন আসে নাই’।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বিজয় কুমার দেব দৈনিক চট্টগ্রামকে বলেন, ছনটিলা সড়কটির যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো থাকলে অর্থনৈতিক ভাবে ছয়টি গ্রামের মানুষ উপকৃত হবে। পাশাপাশি এলাকাও অর্থনৈতিকভাবে এগিয়ে যাবে। কোন অদৃশ্য কারণে সড়কটির কাজ হচ্ছে না, জানা নাই। তবে এলাকা উন্নয়নে ও হাসপাতালের রোগী সেবার জন্য হলেও রাস্তাটির সংস্কার প্রয়োজন।

ডিসি/এসআইকে/এআইএম