চট্টগ্রামে বেড়েছে পাস ও জিপিএ-৫, বিজ্ঞানেও ভালো ফলাফল

ছবি- ইন্টারনেট থেকে।

দৈনিক চট্টগ্রাম ডেস্ক >>>
চলতি বছরের মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) ও সমমানের পরীক্ষায় চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডে পাসের হার এবং জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা- দুটোই বেড়েছে।  গত ৫ বছরে পাসের হারের দিক থেকে চট্টগ্রাম দ্বিতীয় হয়ে আসলেও এবার জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা গত ৫ বছরে সর্বোচ্চ হয়েছে।  বিজ্ঞান বিভাগে পরীক্ষা দেয়া শিক্ষার্থীদের পাসের হার ও জিপিএ- ৫ পাওয়ার পরিমাণও এবার বেড়েছে।  আজ রবিবার (৩১ মে) সকালে প্রকাশিত এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফল বিশ্লেষণ করে চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের এই সাফল্যের তথ্য পাওয়া গেছে।
বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, এবার চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডে পাসের হার শতভাগ- এমন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ৫০টি।  এই বোর্ডের অধীনে কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাসের হার শূণ্য শতাংশ নেই।  এক বিষয়ে অকৃতকার্য শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১৬ হাজার ৯৫৭ জন। যা মোট পরীক্ষার্থীর ১১.৭৭ শতাংশ। বোর্ডের অধীনে এসএসসি পরীক্ষায় এবার মোট ১ হাজার ৪৩টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ১ লক্ষ ৪৩ হাজার ৮২৩ জন শিক্ষার্থী অংশ নেয়।  এর মধ্যে পাস করেছে ১ লক্ষ ২১ হাজার ৮৮৮ জন।  পাসের হার ৮৪ দশমিক ৭৫ শতাংশ যা সব শিক্ষা বোর্ডের মধ্যে ৪র্থ।  এর আগের বছর ২০১৯ সালে চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডে পাসের হার ছিলো ৭৮.১১%, এরও আগের বছর ২০১৮ সালে ৭৫.৫০%, ২০১৭ সালে ৮৩.৯৯% ও ২০১৬ সালে ৯০.৪৫ শতাংশ।  অর্থাৎ ২০১৬ সালের পর ২০২০ সালেই পাসের হার চট্টগ্রামে সবচেয়ে বেশি।
আজকে প্রকাশিত এসএসসি’র ফলাফলে দেখা গেছে, চট্টগ্রামে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৯ হাজার ৮ জন শিক্ষার্থী।  ২০১৯ সালে এই সংখ্যা ছিল ৭ হাজার ৩৯৩ জন, ২০১৮ সালে ৮ হাজার ৯৪ জন, ২০১৭ সালে ৮ হাজার ৩৪৪ জন এবং ২০১৬ সালে ৮ হাজার ৫০২ জন।
চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক নারায়ন চন্দ্র নাথ জানান, পাসের হার বাড়াতে নজরদারি ছিলো আমাদের।  বিদ্যালয় পরিদর্শকদের দিয়ে তিন পার্বত্য জেলাসহ বোর্ডের আওতাধীন সকল জেলার বিদ্যালয়গুলো নিয়মিত মনিটরিং করেছি আমরা।  যার ফল এসেছে এই বারের এসএসসিতে।  তিনি বলেন, এই বার পরীক্ষা শুরুর আগেই পরীক্ষকদের সতর্ক করেছি আমরা।  সময় নিয়ে ত্রুটিহীনভাবে যাতে তারা খাতা মূল্যায়ণ করে।  অন্য কাউকে দিয়ে যাতে খাতা মূল্যায়ণ করা না হয়।  পরীক্ষকদের প্রচেষ্টা এবং বোর্ডের উদ্যোগ বাস্তবায়িত হওয়ায় পাসের হারে এবং জিপিএ-৫ পাওয়ার সংখ্যায় ভালো করেছি আমরা।  তিনি বলেন, এইবার চট্টগ্রাম বোর্ডে জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেশি হওয়ার পেছনে মেয়েদের অবদান বেশি রয়েছে।  গত বারের তুলনায় এই বার ১ হাজারের বেশি ছাত্রী জিপিএ-৫ পেয়েছে।  যার প্রভাব পড়েছে এসএসসির এবারের ফলাফলে।
এদিকে, চট্টগ্রাম বিভাগের তিন পার্বত্য জেলায়ও এবার ক্যারিশমা দেখিয়েছে শিক্ষার্থীরা।  বান্দরবান, রাঙামাটি এবং খাগড়াছড়ির শিক্ষার্থীরা প্রায় সব পাবলিক পরীক্ষায় পিছিয়ে থাকে।  তবে এই বার পাসের হারে এই তিন জেলা বড় ধরণের ক্যারিশমাে দেখিয়েছে।  পাসের হার বেড়েছে প্রতিটি জেলায়।
বান্দরবানে ৭৩.২৮% হয়েছে এবারের পাশের হার যা গত বছর ছিলো ৬৫.৩৬%।  এবার পাসের হার বেড়েছে ৭.৯২%।  রাঙামাটিতে এবার পাসের হার ৭৮.৬৪%।  গত বছর এই জেলায় পাসের হার ছিলো ৬৮.৭৫%।  এই বার পাসের হার বেড়েছে ৯.৮৯%।  অন্যদিকে, খাগড়াছড়িতে এই বছর পাসের হার ৬৮.৫৭%।  গত বছর এই জেলায় পাসের হার ছিলো ৬৫.৪৬%।  অর্থাৎ এই বছর খাগড়াছড়িতে পাসের হার ৩.১১% শতাংশ বেড়েছে। এছাড়াও এ বছর চট্টগ্রাম নগরে পাসের হার ৯০.৩৪%।  গত বছর পাসের এই হার ছিলো ৮৪.৩৮%।  অন্যদিকে জেলায় এই বার পাসের হার ৮৫.১৪% যা গত বছর ছিলো ৭৮.৬০%।  নগর ও জেলা মিলিয়ে চট্টগ্রামে এই বার পাসের হার ৮৭ দশমিক ২৪ শতাংশ।  গতবার এই হার ছিলো ৮০.৫৮%।  অর্থাৎ এবার চট্টগ্রাম জেলায় পাসের হার গত বছরের চেয়ে ৬.৬৬% বেড়েছে।
কক্সবাজারে এই বছর পাসের হার ৮৪.৫৫%।  গত বছর পাসের এই হার ছিলো ৭৮.৪৮%।  অর্থাৎ এই বছর কক্সবাজার জেলায় পাসের হার ৬.০৭% বেড়েছে।
বিজ্ঞানে বেশি পাস, বেশি জিপিএ-৫
প্রতিবারের মতোই এবার সবচেয়ে বেশি পাস করেছে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা।  ৩০ হাজার ২৫৮ জন শিক্ষার্থী এবার পরীক্ষায় অংশ নেয় বিজ্ঞান বিভাগ থেকে।  এর মধ্যে পাস করেছে ৯২.২৩% শিক্ষার্থী।  জিপিএ-৫ পেয়েছে ৮ হাজার ৯৯ জন।  এছাড়াও ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগ থেকে চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ৬১ হাজার ২৬৩ জন শিক্ষার্থী অংশ নিয়ে পাস করেছে ৮৮.৬৭%।  জিপিএ-৫ পেয়েছে ৮৪৯ জন।  মানবিক বিভাগ থেকে এই বছর চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ৫২ হাজার ৩০২ জন শিক্ষার্থী অংশ নেয়।  এর মধ্যে পাস করেছে ৭৫ দশমিক ৮৪ শতাংশ শিক্ষার্থী।  জিপিএ-৫ পেয়েছে ৬০ জন।

ডিসি/এসআইকে/এমএসএ