ভাসানচর পরিদর্শনে ৪০ রোহিঙ্গা নেতা

নোয়াখালী জেলা প্রতিনিধি, দৈনিক চট্টগ্রাম >>>
রোহিঙ্গাদের জন্য তৈরি ভাসানচরের আবাসন প্রকল্প পরিদর্শন করেছেন ৪০ সদস্যের প্রতিনিধি দল।  শনিবার (৫ সেপ্টেম্বর) সকালে উখিয়া-টেকনাফের ৩৪টি ক্যাম্পের ৪০ জন রোহিঙ্গা নেতাকে সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে সেখানে নিয়ে যাওয়া হয়।  কক্সবাজারের শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) মাহবুবুল আলম তালুকদার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
নির্বাচিত প্রতিনিধি দলের সদস্যদের গতকালই (শুক্রবার) উখিয়ার কুতুপালং ট্রানজিট ক্যাম্পে নিয়ে আসা হয়।  শনিবার ভোরে তারা সেখান থেকে ভাসানচরের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়েছেন।
সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে প্রথমে তারা বাসযোগে চট্টগ্রাম যাওয়ার পর সেখান থেকে নৌবাহিনীর সহায়তায় নৌযানে ভাসানচরে পৌঁছাবেন।  প্রতিনিধি দল ৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সেখানে অবস্থান করবেন।  পরিদর্শন শেষে ৮ সেপ্টেম্বর তারা ফিরে আসবেন ক্যাম্পে।  ক্যাম্পে ফিরে তারা রোহিঙ্গাদের কাছে সেখানকার অবস্থা বর্ণনা করবেন।  প্রতিনিধি দলে রয়েছেন বিভিন্ন রোহিঙ্গা ক্যাম্পের হেড মাঝি, মাঝি এবং মসজিদের ইমাম।  নারী প্রতিনিধিও রয়েছেন।
আরআরআরসি মাহবুব আলম তালুকদার জানান, ভাসানচরে যাওয়ার সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেই প্রতিনিধি দলের যাত্রা শুরু হয়েছে।  প্রতিনিধি দলের সদস্যরা সরেজমিনে ভাসানচর আবাসন প্রকল্প পরিদর্শন করবেন।  সেখানকার বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা সম্পর্কে জানবেন।  প্রতিনিধি দলের কাছে ভাসানচরের পরিস্থিতি জেনে রোহিঙ্গারা ভাসানচরে যেতে আগ্রহী হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, ভাসানচরে কী ধরণের সুযোগ-সুবিধা গড়ে তোলা হয়েছে বা দ্বীপটি বসবাসের জন্য কেমন- তা নিজেদের চোখে দেখবেন রোহিঙ্গা নেতারা।
কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন জানান, ভাসানচর সম্পর্কে রোহিঙ্গাদের মাঝে ধারণা দিতে এই ‘গো অ্যান্ড সি’ ভিজিট।  কক্সবাজারের ৩৪টি ক্যাম্পে থাকা ১১ লাখ রোহিঙ্গার মধ্যে প্রায় ১ লাখ রোহিঙ্গাকে বঙ্গোপসাগরের মোহনায় জেগে ওঠা ভাসানচর দ্বীপে অস্থায়ীভাবে পাঠানোর উদ্যোগ নিয়ে সরকার প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে আবাসন প্রকল্প নির্মাণ করেছে।  জোয়ার ও জলোচ্ছ্বাস থেকে সেখানকার ৪০ বর্গকিলোমিটার এলাকা রক্ষা করতে ১৩ কিলোমিটার দীর্ঘ বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ এবং ১ লাখ রোহিঙ্গা বসবাসের উপযোগী ১২০টি গুচ্ছগ্রামের অবকাঠামো তৈরি করা হয়েছে।  নির্মাণ করা হয়েছে সাইক্লোন সেন্টার, প্রয়োজনীয় শিক্ষা ও চিকিৎসা অবকাঠামো।
এদিকে মালয়েশিয়া যেতে ব্যর্থ হয়ে ফিরে আসা তিন শতাধিক রোহিঙ্গাকে বঙ্গোপসাগর থেকে উদ্ধার করে ভাসানচরে আশ্রয় দিয়েছে সরকার।  বাংলাদেশ নৌবাহিনী এসব রোহিঙ্গাদের তত্ত্বাবধান করছে।  তাদের সঙ্গেও কথা বলবেন রোহিঙ্গা নেতারা।

ডিসি/এসআইকে/এমইউ