আ’লীগ নেতারা সব লুটেপুটে খাচ্ছেন নোয়াখালীতে : এমপি একরামুল

দৈনিক চট্টগ্রাম ডেস্ক >>>
নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক কমিটির নেতারা সব লুটেপুটে খাচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয় সংসদ সদস্য একরামুল করিম চৌধুরী।  শনিবার (১৯ মার্চ) দুপুরে সদর উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে উপজেলা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সমিতির মতবিনিময় সভায় তিনি এ অভিযোগ করেন।
সংসদ সদস্য একরামুল বলেন, ‘জেলা আওয়ামী লীগকে ধ্বংস করার চেষ্টা করছে বর্তমান আহ্বায়ক কমিটি।  এ কমিটির আহ্বায়ক এ এইচ এম খায়রুল আনম সেলিম একজন অত্যাচারী।  তিনি নিজেকে জনপ্রিয় দাবি করলেও তাকে এ অঞ্চলের মানুষ পছন্দ করেন না।  আর যুগ্ম-আহ্বায়ক শিহাব উদ্দিন শাহীন তিন থেকে পাঁচ লাখ টাকা ঘুষ নিয়ে সরকারি বিদ্যালয়ের পিয়ন নিয়োগ দিয়েছেন’।
একরামুল প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘একজন গরীব লোক যদি তিন থেকে পাঁচ লাখ টাকা ঘুষ দিয়ে চাকরি নেন, তখন তো সে এ চাকরি করে সংসার চালাতে পারবে না।  ফলে সে পিয়নগিরি না করে ধানাই-পানাই করবে, শিক্ষকদের কথা শুনবে না’।
এ সময় তিনি যেসব বিদ্যালয়ের পিয়ন কাজ করে না, শিক্ষকদের কথা শুনে না তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বর্তমান উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সামছুদ্দিন জেহান ও উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারকে নির্দেশ দেন।
সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এ কে এম সামছুদ্দিন জেহান ও সভাপতিত্ব করেন জেলার প্রাথমিক সহকারী শিক্ষকদের সংগঠনের সভাপতি রিয়াজ উদ্দিন পাটোয়ারী।
সংসদ সদস্য একরামের অভিযোগের বিষয়ে নোয়াখালী সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট শিহাব উদ্দিন শাহিন বলেন, ‘আমার হাতে কোনো নিয়োগ হয়নি।  বরং এসব নিয়োগ বোর্ডে এমপির প্রতিনিধি ও নির্বাহী কর্মকর্তা ছিলেন।  যদি ঘুষ নেওয়া হয় তাহলে তার প্রতিনিধিরা নিয়েছেন’।
তিনি পাল্টা অভিযোগ করে বলেন, ‘শুধু এসব নিয়োগে নয়, জেলার সব নিয়োগে সংসদ সদস্য ও তার লোকজন ঘুষ বাণিজ্য করেছেন।  এখন নিজের দোষ ঢাকতে শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টা করছেন তিনি।  গত ১৪ বছর কীভাবে লুটপাট করা হয়েছে তা সবাই জানেন। আমরা ছয়মাসে দলকে শৃঙ্খলায় ফেরাতে চেষ্টা করছি।  তিনি বাদ পড়ায় উল্টাপাল্টা কথা বলছেন’।
অন্যদিকে জেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক অধ্যক্ষ খায়রুল আনম চৌধুরী সেলিম বলেন, ‘আমি ওই সভায় ছিলাম না এমপির বক্তব্যও শুনিনি।  এ নিয়ে আমি কোনো মন্তব্যও করবো না’।
সংসদ সদস্য একরামুল করিম চৌধুরী টানা ১৭ বছর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে ছিলেন। ২০১৯ সালে অনুষ্ঠিত সম্মেলনেও তিনি সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছিলেন।  কিন্তু ওই কমিটি অনুমোদনের আগেই গত বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর সম্মেলনে ঘোষিত কমিটি ভেঙে দিয়ে ৮৭ সদস্যের নতুন আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয় কেন্দ্র থেকে।  এতে আহ্বায়ক করা হয় ভেঙে দেওয়া কমিটির সভাপতি এ এইচ এম খায়রুল আনম চৌধুরীকে।  আর দুই যুগ্ম আহ্বায়ক করা হয় শিহাব উদ্দিন শাহীন ও নোয়াখালী পৌরসভার মেয়র সহিদ উল্যাহ খানকে।

ডিসি/এসআইকে/এমএসএ