বান্দরবান-রাঙামাটি-খাগড়াছড়ি আসনে বাহাদুর, দীপংকর ও কুজেন্দ্র, ভোট পড়েনি ২১ কেন্দ্রে

বান্দরবান, রাঙামাটি ও খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি, দৈনিক চট্টগ্রাম >>>
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে টানা নির্বাচিত হয়ে এবার একজন ৭ম বারের মতো সংসদে যাচ্ছেন। বাকী দু’জনের একজন চারবার এবং অন্যজন তৃতীয়বারের মতো সংসদে যাচ্ছেন। তিন পার্বত্য জেলা বান্দরবান, রাঙামাটি ও খাগড়াছড়িতে নির্বাচিতরা হলেন যথাক্রমে বীর বাহাদুর উশৈ সিং, রাঙামাটি আসনে দীপংকর তালুকদার এবং খাগড়াছড়িতে কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা। তারা তিনজনই বর্তমান সংসদে প্রতিনিধিত্ব করছেন। এরমধ্যে পাবর্ত্যমন্ত্রী বীর বাহাদুর এবারসহ মোট ৭ বার নির্বাচিত হয়েছেন। দীপংকর ৪ বার ও কুজেন্দ্র ৩ বার নির্বাচিত হলেন। তবে, রাঙামাটির ২টি ও খাগড়াছড়ির ১৯ কেন্দ্রে কোনো ভোটই পড়েনি বলে রিটার্নিং কর্মকর্তার ঘোষিত ফলাফল সূত্রে জানা গেছে।
আমাদের বান্দরবান প্রতিনিধি জানান, বান্দরবান ৩০০নং আসনে টানা সপ্তমবারের মতো বিপুল ভোটে জয়ী হন আওয়ামী লীগের নৌকা নিয়ে নির্বাচন করা বীর বাহাদুর উশৈ সিং। এই আসনের ১৮২টি কেন্দ্রের ফলাফলে বেসরকারী হিসাবে বীর বাহাদুর ১ লক্ষ ৭২ হাজার ৬৭১ ভোট পান। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জাতীয় পার্টির প্রার্থী এটিএম শহীদুল ইসলাম লাঙ্গল প্রতীকে পেয়েছেন ১০ হাজার ৩৬১ ভোট। সাত উপজেলার দুই পৌরসভা ও ৩৪টি ইউনিয়নের মোট ভোটার সংখ্যা ২ লাখ ৮৮ হাজার ৩০ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার এক লাখ ৪৮ হাজার ৫৮৩ জন ও নারী ভোটার এক লাখ ৩৯ হাজার ৪৪৬ জন।
বীর বাহাদুর এর আগে ১৯৯১, ১৯৯৬, ২০০১, ২০০৮, ২০১৪ সালে এবং সর্বশেষ ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর ষষ্ঠ বারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়। তিনি আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রিসভার সদস্য হিসেবে ২০১৪ সালের ১২ জানুয়ারি পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী এবং ২০১৯ সালের ৫ জানুয়ারি থেকে একই মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন।
রাঙামাটি প্রতিনিধি জানান, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পার্বত্য রাঙামাটি- ২৯৯নং আসনে আওয়ামী লীগের নৌকার প্রার্থী দীপংকর তালুকদার ২ লাখ ৭১ হাজার ৩৭৩ ভোট পেয়ে তৃতীয়বারের মতো নির্বাচিত হন। ২১৩ কেন্দ্রে তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তি জোটের ‘ছড়ি’ প্রতীক নিয়ে অমর কুমার দে পেয়েছেন ৪ হাজার ৯৬৫। এছাড়াও তৃণমূল বিএনপির ‘সোনালী আঁশ’ প্রতীক নিয়ে মো. মিজানুর রহমান পেয়েছেন ২ হাজার ৬৯৩ ভোট।
রাঙামাটি আসনে মোট ভোটার সংখ্যা ৪ লাখ ৭৪ হাজার ৪৫৪। দীপংকর তালুকদার এর আগে ১৯৯১, ১৯৯৬, ২০০৮ এবং সবশেষ ২০১৮ সালে আসনটিতে বিপুল ভোটে নির্বাচিত হয়েছিলেন। ২০০১ সালে বিএনপির মণি স্বপন দেওয়ান এবং ২০১৪ সালে জনসংহতি সমিতির সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থী ঊষাতন তালুকদারের কাছে হেরে যান।
এছাড়াও পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়ি আসনে তৃতীয়বারের মতো জয় পেয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী এবং সংসদ সদস্য (এমপি) কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা। খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি জানান, ২ লাখ ২০ হাজার ৮২৬ ভোট পেয়েছেন কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা। তাঁর নিকটতম কেউ না থাকলেও অন্য প্রার্থীদের মধ্যে জাতীয় পার্টির মিথিলা রোয়াজা পেয়েছেন ১০ হাজার ৯৩৮ ভোট, তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী উশৈপ্রু মারমা পেয়েছেন ৯ হাজার ৫২৬ ভোট এবং ন্যাশনাল পিপলস পার্টির মো. মোস্তফা পেয়েছেন ৮ হাজার ৪৫৬ ভোট।
খাগড়াছড়ির ৯ উপজেলার ৫ লাখ ১৫ হাজার ৪১৯ জন ভোটারের বিপরীতে ভোট পড়েছে ২ লাখ ৫৭ হাজার ৫৯৩টি। এরমধ্যে বাতিল ভোট ৭ হাজার ৮৫৭টি। ভোটের হার ৪৯ দশমিক ৯৮ শতাংশ।
এদিকে জেলার ১৯৬টি কেন্দ্রের মধ্যে ১৯টি কেন্দ্রে কোনো ভোটই পড়েনি। এরমধ্যে ১১টি পানছড়িতে, লক্ষ্মীছড়িতে ৫টি এবং দীঘিনালায় তিনটি রয়েছে। এছাড়া দক্ষিণ লতিবান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে একটি ভোট পড়ে।

ডিসি/এসআইকে/এসপিআর-এমকেএইচ-এমএইচ