চট্টগ্রামের দক্ষিণে যারা জিতলেন

দক্ষিণ চট্টগ্রাম প্রতিনিধি, দৈনিক চট্টগ্রাম >>>
স্থানীয় সরকার জনপ্রতিনিধিদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা সৃষ্টি করে শেষ হয়েছে চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ নির্বাচন। সোমবারের (১৭ অক্টোবর) এই নির্বাচনে প্রতিটি ভোট কেন্দ্র ও বুথে বসে সিসিটিভি ক্যামেরা। এসব ক্যামেরার মাধ্যমে নির্বাচনে ভোটগ্রহণ পর্যবেক্ষণ করা হয় ঢাকার নির্বাচন কমিশন সচিবালয় ও চট্টগ্রাম আঞ্চলিক নির্বাচন অফিস থেকে। সকাল ৯টা থেকে বিকাল ২টা পর্যন্ত ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) জেলার ১৫টি উপজেলার ৩০টি বুথে একটানা ভোটগ্রহণ চলে।
নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, সোমবারের এই নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে দুই প্রার্থী ছাড়াও ১৫ উপজেলায় ১৫টি সাধারণ সদস্য পদে ৪৬ জন ও সংরক্ষিত ওয়ার্ডের পাঁচ পদের বিপরীতে ২২ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। চট্টগ্রাম জেলা পরিষদে দক্ষিণ চট্টগ্রামের ৮ উপজেলা থেকে আটজনকে ভোট দিয়ে সদস্যপদে রায় দিয়েছেন স্থানীয় সরকার প্রতিনিধিরা। উপজেলাভিত্তিক ভোটের ফলাফলসহ বিস্তারিত তুলে ধরা হলো :
পটিয়া
চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ নির্বাচনে ১০নং ওয়ার্ডে (পটিয়া) সদস্য পদে দ্বিতীয়বারের মতো বিজয়ী হয়েছেন দেবব্রত দাশ দেবু। তালা প্রতীকে তার প্রাপ্ত ভোটের সংখ্যা ১২৮। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী শাহাদাত হোসেন ফরিদ অটোরিকশা প্রতীকে পেয়েছেন ১০৭ ভোট। পটিয়া উপজেলায় ১৭টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় মোট ২৩৭ জন জনপ্রতিনিধি ভোটার ছিলেন। এরমধ্যে ভোট দিয়েছেন ২৩৫ জন।
উপজেলার আবদুস সোবহান রাহাত আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের একমাত্র কেন্দ্রে বিরতিহীনভাবে ইভিএম ভোটিং পদ্ধতিতে চলা এই ভোটে সংরক্ষিত মহিলা সদস্য- ৪- এ (পটিয়া, আনোয়ারা, চন্দনাইশ) সর্বাধিক ভোট পেয়ে জয়ী হন দোয়াত কলম প্রতীকের ফারহানা আফরীন জিনিয়া। তিনি পটিয়ায় ১৭৫, চন্দনাইশে ৮৫ ও আনোয়ারায় ৩১ ভোটসহ মোট ২৯১ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন। জিনিয়া পটিয়া উপজেলার দক্ষিণ ভূর্ষি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সেলিমের স্ত্রী।
সাতকানিয়া
১৪নং ওয়ার্ড (সাতকানিয়া) থেকে সদস্য পদে বিজয়ী হয়েছেন আবদুল আলীম (বৈদ্যুতিক পাখা)। তার প্রাপ্ত ভোটের সংখ্যা ১১৭। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মনির আহমদ (তালা) পেয়েছেন ৯২ ভোট। অপর প্রার্থী গোলাম ফেরদৌস রুবেল (হাতি) পেয়েছেন ২২ ভোট। সাতকানিয়া উপজেলার ১৭টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভায় মোট ভোটার ছিলেন ২৩৬টি। ঘোষিত ফলাফলে দেখা যায়, চেয়ারম্যান পদে এটিএম পেয়ারুল ইসলাম (আনারস) পেয়েছেন ২১৯ ভোট। তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী নারায়ণ রক্ষিত (সাইকেল) পেয়েছেন ১২ ভোট। অপরদিকে সংরক্ষিত মহিলা সদস্য পদে শাহিদা আক্তার জাহান (হরিণ) পেয়েছেন ১২২ ভোট। তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী সুরাইয়া খানম (বল) পেয়েছেন ৮১ ভোট।
লোহাগাড়া
১৫নং ওয়ার্ড (লোহাগাড়া) থেকে সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন এরফানুল করিম চৌধুরী। ঘুড়ি প্রতীকে তার প্রাপ্ত ভোট ৬৫। অন্যদিকে তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আনোয়ার কামাল অটোরিকশা প্রতীকে পেয়েছেন ৫৩ ভোট। অন্যদিকে জেলা পরিষদ নির্বাচনের চট্টগ্রাম লোহাগাড়া ১৫নং ওয়ার্ডের মোট ১২০ জন ভোটারের মধ্যে ১১৮টি ভোট পড়ে। দুপুর আড়াইটার দিকে ফলাফল ঘোষণা করা হয়।
চন্দনাইশ
১৪নং ওয়ার্ড (চন্দনাইশ) থেকে বিজয়ী হয়েছেন আবু আহমদ চৌধুরী জুনু। হাতি প্রতীকে তিনি পেয়েছেন ৬৪ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী গাছবাড়িয়া সরকারি কলেজ ছাত্র সংসদের সাবেক ভিপি শেখ টিপু চৌধুরী তালা প্রতীকে পেয়েছেন ৫৩ ভোট। উপজেলা সদরের কাশেম মাহবুব উচ্চ বিদ্যালয়ে ভোট কেন্দ্র ছিল। বরমা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান বিদেশে অবস্থান করায় একটি ভোট ছাড়া বাকি সব ভোটই পড়ে এখানে। বিজয়ী আবু আহমেদ চৌধুরী জুনু গতবারও জেলা পরিষদের সদস্য ছিলেন। তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।
বাঁশখালী
১৩নং ওয়ার্ড (বাঁশখালী) থেকে সদস্য পদ ও সংরক্ষিত সদস্য (মহিলা) পদে সর্বমোট ১৪ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। এতে ৮৯ ভোট পেয়ে সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন নুরুল মোস্তফা সিকদার সংগ্রাম। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হক সিকদার পেয়েছেন ৩৭ ভোট। বাঁশখালী উপজেলায় মোট ভোটার সংখ্যা ১৯৭। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১৫১ ও মহিলা ভোটার ৪৬ জন। ভোটাধিকার প্রয়োগ হয়েছে ১৯৫ জনের।
বোয়ালখালী
৮ নম্বর ওয়ার্ডে (বোয়ালখালী) সাধারণ সদস্য পদে হাতি প্রতীকে ৭৯ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও মানব সম্পদবিষয়ক সম্পাদক বোরহান উদ্দিন মোহাম্মদ এমরান। তার প্রতিদ্বন্দ্বী মো. ইউনুছ তালা প্রতীকে পেয়েছেন ৪৪ ভোট। সোমবার (১৭ আগস্ট) বোয়ালখালী উপজেলার গোমদন্ডী পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে এখানে মোট ভোটার ছিলেন ১২৭ জন। এর মধ্যে ভোট দিয়েছেন ১২৩ জন।
এই ওয়ার্ডে চেয়ারম্যান পদে এটিএম পেয়ারুল ইসলাম আনারস প্রতীকে পেয়েছেন ১১৬ ভোট ও নারায়ণ রক্ষিত মোটর সাইকেল প্রতীকে পেয়েছেন ৭ ভোট। অন্যদিকে সংরক্ষিত মহিলা সদস্য পদে জগদা চৌধুরী দোয়াত কলম প্রতীকে পেয়েছেন ৬৬ ভোট, তাহমিনা আকতার চৌধুরী হরিণ প্রতীকে ২২ ভোট ও মোস্তফা রাহিলা চৌধুরী ফুটবল প্রতীকে ৩৪ ভোট পেয়েছেন।
কর্ণফুলী
চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ নির্বাচনে কর্ণফুলী উপজেলা থেকে সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন ইঞ্জিনিয়ার ইসলাম আহমেদ।

এছাড়াও আনোয়ারা থেকে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় আগেই অনানুষ্ঠানিক বিজয়ীপ্রার্থী ছিলেন এসএম আলমগীর চৌধুরী। সোমবার তাকেও বেসরকারিভাবে নির্বাচিত ঘোষণা করা হয়।

ডিসি/এসআইকে/এমএসএ