বাঁশখালীতে সেতু আছে সড়ক নেই

মু. মিজান বিন তাহের, বাঁঁশখালী প্রতিনিধি >>>
চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার পূর্ব সাধনপুর ৬ নম্বর ওয়ার্ডের মৌলভী ঘোনা।  এলাকায় হাজার হাজার মানুষের চলাচলের একমাত্র সড়কটিতে বিগত কয়েক বছর পূর্বে প্রবল বর্ষণে ভেঙে যাওয়া সড়কটিতে ব্রিজ আছে কিন্তু সড়ক নেই।  মঙ্গলবার (১১ আগস্ট) বিকেলে সরেজমিনে উপজেলার পূর্ব সাধনপুর ৬ নম্বর ওয়ার্ডের মৌলভী ঘোনা ও পানি চড়া এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে এমন চিত্র।  বাঁশখালী পিএবি প্রধান সড়ক সাধনপুর ইউনিয়নের চারা বটতল থেকে ১ কিলোমিটার পূর্বদিকে গেলেই দেখা যায় প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষের বিচরণ।  মৎস চাষ, গরু পালন ও মুরগীর খামারসহ পাহাড়ি এলাকায় নানান কাজে এসব মানুষ এই সড়কটি ব্যবহার করে আসছেন।  বিগত কয়েক বছর প্রবল বর্ষণের ফলে পাহাড়ি ঢলে এই সড়কসহ ব্রিজটির প্রায় অংশ ভেঙে যায়।  ফলে স্থানীয় কয়েক গ্রামের বাসিন্দাদের দুর্ভোগের নানান গল্পও নেহায়েত কম নয়।  এই এলাকার স্থানীয় মানুষের একটিই দাবি- সড়কসহ ব্রিজটি সংস্কার করে সড়কটি নির্মাণ করে দেয়া।  এই ব্রিজ ও সড়কটি সংস্কার করা হলে পুরো সাধনপুরসহ আশেপাশের ৪-৫টি গ্রামের হাজার হাজার মানুষের স্বপ্নপূরণ হবে।
জানা গেছে, বিগত কয়েক বছর আগে ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে মিনি কালভার্ট স্থাপন করা হলে ও পাহাড়ি ঢলে পানির সাথে কালভার্টটি তলিয়ে যায়।  পরবর্তীতে স্থানীয় মো. আমিন নামের এক ব্যক্তি নিজ খরচে নিজেদের জায়গায় পূণরায় আবারো কালভার্ট স্থাপন করেন।  কিন্তু পরবর্তীতে আবারো পাহাড়ি ঢলে সড়কটি দুই পাশ থেকে ভেঙে কালভার্টটি একটু দেবে যায়।  বিগত ২ বছর ধরে আর কোনো সংস্কার না করায় বর্তমানে শুধুই ব্রিজটি রয়েছে।  মো. আমিন দাবি করেন, নিজের জমিতে নিজ খরচে ব্রিজ নির্মাণ করেছিলাম।  নিজেদের চলাফেরা করার জন্য।  সেই ব্রিজ দিয়ে প্রতিনিয়ত আশেপাশের হাজারো মানুষ চলাচল করছেন।  গত বছর পাহাড়ি ঢলে ব্রিজ এবং সড়কটি ভেঙে গেলে আর কেউ এই সড়ক এবং ব্রিজটি সংস্কার করেননি।  তার জমির ঠিক উত্তর দিকেই সরকারি খাস জমিতে সড়ক এবং ব্রিজটি পূণরায় নির্মাণ করলে এলাকার এবং স্থানীয়দের অনেক উপকার হবে বলে তিনি জানান।
সরেজমিনে দেখা যায়, মৌলভীঘোনা থেকে কয়েক কিলোমিটার এগুতেই প্রধান সড়কের উঠলেই একটু দক্ষিণে সাধনপুর সাহেবেরহাট ও উত্তর দিকে বানীগ্রাম বাজার।  মৌলভীর ঘোনা সড়কটি ব্যবহার করে বেশ কয়েক গ্রামের মানুষকে জীবিকার তাগিদে উপজেলা সদরে ও চট্টগ্রাম শহরে যাতায়াত করতে হয়।
স্থানীয় মৃত নুরু মিয়ার ছেলে জেবল হোসেন ক্ষোভ নিয়ে বলেন, আমাদের ব্রিজও ছিল সড়কও ছিল।  কিন্তু সেটা গত তিন-চার বছর আগে প্রবল বর্ষণে ও পাহাড়ি ঢলে বিলীন হয়ে গেছে।  এবং ব্রিজটিও কিছুটা দেবে যায়।  দুই তিন বছর ধরে মানুষের কষ্টের যেন শেষ নেই।  এই বছর বর্ষাকালেও সড়ক এবং ব্রিজটি সংস্কার করা হয়নি।  তবে সড়ক এবং ব্রিজটি নির্মাণ করা হলে হাজার হাজার মানুষ আর জন দুর্ভোগে পড়বেন না।
সাধনপুর ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আব্দুল হক জানান, ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে স্থানীয়রা চলাফেরা করার জন্য ছোট কালভার্ট (নাসী) বসিয়েছিলাম।  পাহাড়ি ঢলে সেগুলো তলিয়ে যায়।  পরবর্তীতে স্থানীয় আমিন সাহেব একটি মিনি ব্রিজ নির্মাণ করলেও আবারো সেই ব্রিজটির দুই পাশের সড়কবিলীন হয়ে যায়।  সড়কটি সংস্কার এবং নতুন করে ব্রিজটি নির্মাণ করার জন্য মাসিক সভায় আমরা প্রস্তাব উত্থাপন করেছি।  খুব শীঘ্রই কাজটি শুরু হবে বলে মনে করি।  তবে ব্রিজ এবং সড়কটি একটু উত্তর পাশে হবে বলেও তিনি জানান।
এ ব্যাপারে জানতে সাধনপুর ইউপির চেয়ারম্যান ও থানা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মহিউদ্দীন চৌধুরী খোকার সাথে মুঠোফোনে বেশ কয়েকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তার মুঠোফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।

ডিসি/এসআইকে/এমএমবিটি