বাঁশখালীতে স্লুইসগেইট ভেঙে লোকালয়ে জোয়ারের পানি, দুর্ভোগে হাজারো মানুষ

মু. মিজান বিন তাহের, বাঁশখালী প্রতিনিধি >>>
টানা বর্ষণে জলকদরের জোয়ারের পানিতে তলিয়ে গেল দক্ষিণ চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার শীলকূপ ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ড এলাকার হেড পাড়ার অসংখ্য বসতঘরসহ পশ্চিম মনকিচর এলাকার নিম্নাঞ্চলের চাষের জমি, মাছের প্রজেক্টসহ ব্যবহারের পুকুর।  গৃহবন্দি হয়ে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন ওই এলাকার হাজার হাজার মানুষ।
বৃহস্পতিবার (২০ আগস্ট) সরেজমিনে পরির্দশনকালে দেখা যায়, বাঁশখালী উপজেলার শীলকূপ ইউনিয়নের জালিয়াখালী নতুন বাজারের পশ্চিমে ডাকবাংলো সড়কটি অতিবৃষ্টিতে বন্যার সৃষ্টি হয়ে প্লাবিত এবং জলকদরের জোয়ারের পানির স্রোতে স্লুইসগেইট ভেঙে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করে তলিয়ে যায় ওই এলাকার হেড পাড়ার অসংখ্য বসতঘরসহ পশ্চিম মনকিচর এলাকার নিম্নাঞ্চল।  স্থানীয়রা আশঙ্কা করছেন- এ মুহূর্তে স্লুইসগেইটে বাঁধ নির্মাণ করা না হলে রাতের জোয়ারে বিলীন হয়ে যাবে হেড পাড়ার নিম্নাঞ্চলসহ মনকিচর এলাকার অনেক জায়গা।  সড়কের মাঝ বরাবর ভেঙে যাওয়ায় পশ্চিম মনকিচরের সাথে জালিয়াখালী বাজারের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।  দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে এতে জনজীবন দূর্বিসহ হয়ে পড়বে।
অপরদিকে শেখেরখীল ইউনিয়নের গোদার পাড় ও লালজিবন, ছনুয়া ইউনিয়নের জলকদর খালের বাঁধ উঁচু না থাকায় আবাখালীর ষাট নম্বর পাড়ায় জোয়ারের পানি ঢুকেছে।  এতে প্রায় শতাধিক পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।  একইভাবে খানখানাবাদ ইউনিয়নের সুন্দীপি পাড়ায় শঙ্খ নদী থেকে জোয়ারের পানি ঢুকছে বলে দৈনিক চট্টগ্রামকে জানান স্থানীয় ইউপি সদস্য মোহাম্মদ হাফেজ।
স্থানীয় মৎস্যচাষী সাহাব উদ্দিন দৈনিক চট্টগ্রামকে জানান, ‘জোয়ারের পানিতে তলিয়ে গেছে আমার মাছের ৫টি প্রজেক্ট।  পোনা চাষের প্রজেক্টসহ ৩৫ লক্ষাধিক টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে আমার।  আমার রুজি রোজগারের সহায়-সম্বল মাছের প্রজেক্ট ও বেঁচে থাকার স্বপ্ন কেড়ে নিল জোয়ারের পানি’।
মুহাম্মদ নবী ও মু. শফি দৈনিক চট্টগ্রামকে জানান, সকালে স্লুইসগেইট ভেঙে জোয়ারের পানিতে তলিয়ে যায় হেডপাড়ার নিম্নাঞ্চল।  এতে আমাদের বসতঘরে পানি ঢুকে।  আমরা গৃহবন্দি হয়ে পড়েছি।  খুব শীঘ্রই তারা স্লুইসগেইটের বাঁধ নির্মাণের জন্য কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
স্থানীয় ইউপি সদস্য সিদ্দিক আকবর বাহাদুর দৈনিক চট্টগ্রামকে বলেন, ‘বাজারের পশ্চিমে ডাকবাংলো সড়ক দিয়ে কয়েক হাজার মানুষের যাতায়াত হয়।  আজকে জোয়ারের পানি প্রবেশ করে তলিয়ে যায় আমার এলাকাটি।  জোয়ারের পানি প্রবেশ ঠেকাতে না পারলে মনকিরচর নতুন বাজার, শিলকূপ ইউনিয়ন পরিষদ, বাঁশখালী বঙ্গবন্ধু উচ্চ বিদ্যালয়, স্থানীয় মসজিদসহ অনেক ফসলি জমি ও স্থাপনা পানিতে তলিয়ে যাবে।
শীলকূপ ইউপির চেয়ারম্যান মুহাম্মদ মহসিন দৈনিক চট্টগ্রামকে জানান, ‘লোকলয়ে জোয়ারের পানি প্রবেশের খবর পেয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য সিদ্দিক আকবর বাহাদুরকে দ্রুত বাঁধ নির্মাণের জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে’।
এ বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী প্রকাশন চাকমা বলেন, যেসব অংশে জোয়ারের পানি ঢুকছে, সে সব অংশ সংস্কারের জন্য জরুরিভাবে বরাদ্দ চাওয়া হবে।  বরাদ্দ পাওয়া সাপেক্ষে সংস্কার কাজ শুরু হবে।

ডিসি/এসআইকে/এমএমবিটি