ভয়-ভীতি আর ক্ষমতা প্রদর্শনের শঙ্কায় বোয়ালখালীতে ভোট বুধবার

বোয়ালখালী প্রতিনিধি, দৈনিক চট্টগ্রাম >>>
হুমকি-ভয়ভীতি প্রদর্শন, ক্ষমতা প্রদর্শন ও সুষ্ঠু নির্বাচনের শঙ্কাসহ নানা অভিযোগের মধ্যে দিয়ে সোমবার (৩ জানুয়ারি) নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা শেষ করেছেন বোয়ালখালী উপজেলার ৭ ইউপিতে অংশ নেয়া প্রার্থীরা।  আগামি বুধবার (৫ জানুয়ারি) সারা দেশের মতো পঞ্চম ধাপে বোয়ালখালীর ৭ ইউনিয়নে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
এই নির্বাচনে উপজেলার সাত ইউপিতে ২৫ জন চেয়ারম্যান, ২৭২ জন সাধারণ সদস্য ও ৫৯ জন সংরক্ষিত সদস্য প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।  এরমধ্যে ৪ ইউপিতে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীর বিপক্ষে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৪ বিদ্রোহী প্রার্থী।
উপজেলার শাকপুরা ইউপিতে আনারস প্রতীক নিয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য মো. গিয়াস উদ্দীন সোহেলের সাথে রয়েছে নৌকার প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান আবদুল মান্নান মোনাফ।
সারোয়াতলী ইউপিতে নৌকা নিয়ে লড়ছেন বর্তমান চেয়ারম্যান বেলাল হোসেন।  তার বিরুদ্ধে প্রার্থী হয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা সদস্য মুক্তিযোদ্ধা এএমএম ইউছুপ চৌধুরী।
চরণদ্বীপ ইউপিতে বর্তমান চেয়ারম্যান পেয়েছেন নৌকা প্রতীক। আনারস প্রতীক নিয়ে তার প্রতিপক্ষ উপজেলা আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক মো. নুরুল আমিন খান।  এছাড়া স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে চশমা প্রতীক নিয়ে লড়ছেন সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ শোয়েব রেজা।
শ্রীপুর-খরণদ্বীপ ইউপিতে নৌকা প্রতীক নিয়ে লড়ছেন বর্তমান চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মোকারম।  তার প্রতিদ্বন্দ্বী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. জমির উদ্দীন।
জানা গেছে, পোপাদিয়া, আমুচিয়া ও আহলা করলডেঙ্গা ইউপিতে আওয়ামী লীগের কোনো বিদ্রোহী প্রার্থী নেই।  পোপাদিয়া ইউপিতে বর্তমান চেয়ারম্যান এসএম জসিম উদ্দীন নৌকা প্রতীকে মাঠে রয়েছেন।  তার সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী বাবু দাশ।
আমুচিয়া ইউপিতে বর্তমান চেয়ারম্যান কাজল দে নৌকা প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) মনোনীত কাস্তে প্রতীকের প্রার্থী অনুপম বড়ুয়া পারুর সাথে।  আহলা করলডেঙ্গা ইউপিতে নৌকা প্রতীক পেয়েছেন মনসুর আহাম্মদ বাবুল।  তিনি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন বর্তমান চেয়ারম্যান আনারস প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী হামিদুল হক মান্নানের সাথে।
নির্বাচনী প্রতীক বরাদ্দের পর আচরণ বিধিলঙ্ঘন করে প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণায় অংশ নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দেন চট্টগ্রাম- ৮ আসনের সাংসদ মোছলেম উদ্দিন আহমদ।  এতে সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে সংশয় প্রকাশ করছেন স্বতন্ত্র প্রার্থীরা।  তবে নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নেওয়ায় সাংসদকে দুইবার সতর্ক করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।  এছাড়াও নির্বাচনের সময় এলাকায় থেকে বিরোধী প্রার্থীদের মোরদ দেখার হুঙ্কারও দেন তিনি। 
উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. নুরুল ইসলাম বলেন, অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচনের লক্ষ্যে যাবতীয় প্রস্তুতি ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে।  আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় কাজ করছেন পুলিশ, বিজিবি, র‌্যাব ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট।
নির্বাচনে সাত ইউনিয়নে ৬৪ ভোট কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে জানিয়ে তিনি বলেন, শাকপুরায় ১৯ হাজার ৫৭১ জন, সারোয়াতলীতে ১৯ হাজার ৪৭৫ জন, পোপাদিয়ায় ১৮ হাজার ৫৬৬ জন, চরণদ্বীপে ১৬ হাজার ৭৮৫ জন, শ্রীপুর-খরণদ্বীপে ১৭ হাজার ১১৪ জন, আমুচিয়ায় ৯ হাজার ৭৭৬ জন, আহলা করলডেঙ্গায় ১৩ হাজার ৭৩১ জন ভোটার রয়েছে।

ডিসি/এসআইকে/আরসি