মির্জা মনসুর ও আহমদ ফটিকছড়ির সম্পদ নয়, রাষ্ট্রের সম্পদ, তাঁদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি সময়ের দাবি

নগর প্রতিবেদক, দৈনিক চট্টগ্রাম >>>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম এবং মহান মুক্তিযুদ্ধে অবদানের জন্য মির্জা আবু মনসুর এবং তাঁর বাবা মির্জা আবু আহমদকে রাষ্ট্রীয়ভাবে স্বীকৃতি প্রদানের দাবি জানিয়েছে ফটিকছড়ি সাংবাদিক পরিষদ-চট্টগ্রাম। ফটিকছড়ির গর্ব এই কৃতি ব্যক্তিত্বরা শুধু ফটিকছড়ির নয়, পুরো রাষ্ট্রের সম্পদ। কিন্তু জীবদ্দশায় তাঁদেরকে রাষ্ট্রীয়ভাবে স্বীকৃতি দেয়া হয়নি। এই দুই রাষ্ট্রমানবকে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দান এখন সময়ের দাবি। বীর চট্টলার জনতার এই দাবি দ্রুতই বাস্তবায়ন দেখতে চায় চট্টগ্রামবাসী।
শনিবার (৩০ ডিসেম্বর) দুপুরে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের বঙ্গবন্ধু হলে এক শোকসভায় এ দাবি জানানো হয়।
শোকসভায় বক্তারা বলেন, মির্জা আবু এবং তার চার সন্তান একাত্তরে রণাঙ্গণে শুধু যুদ্ধই করেননি তিনি শরণার্থীদের আশ্রয় এবং যুদ্ধ ফান্ডে অর্থ দিয়েও সহায়তা করেছেন। দেশের শিল্পায়ন এবং বাণিজ্যের প্রসারেও রয়েছে পরিবারটির অবদান।
সংগঠনের সভাপতি মহসীন কাজীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত শোকসভায় স্বাগত বক্তব্য দেন মোহাম্মদ ফারুক, এছাড়া আরও বক্তব্য দেন, সাবেক সিটি মেয়র মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরী, চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এটিএম পেয়ারুল ইসলাম, বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ সাইফুদ্দিন মাইজভান্ডরি, যুদ্ধকালীন সিইনসি কমান্ডার ফেরদৌস হাফিজ খান রুমু, বীর মুক্তিযোদ্ধা মির্জা মো. আকবর, মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক জেলা কমান্ডার মো. ইদ্রিস, বীর মুক্তিযোদ্ধা এটিএম আবু তাহের মাসুদ, অধ্যাপক ড. ইদ্রিস আলী, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সভাপতি সালাহ উদ্দিন মো. রেজা, চট্টগ্রাম জেলা ক্রীড়াসংস্থার সহ সভাপতি মো. হাফিজুর রহমান, মরহুমের সন্তান মির্জা মো. মাজিদ, সঙ্গীত শিল্পী শিমুল শীল, মুক্তিযোদ্ধার সন্তান অ্যাডভোকেট মো. খোরশেদুল আলম টিপু ও এসএম সোহরাব উদ্দিন টুটুল।
শোকসভায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয় বক্তব্য দেন মির্জা মনসুরের ঘনিষ্ঠ বন্ধু অধ্যক্ষ শায়েস্তা খান।
সাবেক সিটি মেয়র মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, মির্জা মনসুর স্কুলবেলা থেকে ছাত্রলীগের রাজনীতিতে যুক্ত হয়ে দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের সূচনাকাল থেকে মুক্তিযুদ্ধ পর্যন্ত যে ভূমিকা রেখেছেন তা ইতিহাসে উজ্জ্বল হয়ে আছে। কেউ তাঁকে মূল্যায়ন করুক আর না করুক ইতিহাস চলবে তার আপন গতিতে। তিনি এবং তাঁর পরিবার এ দেশের ইতিহাসের অংশ।
চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এটিএম পেয়ারুল ইসলাম বলেন, মির্জা আবু আহমদ মুসলিম লীগের প্রাদেশিক পরিষদ সদস্য থাকাকালে তাঁর সন্তানরা ছাত্রলীগ করেছেন। তিনি কখনও ছেলেদের বাঁধা দেননি বরং ঊনসত্তরের উত্তাল সময় থেকে বঙ্গবন্ধুকে সহায়তা করে গেছেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় মুসলিম লীগের পদ ছেড়ে দেশের জন্য মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েন চার সন্তানকে নিয়ে। দুইমাস ধরে হাজার হাজার শরণার্থীকে নিজের বাড়িতে আশ্রয় দিয়েছেন। রণাঙ্গণের জন্য অস্থায়ী সরকারকে টাকাও দিয়েছেন।
সভাপতির বক্তব্যে মহসীন কাজী স্বাধীনতা সংগ্রাম এবং মহান মুক্তিযুদ্ধে অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে মির্জা আবু মনসুর এবং তাঁর বাবা মির্জা আবু আহমদকে রাষ্ট্রীয়ভাবে স্বীকৃতি প্রদানের দাবি জানান।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন, বাংলা একাডেমি পুরস্কারপ্রাপ্ত মুক্তিযুদ্ধ গবেষক মুহাম্মদ শামসুল হক, মির্জা মনসুরের বোন আবরারা বেগম, নিগার সুলতানা, পারভীন সুলতানা ও ছোটভাই মির্জা মো. আজগর।

ডিসি/এসআইকে/আরএআর