ফটিকছড়িকে সাজাতে নিরলস শ্রম ইউএনও আরেফিনের

ইউএনও মোহাম্মদ সায়েদুল আরেফিন।

মোহাম্মদ জিপন উদ্দিন। >>>
চট্টগ্রাম শহরের ৩৫ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত চট্টগ্রামের সর্ববৃহৎ উপজেলা ফটিকছড়ি; যার মোট আয়তন ৭৭৩.৫৪ বর্গ কিলোমিটার (১,৯১,১৪৬ একর)। এর নাম ‘ফটিক’ অর্থ স্বচ্ছ ও ছড়ি অর্থ পাহাড়িয়া নদী, ক্ষুদ্র স্রোতস্বতী, ঝর্ণা বা খাল। উপজেলার পশ্চিমাংশে ফটিকছড়ি খাল নামক একটি স্বচ্ছ ঝর্ণা আছে। নৈসর্গিক সৌন্দর্য্যে ভরা খালটি সীতাকুণ্ড পাহাডি় রেঞ্জ থেকে উৎপত্তি হয়ে যোগিনী ঘাটা নামক স্থানে হালদা নদীর সাথে মিলিত হয়েছে। একসময় ফটিকছড়ি উপজেলার অবস্থান ছিল ভূজপুরের দক্ষিণ প্রান্ত দিয়ে প্রবাহিত এই ফটিকছড়ি খালের তীরে। ফটিকছড়ি খাল হতেই এই থানার নামকরণ হয়। বাংলাদেশের ১৬৩টি চা বাগানের মধ্যে ১৭ টিই ফটিকছড়ি উপজেলায়।
এছাড়াও ফটিকছড়িতে তিনটি রাবার বাগান আছে। এশিয়া মহাদেশের সবচেয়ে বিশাল আয়তনের বাগানটি (দাঁতমারা রাবার বাগান) রয়েছে এই ফটিকছড়িতে। যার আয়তন সাড়ে চার হাজার একর।
নানাভাবে সম্ভাবনাময়, উজ্জ্বল ও ঐতিহ্যবাহী এ উপজেলাকে সত্যিকার অর্থে সাজাতে নিরলস কাজ করে চলেছেন উপজেলার বর্তমান উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মোহাম্মদ সায়েদুল আরেফিন। মানিকগঞ্জ জেলার দৌলতপুর গ্রামের মোহাম্মদ হাতেম আলীর ছেলে মোহাম্মদ সায়েদুল আরেফিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি বিভাগে অধ্যাপনা শেষ করেন, উচ্চ শিক্ষা গ্রহণের জন্য গিয়েছেন বিদেশেও। অল্প কিছুদিনের ব্যবধানে তার সততা, আন্তরিকতা ও ত্যাগের মাধ্যমে পাল্টে দিয়েছেন ফটিকছড়ির আগের চিরচেনা রূপ।
এর আগেও অনেক ইউএনও এসেছেন; দায়িত্ব পালন শেষে চলেও গেছেন। কিন্তু সায়েদুল আরেফিনের মতো অপরিচিত একটি উপজেলাকে আপন করে নিতে পারেননি অতীতের কোনো প্রশাসনিক কর্মকর্তাই- এমনটাই ধারণা এই অঞ্চলের মানুষের। তিনি ফটিকছড়িতে আসার পরপরই সরব থেকেছেন মাদক, চোরাচালান, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, ছিনতাই, ধর্ষণ, ইভটিজিং, শ্লীলতাহানিসহ সব ধরনের অপরাধ কর্মকাণ্ড প্রতিরোধে। পরিবেশের ক্ষতি করছে এমন ইটভাটাগুলো যেমন গুঁড়িয়ে দিয়েছেন, তেমনি প্রশাসনিক জবাবদিহিতা নিশ্চিতে নিয়মিতভাবে পরিচালনা করছেন গণশুনানি। যেখানে সব শ্রেণির মানষ তাদের অভাব-অনুযোগ-অভিযোগ, পরামর্শ দিতে পারছেন সহজেই। এখানকার মানুষের সেই সমস্যাগুলোর সমাধানে তড়িৎ উদ্যোগ নিয়েছেন- যা দৃষ্টি কেড়েছে সকলের। এমন উদ্যোগি কর্মকাণ্ডের উপহারস্বরূপ হয়েছেন শ্রেষ্ঠ উপজেলা নির্বাহী অফিসারের পদক।
প্রভাবশালী হোক বা গরীব- তাঁর অফিসে যেতে প্রয়োজন হয় না কোনো ধরণের অনুমতি। তিনি নিজেই বলেন, এটা জনগণের অফিস; আমি শুধু আপনাদের সেবক। কখনো কোনো সংসদ সদস্য সংসদে দাঁড়িয়ে কোনো উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সুনাম করতে তেমন জানা না গেলেও চট্টগ্রাম-২ আসনের এমপি সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারি সংসদে দাঁড়িয়েই ফটিকছড়ির ইউএনও’র প্রশংসা করে বক্তব্য দিয়েছেন। এতো কিছুর পরেও দল-মতের ভিন্নতা থাকতে পারে। কিন্তু তিনি কখনোই কারো জন্য বেশি কিংবা কারো জন্য কম- এমন ধারায় যাননি। সবাইকে সমানভাবে গুরুত্ব দিয়েই তিনি এই অঞ্চলের মানুষের আস্থা ও ভালোবাসা অর্জন করেছেন।

ডিসি/এসআইকে/এমজেইউ