সাইকেলে ২২ দিনে ৬৪ জেলায় ভ্রমণ ফটিকছড়ির আজমীরের

মোহাম্মদ জিপন উদ্দিন, ফটিকছড়ি প্রতিনিধি >>>
সাইকেল চালানো এখন নিয়মে পরিণত হয়ে গেছে। অনেকে শখের বশে, অনেকে শারিরীক বাধা দূর করে সুস্থ থাকতে আবার অনেকেই দেশের আনাচে-কানাচে ভ্রমণ করতে ভালোবাসেন। তাদের অনেকেই আবার এই ভ্রমণকে অর্থবহ করতে নানান বিষয়ে সচেতনতার বার্তা নিয়ে ভ্রমণে বের হন। সাইকেল চালানোর ফলে শারীরিক, মানসিক ক্লান্তি থাকলেও প্রকৃতিগত উপকারীতাও আছে। বর্তমানে উঠতি কিশোর-তরুণ-তরুণীরা সাইকেল চালানোয় ঝুঁকছে। পলে গড়ে উঠছে অনেক সাইক্লিং গ্রুপও। এমনি একজন গ্রুপ মেম্বার কম সময়ে জয় করেছেন বাংলাদেশের ৬৪ জেলা।
উত্তর চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলার পাট্টিলারকুল গ্রামের মোহাম্মদ শফি’র ছেলে ২২ বছরের তরুণ মোহাম্মদ আজমীর। তিনি ‘বেকারত্ব দূরীকরণে কারিগরি শিক্ষার বিকল্প নেই’ স্লোগানকে সামনে রেখে মানুষকে সচেতন করার মধ্য দিয়ে সাইকেলে চড়ে ৬৪ জেলা ভ্রমণ কে ছেন মাত্র ২২ দিনে।
আজমীর বলেন, আমি মূলত চট্টগ্রামের অন্যতম সাইক্লিং গ্রুপ ‘দ্বি-চক্রযান’র সদস্য। এ গ্রুপের মাধ্যমেই আমি সাইকেল ভ্রমণ শিখি। ভ্রমণের ব্যাপারে তিনি জানান, বাংলাদেশের ৬৩টি জেলা ভ্রমণ শেষ করে ৬৪তম জেলা হিসেবে কক্সবাজারে ঢুকার সময় পর্যন্ত মোট সময় লেগেছিলো ২২ দিন ৮ ঘন্টা ১৩ মিনিট।
আমার মূল লক্ষ্য ছিলো দ্রুততম সময়ে দেশ ভ্রমণের পাশাপাশি ‘বেকারত্ব দূরীকরণে কারিগরি শিক্ষার বিকল্প নেই’- এই বিষয়ে মানুষকে সচেতন করা। বিশেষ করে আমরা যখন কোথাও থামতাম আমাদের পোশাক, মাথায় হেলমেট, হাতে গ্লাভস ইত্যাদি দেখে লোক জমায়েত হতো। আমি সেটাকে কাজে লাগাতাম। ছোট পরিসরে সকলের মাঝে বেকারত্ব দূরীকরণে কারিগরী শিক্ষা কতটা সহায়ক সে সম্পর্কিত ম্যাসেজ দিয়ে দিতাম। আলহামদুলিল্লাহ; সকল স্থানেই সকল মানুষই আমার সাথে এ বিষয়ে একমত হয়েছেন এবং তারা নিজেদের সন্তানদের পড়ালেখার পাশাপাশি কারিগরি শিক্ষায় দক্ষ করে তুলতে কাজ করবেন বলে আশ্বস্ত করেছেন। পুরো ভ্রমণে আমার ব্যক্তিগত খরচ সম্পূর্ণভাবে বহন করেছেন চট্টগ্রামের জামালখানস্থ ‘হাসান বিল্ডার্স’ নামের একটি রিয়্যাল স্টেট কোম্পানী। আর পুরো রাইডে আমার সাথী ছিলো আমার বন্ধু বোয়ালখালীর শাহরিয়ার ইমন।
আজমীর জানান, আমরা চট্টগ্রাম থেকে গত ১ নভেম্বর এই রাইড শুরু করে আগে থেকে তৈরি করা ম্যাপ অনুসরণ করে মোট ৬৩ টি জেলা চালিয়ে ২৩ নভেম্বর ৬৪তম জেলা কক্সবাজার যাওয়ার মাধ্যমে সম্পূর্ণ রাইড শেষ করি। এখন পর্যন্ত ক্রস কান্ট্রি জিওমেট্রির সাইকেলে এটাই সবচেয়ে কম সময়ে সাইকেল চালিয়ে আসা রেকর্ড। মানসিক প্রস্তুতি, প্রশিক্ষণ এবং উদ্যমের ফলই হলো কোনো প্রকার শারিরীক ক্ষতিসাধন ব্যতীত ৪ হাজার কিলোমিটার পথ সাইকেল চালিয়ে শেষ করা।
আগামির স্বপ্ন প্রসঙ্গে আজমীর জানান, নিরাপত্তা নিয়ে কোনো ছাড় নয়। ভ্রমণ হোক নিরাপদ। এ লক্ষ্যে নতুন নতুন ভ্রমণ পিপাসু সাইক্লিস্ট হয়ে উঠতে সাহায্য করা নিয়ে কাজ করাই হলো আমার আগামি দিনের লক্ষ্য। এছাড়া আমি কিছুদিন হলো ক্লাইম্বিংয়ের সাথে যুক্ত হয়েছি। সে লক্ষ্যে বাংলাদেশের একমাত্র ক্লাইম্বিং রেইস ‘ক্লাইম্বেথন বাংলাদেশ সিজন ৩’ এ অংশগ্রহণ করে ৩য় স্থান অর্জন করেছি।
আজমীর স্বপ্ন দেখছেন, একদিন তিনি এভারেস্টের চূড়ায় নিজেকে দেখবেন। সে লক্ষ্যেই ধীরে ধীরে এগুচ্ছেন তিনি। দৈনিক চট্টগ্রাম পরিবার তার জন্য শুভ কামনা জানাচ্ছে।

ডিসি/এসআইকে/এমজেইউ