বড় ভাইয়ের হাতে ছোট ভাই খুন

নিহত শফিকুর রহমান। আহত তার স্ত্রী কোহিনূর।

লোহাগাড়া প্রতিনিধি >>>
দক্ষিণ চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার কলাউজানে পৈত্রিক জায়গা-জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে বড় ভাইয়ের হামলায় খুন হয়েছেন ছোট ভাই। গত ২৫ মার্চ হামলার ঘটনা ঘটলেও রবিবার (২৯ মার্চ) ছোট ভাই শফিকুর রহমান (৩৬) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করলে এই ঘটনা জানাজানি হয়। একই ঘটনায় আহত হয়েছেন নিহত শফির স্ত্রী কোহিনূর আকতারও। অভিযুক্ত বড় ভাই হচ্ছেন রফিক মৌলভী। হামলায় সরাসরি তার দুই ছেলেও যোগ দেয় বলে গ্রামবাসী অভিযোগ করেছেন। রবিবার (২৯ মার্চ) সকাল ১০ টার দিকে চট্টগ্রাম নগরীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শফিক মারা যান বলে জানা গেছে। এ ঘটনায় স্বামীকে বাঁচাতে গিয়ে স্ত্রী কহিনুর আকতার গুরুতর আহত হয়ে বর্তমানে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
নিহত শফিক উপজেলার কলাউজান ইউনিয়নের উত্তর কলাউজানের কানুরাম বাজার সংলগ্ন হাজীর পাড়ার মৃত ইছহাক মিয়ার পুত্র। স্থানীয় কলাউজান ইউপি চেয়ারম্যান এম.এ ওয়াহেদ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। এদিকে, ঘটনার পর পরই হামলাকারীরা ঘর তালাবদ্ধ করে পালিয়েছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।
নিহত শফিকের স্ত্রী কহিনুর আকতার জানান, তাদের দুই ভাইয়ের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে পৈত্রিক বসতভিটার জায়গা-জমি নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। এ নিয়ে গত ২৫ মার্চ (বুধবার) সন্ধ্যায় তাদের দুই ভাইয়ের মধ্যে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে বড় ভাই মৌলভী রফিক এবং তার দুই ছেলে জাহেদ ও শাহেদ আমার স্বামীর ওপর ধারালো দা, কোদাল ও গাছের বাটাম দিয়ে এলোপাথাড়ি জখম করে। এ সময় আমি স্বামীকে বাঁচাতে এগিয়ে গেলে তারা আমার মাথা ও পায়ে লাঠি দিয়ে আঘাত করলে আমি মাটিতে পড়ে যাই। পরে, স্থানীয়রা আমার স্বামী ও আমাকে আহতাবস্থায় ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে আসেন। সেখানে শফিকের শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে আশংকাজনক অবস্থায় তাকে চট্টগ্রাম নগরীর একটি বেসরকাীি হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রবিবার সকালে শফিক মারা যায়।
স্থানীয় কলাউজান ইউপি চেয়ারম্যান এম ওয়াহেদ জানান, পৈত্রিক জায়গা-জমি নিয়ে বড় ভাই মৌলভী রফিক আহমদ ও ছোট ভাই শফিকুর রহমানের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। ঘটনার দিন বিকেলে বড় ভাই শফিক তার দুই ছেলে নিয়ে বাড়ি সংলগ্ন নাল জমিতে আঁইল বাঁধতে থাকে। এমন সময় ছোট ভাই শফিক এতে বাঁধা দিতে গেলে উভয়ের মধ্যে তর্কাতর্কির এক পর্যায়ে শফিকের ওপর হামলা চালিয়ে গুরুতর আহত করা হয়। ঘটনার ৪ দিন পর চট্টগ্রাম শহরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শফিক মারা যায়।
এ ব্যাপারে লোহাগাড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জাকের হোসাইন মাহমুদ বলেন, ঘটনার বিষয়টি আমি জানার পর দ্রুত ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। নিহতের লাশ চট্টগ্রাম নগরীর পাঁচলাইশ থানার মাধ্যমে ময়না তদন্ত চলছে। ঘটনার বিষয়ে এখনো লিখিত কোনো অভিযোগ পাইনি। তবে, এ ব্যাপারে তদন্ত সাপেক্ষে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। এঘটনায় জড়িতদের ছাড় দেয়া হবে না।

ডিসি/এসআইকে/এমএম