৭ নভেম্বরের চেতনায় গণজাগরণ সৃষ্টি করতে হবে : ডা. শাহাদাত

নগর প্রতিবেদক, দৈনিক চট্টগ্রাম >>>
‘দেশ থেকে আজ গণতন্ত্র নির্বাসনে গেছে।  মানুষের ভোটের অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে।  সরকারি দল ছাড়া অন্য কোনো রাজনৈতিক দলের কর্মকাণ্ড একপ্রকার নিষিদ্ধ করা হয়েছে। আইন-আদালত, গণমাধ্যম সবই সরকারের নিয়ন্ত্রণে।  বিচার বিভাগকে নিয়ন্ত্রণে নিতে প্রধান বিচারপতিকে দেশত্যাগে বাধ্য করা হয়েছে।  সরকারের নতজানু নীতির কারণে সার্বভৌমত্বও দিন দিন দুর্বল হয়ে পড়ছে’।
শনিবার (৭ নভেম্বর) বিকেলে চট্টগ্রাম নগরীর বিপ্লব উদ্যানে জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে পুষ্পস্তবক অর্পণের পর এক সমাবেশে এসব কথা বলেন চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেন।
নগর বিএনপি আয়োজিত কর্মসূচিতে সভাপতির বক্তব্যে শাহাদাত আরো বলেন, ‘১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বরের চেতনা আমাদের প্রেরণার উৎস।  ৭ নভেম্বরের বিপ্লব ও সংহতির চেতনা ধারণ করে কঠিন ঐক্যের শপথ নিয়ে আমাদের গণজাগরণ সৃষ্টি করতে হবে।  অগণতান্ত্রিক সরকারের পদত্যাগের দাবিতে আমাদের রাজপথে নেমে আসতে হবে।  গণতন্ত্রকে পুনরুজ্জীবিত করতে বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করে আনতে হবে’।
একই সমাবেশে বিএনপির কেন্দ্রীয় বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম বলেন, ‘১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর আধিপত্যবাদী চক্রের ষড়যন্ত্র রুখে দিয়ে স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব ও গণতন্ত্র রক্ষার দৃঢ় প্রত্যয়ে সিপাহী-জনতা রাজপথে নেমে এসেছিল।  ৩ থেকে ৬ নভেম্বর মধ্যরাত পর্যন্ত দেশে এক শ্বাসরুদ্ধকর অনিশ্চিত অবস্থা বিরাজ করছিল।  হুমকির সম্মুখীন হয়ে পড়েছিল আমাদের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব।  সেদিন সিপাহী জনতার ঐক্যবদ্ধ বিপ্লবের মাধ্যমে রক্ষা পায় সদ্য অর্জিত বাংলাদেশের স্বাধীনতা।  নস্যাৎ হয়ে যায় স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব ও দেশবিরোধী সকল ষড়যন্ত্র।  ক্যান্টনমেন্টের বন্দিদশা থেকে জিয়াউর রহমান বীরউত্তমকে মুক্ত করেন বিপ্লবী সিপাহীরা’।  শামীম বলেন, ‘সেদিনের মতো আজও দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব হুমকীর সম্মুখীন।  এ অবস্থায় দেশপ্রেমিক জনগণকে বিপ্লব ও সংহতি দিবসের চেতনায় স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষায় তীব্র আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে’।
নগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্কর বলেন, ‘গণতন্ত্রের লেবাসে চলছে একদলীয় শাসন।  মিডিয়ার ওপর চলছে দমন-পীড়ন।  দেশের প্রতিটি প্রতিষ্ঠান আজ ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে।  দেশ আজ নানামুখী ষড়যন্ত্র ও চক্রান্তের জালে জড়িয়ে পড়েছে।  এ সুযোগে সরকারের মন্ত্রী, উপদেষ্টা, এমপিসহ শীর্ষ কর্মকর্তারা চরম দুর্নীতিতে নিমজ্জিত।  দুর্নীতির হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করা হয়েছে।  দেশের আইনশৃঙ্খলার চরম অবনতি হয়েছে।  সাধারণ মানুষ আজ অসহায়।  তারা মুক্তির জন্য নতুন বিপ্লবের প্রহর গুণছে’।
নগর বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি আবু সুফিয়ান বলেন, ‘৭ নভেম্বর বাংলাদেশের এক ঐতিহাসিক দিন।  জিয়াউর রহমানকে যখন বন্দি করে দেশকে অস্থিতিশীল করে তোলা হয়, তখন সেনাবাহিনীর দেশপ্রেমিক সৈনিকেরা তাকে মুক্ত করে দেশের হাল ধরার অনুরোধ করেন।  সেদিন জিয়াউর রহমান দেশের হাল না ধরলে দেশের স্বাধীনতা হুমকির মধ্যে থাকত।  দেশে আইনের শাসন, গণতন্ত্র বলে কিছু থাকতো না।  জিয়াউর রহমানের বলিষ্ঠ নেতৃত্বের কারণেই আজ দেশ উন্নয়নমুখী রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে’।
নগর বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক ইয়াসিন চৌধুরী লিটনের পরিচালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন নগর বিএনপির সহ-সভাপতি মো. মিয়া ভোলা, সামশুল আলম, এস কে খোদা তোতন, নাজিমুর রহমান, হারুন জামান, মাহবুবুল আলম, শফিকুর রহমান স্বপন, ইকবাল চৌধুরী, এস এম আবুল ফয়েজ, জাহিদুল করিম কচি, সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক এস এম সাইফুল আলম, যুগ্ম সম্পাদক শাহ আলম, আবদুল মান্নান, জাহাঙ্গীর আলম দুলাল, আবুল হাসেম, আনোয়ার হোসেন লিপু, গাজী মো. সিরাজ উল্লাহ, সাংগঠনিক সম্পাদক মনজুর আলম চৌধুরী মনজু, কামরুল ইসলাম, সহ-সাধারণ সম্পাদক খোরশেদ আলম, মো. সালাউদ্দিন, মাহাবুবুল হক, প্রচার সম্পাদক শিহাব উদ্দিন মুবিন, নগর মহিলা দলের ফাতেমা বাদশা ও মনোয়ারা বেগম মণি।
সমাবেশ শেষে শোভাযাত্রা বের করে নগর বিএনপি।

ডিসি/এসআইকে/এমএসএ