চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনে বিজ্ঞপ্তি-আবেদন-পরীক্ষা ছাড়াই নিয়োগ!

দৈনিক চট্টগ্রাম ডেস্ক >>>
কোনো ধরণের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশতো দূরের কথা, লিখিত পরীক্ষা ছাড়াই ২৭ জনকে নিয়োগ দেয়ার ঘটনা ঘটেছে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনে (চসিক)।  এরমধ্যে চারজন কোনো আবেদনই করেননি।  চসিকের এমন তুঘলকি কাণ্ডে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় যেনো থামছেই না।
এমন গুরুতর অবৈধ পন্থায় চসিকের বিদ্যুৎ বিভাগে নিয়োগ পাওয়া কর্মচারীরা হলেন রিফাত আলম, রফিকুল ইসলাম, পারভেজ মুন্সি, সাইদুল ইসলাম সাব্বির, রাশেদুল ইসলাম রাব্বী, বোরহান উদ্দীন, জিহাদ মিয়া, নজরুল ইসলাম, হৃদয় বসু, তুষার বড়ুয়া, এরশাদুল আলম, দেলোয়ার হোসেন, মোহাম্মদ হোসেন, মামুন হোসেন, শাহ নেওয়াজ লিটন, আরিফুল ইসলাম, অনিক দাশ, সাইফু উদ্দিন, নিউটন দে, সৌভিক দাশ, আবু হানিফ, নুরুল আলম, মোহাম্মদ হাসান, অর্কণ দে, আবুল কাশেম, সাহেব আলম রাহাত ও রাসেল।
একাধিক সূত্রে জানা গেছে, মৃত্যুজনিত ও অনুপস্থিতির কারণে চসিকের বিদ্যুৎ উপবিভাগের বৈদ্যুতিক মিস্ত্রি ও বৈদ্যুতিক সহকারীর ২১টি পদ খালি হয়।  ২০১৭ সালের ৯ অক্টোবর চসিকের পানি ও বিদ্যুৎ বিষয়ক স্থায়ী কমিটির সভায় এসব পদে নতুনভাবে নিয়োগ বা অন্য বিভাগ থেকে পদায়নের সিদ্ধান্ত হয়।  সেই মোতাবেক ওই দুটি পদে ৮ জন বৈদ্যুতিক মিস্ত্রি ও ১৮ জন বৈদ্যুতিক সহকারী নিয়োগের উদ্যোগ নেন চসিকের সাবেক প্রধান প্রকৌশলী ও তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (বিদ্যুৎ) ঝুলন কুমার দাশ।
এরই প্রেক্ষিতে গত বছরের ২৬ জুলাই মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নেন ২৮ জন চাকরিপ্রার্থী।  এর মধ্যে ২৮ জুলাই দৈনিক ৩৫৭ টাকা মজুরিতে নিয়োগ পান ২৭ কর্মচারী।  তবে এ নিয়োগের ক্ষেত্রে দেয়া হয়নি পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি, লিখিত পরীক্ষাও নেয়া হয়নি।  এমনকি চাকরির আবেদন না করেও চার কর্মচারী নিয়োগ পেয়েছেন বলে অভিযোগ ওঠে।
কর্মচারী নিয়োগে চসিকের এমন তুঘলকি কাণ্ডে শুরু হয় ব্যাপক সমালোচনা।  বিষয়টি নজরে এলে একই বছরের ২৪ নভেম্বর এ বিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেয় স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগ।  এরপর ২৪ ডিসেম্বর চসিকের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলামকে তদন্ত কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দিয়ে গঠন করা হয় তদন্ত কমিটি।  তদন্ত শেষে চলতি বছরের ৩১ জানুয়ারি চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কাজী মুহাম্মদ মোজাম্মেল হকের কাছে প্রতিবেদন জমা দেন তিনি।
বিজ্ঞপ্তি ছাড়া জনবল নিয়োগের বিষয়টি স্বীকার করে চসিকের সাবেক প্রধান প্রকৌশলী ও তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (বিদ্যুৎ) ঝুলন কুমার দাশ বলেন, জনবল নিয়োগের জন্য চাহিদা দিয়েছিল বিদ্যুৎ উপবিভাগ।  সেই অনুযায়ী জনবল নিয়োগ দিয়েছে সচিবালয় বিভাগ।  এক্ষেত্রে আমাদের কোনো ভূমিকা ছিল না।
এ বিষয়ে কথা বলতে রাজি হননি চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কাজী মুহাম্মদ মোজাম্মেল হক।  পরবর্তীতে চসিকের সচিবের দায়িত্বে থাকা মফিদুল আলমের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলেছে মন্ত্রণালয়।  এরই মধ্যে তদন্ত শেষ হয়েছে।  প্রতিবেদনটি মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে।  এরপর মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।

ডিসি/এসআইকে/এমএনইউ