চসিক মেয়রের সাথে সাক্ষাৎ করলেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত

নগর প্রতিবেদক, দৈনিক চট্টগ্রাম >>>
বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত আর্ল আর মিলার বলেছেন, চট্টগ্রামের অর্থনৈতিক ও ভৌগলিক গুরুত্ব ও অপার সম্ভাবনার প্রেক্ষিতে এখানে আমরা বিনিয়োগ করতে আগ্রহী।  চট্টগ্রামে বর্তমানে যেভাবে বড় বড় প্রকল্প বাস্তবায়ন হতে যাচ্ছে এবং ভবিষ্যতেও হবে তাতে তার ইতিবাচক প্রভাব চট্টগ্রামসহ জাতীয়, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রেও প্রতিফলিত হওয়ার সুস্পষ্ট সম্ভাবনা বিদ্যমান।  বিশেষ করে, এই প্রেক্ষিত বিবেচনায় চট্টগ্রামে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও পর্যটন খাতে বিনিয়োগে যুক্তরাষ্ট্র আগ্রহী।  এজন্য আমাদের দূতাবাসের বাণিজ্যিক কাউন্সিলরকে পর্যবেক্ষণ ও সম্ভাব্যতা যাচাই পূর্বক প্রতিবেদন প্রদানের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।  এর ভিত্তিতেই এই খাতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে কি পরিমাণ বিনিয়োগ করা যাবে সে ব্যাপারে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
তিনি আজ রবিবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) সকালে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) মেয়র এম. রেজাউল করিম চৌধুরীর সাথে তাঁর অফিস কক্ষে সাক্ষাৎকালে চট্টগ্রামে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগ বিষয়ে মেয়রের আহ্বানের প্রেক্ষিতে এই আশ্বাস প্রদান করেন।  এসময় তিনি আরো বলেন, চট্টগ্রাম ভূ-প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও বৈশিষ্ট্যে একটি বৈচিত্র্যময় অপরূপ নগরী। এখানে রয়েছে বিশ্বের অন্যতম প্রধান প্রাকৃতিক বন্দর। এই চট্টগ্রাম বন্দর শুধু জাতীয় অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির প্রধান অবলম্বন নয়, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রেও এটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক ও অর্থনৈতিক পোতাশ্রয়।  তাই চট্টগ্রামের প্রতি আমাদের আগ্রহ ও সুনজর রয়েছে।  তিনি বৈশ্বিক মহামারি কোভিড-১৯ মোকাবেলায় সতর্কতা, প্রতিরোধ-প্রস্তুতি ও সাফল্যের কথা তুলে ধরে বলেন, বাংলাদেশ ঘন জনবসতিপূর্ণ জনপদ হলেও তুলনামূলকভাবে উন্নয়নশীল ও উন্নত দেশগুলোর তুলনায় কোভিড সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার অনেক কম।  এটা সম্ভব হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুযোগ্য নেতৃত্ব, দক্ষতা ও দূরদর্শিতার ফলে।  আমি অবশ্যই আশাবাদ ব্যক্ত করি যে, বাংলাদেশসহ সারা বিশ্ব করোনজয়ী হবে।  আমরা স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যাব।
এর আগে মার্কিন রাষ্ট্রদূত ও তাঁর প্রতিনিধি দলকে স্বাগত জানিয়ে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, চট্টগ্রাম বিশ্বের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের প্রবেশ দ্বার।  এখানে রয়েছে বিশ্বের অন্যতম প্রধান প্রাকৃতিক বন্দর।  চট্টগ্রাম বন্দরকে কেন্দ্র করে রিজিওনাল কানেক্টিভিটি সম্পৃক্ততার সূত্রে ভারতের পূর্বাঞ্চল, ভূ-সীমান্তবর্তী দেশ নেপাল, ভুটানসহ মিয়ানমার হয়ে চীনের কুনমিং সিটি পর্যন্ত অর্থনৈতিক প্রাগ্রসরতা নতুনভাবে সংযোজিত হলে চট্টগ্রাম বিশ্ব অর্থনীতি ও বাণিজ্যের অগ্রগতি ও উন্নয়নের নাভিমূল হিসেবে প্রাণময় গতিময়তা পাবে।  তিনি আরো বলেন, বে-টার্মিনাল, মাতারবাড়ি বিদ্যুৎ প্রকল্প, মহেশখালী গভীর সমুদ্র বন্দর, চট্টগ্রাম বন্দর সম্প্রসারণ ও আধুনিকায়ন, কর্ণফুলী নদীর তলদেশে টানেল নির্মাণ, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত রেললাইন সম্প্রসারণ, চট্টগ্রাম নগরীতে আউটার রিং রোড নির্মাণ, মিরসরাই থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত মেরিন ড্রাইভ নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে নতুন নতুন পর্যটন স্পট, উপ-শহর এবং অর্থনৈতিক জোন স্থাপনের মধ্য দিয়ে বৃহত্তর চট্টগ্রাম শিল্পায়ন ও বহুমাত্রিক উন্নয়নে বিদেশী বিনিয়োগের উর্বর ভূমি হিসেবে পরিগণিত হতে যাচ্ছে।
এসময় উপস্থিত ছিলেন চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কাজী মুহাম্মদ মোজাম্মেল হক, ভারপ্রাপ্ত সচিব ও প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মফিদুল আলম, মেয়রের একান্ত সচিব মুহাম্মদ আবুল হাশেম, অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম মানিক।

ডিসি/এসআইকে/আরএআর