আমি ইয়াবা ব্যবসায়ী কী না প্রশাসনকে জিজ্ঞেস করুন : চসিক কাউন্সিলর লিটন

নগর প্রতিবেদক, দৈনিক চট্টগ্রাম >>>
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে নানান সমালোচনার মুখে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) কাউন্সিলর ও সদ্য নিযুক্ত প্যানেল মেয়র-১ আবদুস সবুর লিটন বলেছেন, ‘আমি ইয়াবা ব্যবসায়ী কিনা প্রশাসককে জিজ্ঞেস করুন।  দেশের প্রশাসন, পুলিশ-গোয়েন্দা সংস্থাগুলো ভালো করেই জানে আমি কী?’।
গতকাল সোমবার (২২ মার্চ) চসিকের ৬ষ্ঠ পরিষদের সভায় কাউন্সিলরদের গোপন ভোটের মাধ্যমে তিনি প্যানেল মেয়র- ১ এর দায়িত্ব পান।  তিনি চসিকের ২৫ নম্বর রামপুর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর।  প্যানেল মেয়র নির্বাচন এবং নিযুক্ত প্যানেল মেয়রদের নাম উল্লেখ না করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে সাংবাদিকসহ বিভিন্ন ব্যক্তি সমালোচনা করেন।  তারা দামি মোবাইল, শাড়ি-চুড়ি নগর টাকার বিনিময়ে ইয়াবা ব্যবসায়ীকে প্যানেল মেয়র করা হয়েছে মর্মে স্ট্যাটাস দেন।  তারই প্রেক্ষিতে একটি গণমাধ্যম থেকে চসিকের ১ নম্বর প্যানেল মেয়র আবদুস সবুর লিটনের বক্তব্য জানতে চাওয়া হয়।
জবাবে আবদুস সবুর লিটন বলেন, ‌‌‘ফেসবুকে যারা লিখতেছে, তারা পড়ন্ত সূর্যের দালাল। উদীয়মান সূর্যকে পূজা করে মানুষ, পড়ন্ত সূর্যকে করে না।  আমি ফেসবুক চালাইও না।  ফেসবুক কী, ফেসবুক কী রাষ্ট্রীয় সম্পদ?’  আরেক প্রশ্নের জবাবে লিটন বলেন, আরে গণমাধ্যম কর্মীরা রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে।  আমিও গণমাধ্যম একটা চালাই’।

চকরিয়াস্থ নিজের তামাক ক্ষেতে আবদুস সবুর লিটন।

তিনি বলেন, ‘আমি এতোদিন আওয়াজ করিনি, কারণ কাউন্সিলর ইলেকশন ছিল, আবার প্যানেল মেয়র ইলেকশন ছিল।  একটি মানহানি মামলা করতে আমাকে উপর থেকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।  আমি এখন ঢাকায়।  আমি নির্দেশটি পেয়েছি।  তাই আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমি মানহানি মামলা করার’।
উল্লেখ্য, গতকাল সোমবার (২২ মার্চ) চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের ৬ষ্ঠ পরিষদের দ্বিতীয় সভা অনুষ্ঠিত হয়।  এতে কাউন্সিলররা গোপন ভোটের মাধ্যমে আব্দুস সবুর লিটনকে ১ নম্বর প্যানেল মেয়র, ১৫ নম্বর বাগমনিরাম ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. গিয়াস উদ্দিনকে ৩ নম্বর প্যানেল মেয়র এবং সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর আফরোজা জহুরকে ২ নম্বর প্যানেল মেয়র নির্বাচিত করেন। 
প্যানেল মেয়র নির্বাচনের পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্যানেল মেয়রদের কারো নাম উল্লেখ না করে বলা হয়- দামি মোবাইল ফোন, দামি শাড়ি-চুড়ি, টাকা আর ইয়াবার কাছে প্যানেল মেয়রের পদটি বিক্রি হয়ে গেলো।
অন্যদিকে, আবদুস সবুর লিটনের অর্থ-সম্পদ নিয়েও নানান গুঞ্জন, আলোচনা-সমালোচনা প্রায়ই সংবাদমাধ্যমসহ বিভিন্ন স্থানে আলোচিত হয়। তার বিরুদ্ধে নানান সময় ইয়াবাসহ মাদক ব্যবসার অভিযোগ ছাড়াও নানান অপকর্ম করার অভিযোগ উঠেছে যা তিনি বরাবরই অস্বীকার করে আসছেন।  তিনি তামাকজাত ব্যবসার সাথে যুক্ত আছেন।  সর্বশেষ চসিক নির্বাচনে ইসিতে জমা দেয়া হলফনামায় লিটনের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী তার সাতটি ব্যবসার প্রথমটি সম্পর্কে বলা হয়েছে ‘তারা ট্রেডার্সে’র মাধ্যমে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের চাহিদা অনুযায়ী তামাক ও বৈধ মালামাল সরবরাহ করা হয়।  এছাড়া ‘তারা ইন্টারন্যাশনাল টোবাকো’ নামে আরও একটি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে সিগারেট প্রস্তুত ও বিপণন করেন তিনি।  এছাড়া ‘বিজয় ইন্টারন্যাশনাল টোবাকো’ নামে আরও একটি সিগারেট প্রস্তুত ও বিপণন কোম্পানির কাজ প্রক্রিয়াধীন আছে বলে হলফনামায় উল্লেখ করেছেন তিনি।  তার অন্যান্য ব্যবসাগুলো হলো তারা মাল্টিমিডিয়া, তারা পেপার টোন প্রিন্টিং প্রেস, তারা বেভারেজ লিমিটেড।

ডিসি/এসআইকে/এমআরএ