নগর যুবলীগের দুই পদে ১০৭ জনের আবেদন

বিশেষ প্রতিনিধি, দৈনিক চট্টগ্রাম >>>
আগামি ৩০ মে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ চট্টগ্রাম মহানগর শাখার সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে আগেই।  কেন্দ্রীয় নির্দেশনা পেয়ে ইতোমধ্যে সম্মেলন আয়োজন প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে সংগঠনের দায়িত্বপ্রাপ্তরা।  প্রায় ৯ বছর আগে ৯০ দিনের জন্য নগর যুবলীগের আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছিল।  সেই ৯০ দিনের কমিটির অধিকাংশই আর থাকতে চান না নগর যুবলীগে।  তারা সবাই নগর আওয়ামী লীগে পদ পেতে আগ্রহী।  ১০১ সদস্য বিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটির আহ্বায়ক মহিউদ্দিন বাচ্চু ও যুগ্ম আহ্বায়ক ফরিদ মাহমুদসহ কমিটির একাধিক সদস্য মূল দল আওয়ামী লীগের যেতে চান।
এদিকে নগর যুবলীগের সম্মেলনের তারিখ ঘোষণার পর থেকেই ব্যাপক তৎপরতা চালাচ্ছেন সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদের প্রার্থীরা।  তারা কেন্দ্রীয় যুবলীগ চেয়ারম্যান, সাধারণ সম্পাদক এবং চট্টগ্রাম বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের পাশাপাশি কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের দায়িত্বপ্রাপ্ত চট্টগ্রামের নেতা ও মন্ত্রী-এমপিসহ নগর আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের কাছে ধরনা দিচ্ছেন প্রতিদিনই।  দিনের অধিকাংশ সময়ই তারা ব্যয় করছেন তাদের কাছে গিয়ে।
নগর যুবলীগের পদপ্রত্যাশী বেশ কয়েকজন সাবেক ছাত্রনেতা জানান, ২০০৩ সালে সম্মেলনের মাধ্যমে নির্বাচিত সভাপতি চন্দন ধর ও সাধারণ সম্পাদক মশিউর রহমানের নেতৃত্বাধীন নগর যুবলীগের কমিটি বিলুপ্ত করে ২০১৩ সালের ৯ জুলাই আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়।  ১০১ সদস্যের কমিটির মেয়াদ ছিল ৯০ দিন।  এর মধ্যে সম্মেলন করে নিয়মিত কমিটি করার কথা বলা হলেও গত ৯ বছরেও কমিটি হয়নি।  নগরের ৪৩টি সাংগঠনিক ওয়ার্ডের মধ্যে কমিটি আছে মাত্র চারটিতে।  সেগুলো হচ্ছে উত্তর পতেঙ্গা, পতেঙ্গা, পাঠানটুলি ও শুলকবহর।  সাংগঠনিক ১৬ থানায় কোনো কমিটি হয়নি।  সংগঠনের নীতি নির্ধারক মহানগর আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা কমিটি গঠনে তৎপর না হওয়ার কারণে দীর্ঘ সময় ধরে আহ্বায়ক কমিটি দিয়ে চলছে নগর যুবলীগ।  আহ্বায়ক কমিটি ছাড়াও সাবেক কয়েকজন ছাত্রলীগ নেতা পদ-পদবী ছাড়াই নগর যুবলীগের ব্যানারে কেন্দ্র ঘোষিত বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে আসছেন।
কেন্দ্রীয় যুবলীগ সূত্রে জানা যায়, গত ২৬ মার্চ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে ২ থেকে ৫ এপ্রিল চট্টগ্রাম মহানগর সাংগঠনিক কমিটির জন্য সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক পদে আসতে আগ্রহী নেতাদের জীবনবৃত্তান্ত জমা দিতে বলা হয়।  বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে যুবলীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে নগর যুবলীগ সভাপতি পদের জন্য ৩৫ জন ও সাধারণ সম্পাদক পদ প্রত্যাশী ৭২ জনের আবেদন জমা পড়ে।  এসব আবেদন বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে যাচাই-বাছাই শেষ করেছেন দায়িত্বপ্রাপ্তরা।
এদিকে বর্তমানে নগর যুবলীগ আহ্বায়ক কমিটির ৫ জন আহ্বায়ক এবং যুগ্ম আহ্বায়কদের মধ্যে দিদারুল আলম দিদার ও মাহবুবুল হক সুমন ছাড়া অন্য তিনজন আর যুবলীগ করতে আগ্রহী নন।  তাই তারা সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক হওয়ার জন্য জীবনবৃত্তান্ত জমা দেননি।
নগর যুবলীগের সভাপতি পদে যাদের নাম শোনা যাচ্ছে তারা হলেন- নগর ছাত্রলীগ স্টিয়ারিং কমিটির সাবেক সদস্য দেবাশীষ পাল দেবু, কেন্দ্রীয় যুবলীগের সাবেক সদস্য দিদারুল আলম দিদার, ফিরিঙ্গী বাজার ওয়ার্ড কাউন্সিলর হাসান মুরাদ বিপ্লব, নগর যুবলীগের বর্তমান কমিটির কার্যনির্বাহী সদস্য নুরুল আনোয়ার, ওয়াসিম উদ্দিন, নগর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও সিডিএ’র বোর্ড মেম্বার এম আর আজিম, নগর ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ সালাউদ্দিন ও কেন্দ্রীয় যুবলীগের সাবেক সদস্য সুরঞ্জিৎ বড়ুয়া লাবু।
মহানগর যুবলীগের আহ্বায়ক মহিউদ্দীন বাচ্চু গণমাধ্যমকে জানান, আমাদের সম্মেলনের তারিখ নির্ধারণ করা হলেও স্থান এখনও নির্ধারণ করা হয়নি।  সম্মেলনের জন্য কোনো সাব কমিটি করা হয়নি।  সম্মেলন যাতে সুন্দর ও সৃশৃঙ্খলভাবে হয় সে লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি।

ডিসি/এসআইকে/সিসি