চট্টগ্রামে প্রধানমন্ত্রীর জনসভার প্রস্তুতি শেষ পর্যায়ে

নগর প্রতিবেদক, দৈনিক চট্টগ্রাম >>>
চট্টগ্রাম নগরের পলোগ্রাউন্ড মাঠে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৪ ডিসেম্বরের জনসভা সফল করতে চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগসহ জেলার শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের প্রস্তুতি প্রায় শেষ পর্যায়ে। থানা-উপজেলা, ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন থেকে শুরু করে সর্বত্র প্রচারণা শেষে এখন জনগণকে স্বতঃস্ফূর্তভাবে জনসভায় আনার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। পলোগ্রাউন্ড মাঠে দিনরাত সমানতালে চলছে মঞ্চ তৈরির কাজ।
আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশারফ হোসেনের নেতৃত্বে শীর্ষ নেতারা প্রায় প্রতিদিন মাঠ পরিদর্শন করছেন। খুঁটিনাটি দিকগুলো দেখে প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দিচ্ছেন। জনসভার জন্য এরই মধ্যে প্রস্তুত করা হচ্ছে নৌকার আদলে মঞ্চ। চট্টগ্রামের সাহাবুদ্দিন ডেকোরেটার্স মঞ্চটি তৈরি করছে।। ১৬০ ফুট দৈর্ঘ্যের মঞ্চ তৈরির সব অবকাঠামোর কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। মঞ্চে একসঙ্গে বসতে পারবেন দুইশ অতিথি।
আয়োজকরা জানিয়েছেন, জনসভার স্থান থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ প্রচারে পলোগ্রাউন্ড ও আশপাশ এলাকায় লাগানোর জন্য ঢাকা থেকে আসছে বিখ্যাত মাইক সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান কলরেডির ১৫০টি মাইক। মঞ্চের মাঝখানে ৮০ ফুটের এলইডি লাগানো হবে। প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ দেখার জন্য ভেতরে-বাইরে সাত জায়গায় বড় এলইডি লাগানো হবে।
জনসভা সফল করতে নেতাকর্মীদের পোস্টার-ব্যানার ও বিলবোর্ডে ছেয়ে গেছে নগরী। দীর্ঘদিন পর প্রধানমন্ত্রীকে বরণে চট্টগ্রামজুড়ে চলছে আয়োজন। জনসভার মাঠের ভেতরের দশগুণ (প্রায় ২০ লাখ) বাইরে লোকসমাগম করার কথা জানিয়েছেন ইঞ্জিনিয়ার মোশারফ হোসেন। ২০১২ সালের ২৮ মার্চ পলোগ্রাউন্ড মাঠে সর্বশেষ আওয়ামী লীগের জনসভায় ভাষণ দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ১০ বছর ৯ মাস পর একই মাঠে আবার ভাষণ দেবেন তিনি। এদিকে ২০১২ সালেও জনসভার মঞ্চ তৈরি করেছিল সাহাবউদ্দিন ডেকোরেটার্স।
ইঞ্জিনিয়ার মোশারফ হোসেন বলেন, এরই মধ্যে পলোগ্রাউন্ডের জনসভার প্রস্তুতি শেষ হয়েছে। আমাদের প্রত্যেক এমপি ও নেতা নিজ নিজ এলাকা থেকে লোকজন আনার জন্য প্রস্তুতি নিয়েছেন। মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ থেকে প্রচুর লোকজন আসবেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজ থেকেই চট্টগ্রামে জনসভায় আসার ইচ্ছে ব্যক্ত করেছেন। গত ১৪ বছর প্রধানমন্ত্রী চট্টগ্রামে প্রচুর উন্নয়ন করেছেন। এই উন্নয়নের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাতেই জনগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে জনসভায় আসবেন। এখন মাঠে মঞ্চের কাজ চলছে।
মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাণিজ্যিক রাজধানী হিসেবে চট্টগ্রামের উন্নয়নে সবসময় অগ্রাধিকার দিয়ে থাকেন। এরই মধ্যে দেশের একমাত্র বঙ্গবন্ধু টানেলের একপাশের কাজ শেষ হয়েছে। যা প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধন করেছেন। পাশাপাশি চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেললাইনের কাজ শেষ হতে যাচ্ছে। চট্টগ্রামে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে হচ্ছে। কালুরঘাটে কর্ণফুলী নদীতে আরেকটি সেতু করার পদক্ষেপ নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। আগামী ৪ ডিসেম্বর এসব উন্নয়নের কথা নিজমুখে চট্টগ্রামবাসীর সামনে তুলে ধরবেন তিনি।
আ জ ম নাছির বলেন, জনসভা সফল করতে আওয়ামীসহ অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলো ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করে যাচ্ছে। নগরীতে এখন সাজসাজ রব উঠেছে। আশাকরি স্মরণকালের সবচেয়ে বেশি লোক জমায়েত হবে পলোগ্রাউন্ডের জনসভায়। এ জন্য সব প্রস্তুতি আমরা সম্পন্ন করেছি। জনসভাস্থলও সাজানো হচ্ছে। নৌকার আদলে স্টেজ নির্মাণ করা হচ্ছে।
দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জনসভার মঞ্চ তৈরির কাজ চলছে দিনরাত। মঞ্চের কাজ অনেকটা এগিয়ে গেছে। মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণের নেতাদের তত্ত্বাবধানে সব প্রস্তুতি প্রায় শেষ। মোশাররফ ভাইয়ের নেতৃত্বে আমাদের সব সিনিয়র নেতা প্রায় প্রতিদিনই মাঠ পরির্দশন করছেন। খুঁটিনাটি দিকগুলো দেখছেন, প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দিচ্ছেন। কেন্দ্রীয় নেতারাও মনিটারিং করছেন।
মঞ্চ তৈরির কাজে নিয়োজিত সাহাবউদ্দিন ডেকোরেটার্সের স্বত্বাধিকারী হাজী মো. সাহাবউদ্দিন বলেন, প্রধানমন্ত্রীর জনসভার মঞ্চটি নৌকার আদলে তৈরি করা হচ্ছে। মঞ্চটির দৈর্ঘ্য হচ্ছে ১৬০ ফুট। এর মাঝখানে ৪০-৮০ ফুটের মধ্যে দুইশ অতিথি বসবেন। মঞ্চের উচ্চতা হবে সাত ফুট। এছাড়া মঞ্চের সামনে বীর মুক্তিযোদ্ধা, ভিআইপি ও নারীদের বসার জন্য পৃথক প্যান্ডেল তৈরি করা হচ্ছে।

ডিসি/এসআইকে/আরএআর