বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে ভারত সরকারের ভূমিকা অনস্বীকার্য : চসিক মেয়র

নগর প্রতিবেদক, দৈনিক চট্টগ্রাম >>>
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেছেন, বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের ভূমিকা অনস্বীকার্য। তাদের যে সহায়তা আমরা মুক্তিযুদ্ধের সময় পেয়েছি তার জন্য ভারতের প্রতি বাংলাদেশের কৃতজ্ঞতা কখনো ম্লান হবে না। তিনি বলেন, মুুক্তিযুদ্ধসহ সবকিছুতেই চট্টগ্রাম আগ্রগামী। বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা ঘোষণার পরপরই চট্টগ্রাম থেকে তৎকালীন ইপিআরের ক্যাপ্টেন রফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে প্রথম প্রতিরোধ যুদ্ধের সূচনা হয়। পরদিন কালুরঘাট স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠ করেন আওয়ামী লীগ নেতা এমএ হান্নান। স্বাধীনতার জন্য অনেক বড় বড় মনীষী ও রাজনীতিবিদ অনেক চেষ্টা করেও স্বাধীনতা এনে দিতে পারেনি। একমাত্র বঙ্গবন্ধুর পক্ষে এই কাজ করা সম্ভব হয়েছে। কারণ তিনি ছিলেন জনগণের নেতা। জনগণের মতামতের তিনি প্রতিফলন ঘটাতে পেরেছেন। সেই কারণেই বঙ্গবন্ধু হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি। মনে রাখতে হবে ইতিহাসের সন্তানদের কোনো দিন মৃত্যু হয় না। ইতিহাস তাদের অমর করে রাখে।
সোমবার (১৯ ডিসেম্বর) সকালে চট্টগ্রাম নগরের থিয়োটার ইনস্টিটিউট চট্টগ্রাম (টিআইসি) চত্বরে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে ১২০ বীর মুক্তিযোদ্ধাকে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ভারতীয় সহকারী হাইকমিশনার ডা. রাজীব রঞ্জন বলেন, ভারত-বাংলাদেশ বন্ধুপ্রতিম দেশ। বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল ভারত সরকার। ভারতের মিত্রবাহিনী সরাসরি যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে ছিল। তাদের যৌথ আত্মত্যাগে আজকের স্বাধীন বাংলাদেশ। বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে ভারত সরকারে আন্তরিক সর্ম্পক ছিল। বর্তমানেও দুই দেশের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্যসহ কূটনৈতিক সম্পর্ক অটুট রয়েছে।
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ শহীদুল আলমের সভাপতিত্বে ও সচিব খালেদ মাহমুদের সঞ্চানলনায় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সমাজকল্যাণ স্ট্যান্ডিং কমিটির সভাপতি কাউন্সিলর আবদুস সালাম মাসুম। বক্তব্য দেন প্যানেল মেয়র আফরোজা কালাম, কাউন্সিলর জহর লাল হাজারী, নগর আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি ও মুক্তিযোদ্ধা নঈম উদ্দিন আহম্মদ চৌধুরী, নগর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মোজাফফর আহম্মদ, জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার একেএম সরোয়ার কামাল, মুক্তিযোদ্ধা গবেষক ডা. মাহফুজুর রহমান, মুক্তিযোদ্ধা হারিস চৌধুরী, প্রধান শিক্ষা কর্মকর্তা লুৎফুন নাহার।
উপস্থিত ছিলেন কাউন্সিলর মো. নুরুল আমিন, গোলাম মো. জোবায়ের, নাজমুল হক ডিউক, কাজী নুরুল আমিন, শেখ জাফরুল হায়দার চৌধুরী, আবদুল মান্নান, আতাউল্লাহ চৌধুরী, শাহেদ ইকবাল বাবু, সংরিক্ষত কাউন্সিলর জেসমিন পারভিন জেসী, রুমকী সেনগুপ্ত, শাহীন আক্তার রোজী, চসিক প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মো. নজরুল ইসলাম, স্পেশাল ম্যাজিস্ট্রেট ও যুগ্ম জেলা জজ মনীষা মহাজন, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মারফা বেগম নেলী, মেয়রের একান্ত সচিব মো. আবুল হাসেম, শিক্ষা কর্মকর্তা উজালা রাণী চাকমা, রাজস্ব কর্মকর্তা সৈয়দ শামসুল তারবীজ, উপ-সচিব আশেক রসুল চৌধুরী টিপু।
অনুষ্ঠানে বীর মুক্তিযোদ্ধা নঈম উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী বলেন, মুক্তিযোদ্ধারা যে লক্ষ্যে ও উদ্দেশ্য নিয়ে স্বাধীনতাযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন, সেই লক্ষ্য বাস্তবায়নে কাজ করছে বর্তমান সরকার, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা। তাঁর নেতৃত্বে দেশ মুক্তিযোদ্ধের চেতনা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে।
ডা. মাহফুজুর রহমান বলেন, বাঙালি জাতীয়তাবাদের উন্মেষ ঘটে ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের লড়াইকে কেন্দ্র করে। অথচ এখনো সর্বস্তরে বাংলা ভাষা বাস্তবায়ন হয়নি। শহরের অনেক সাইন বোর্ডে এখনো ইংরেজি ভাষা দেখা যায়। সাইন বোর্ডে বাংলা ভাষা নিশ্চিত করতে তিনি মেয়রের সহায়তা অব্যাহত রখবেন বলে আশা প্রকাশ করেন।
নগর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মোজাফফর আহম্মদ বলেন, আমরা অর্থ চাই না, জমি চাই না, চাই শুধু সম্মান। বেঁচে থাকতেই মুক্তিযোদ্ধাদের যথাযথভাবে সম্মান দেওয়া হোক।
অনুষ্ঠানে সিটি মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী সংবর্ধনা পর্ব শেষে ভারতীয় সহকারী হাইকমিশনারসহ মুক্তিযোদ্ধাদের ক্রেস্ট উপহার দেন।

ডিসি/এসআইকে/আরএআর