খুনের মামলার আসামি ধরতে গিয়ে আসামির বাবাকে রক্ত দিলেন পুলিশ কর্মকর্তা

ধৃত আসামি এমদাদ।

নগর প্রতিবেদক >>>
পলাতক থাকা এক খুনের আসামিকে ধরতে গিয়ে মানবিকতার দৃষ্টান্ত হলেন এক পুলিশ কর্মকর্তা। যে আসামিকে ধরতে দীর্ঘ ৫ মাস ধরে চেষ্টা চালাচ্ছিলেন, সেই আসামির বাবাকেই দিলেন রক্ত। বর্তমান প্রেক্ষাপটে পুলিশের ভাবমূর্তি নিয়ে নানান আলোচনা থাকলেও আসামির বাবার অসুস্থতার কথা শুনে তাকে রক্ত দিয়ে পুলিশ যে মানবিক- তা আবারও প্রমাণ করলেন পুলিশ কর্মকর্তা বদিউল আলম। তিনি সিএমপির আকবরশাহ থানার সাব-ইন্সপেক্টর।
ঘটনার বিবরণে জানা যায়, চট্টগ্রাম মহানগরীর আকবরশাহ থানাধীন কৈবল্যধাম রেললাইন সংলগ্ন রশিদের কলোনিতে গত ২৫ অক্টোবর রাত দেড়টার দিকে গায়ে হলুদের গান-বাজনাকে কেন্দ্র করে নির্মমভাবে ছুরিকাঘাত করে জসিম উদ্দিন নামে ১৮ বছরের এক যুবককে হত্যা করা হয়। এই ঘটনায় যথারীতি মামলাও হয় সিএমপির আকবরশাহ্ থানায় (৩২(১০)১৯)।

রক্ত দেন পুলিশ কর্মকর্তা বদিউল আলম।

মামলার তদন্তের দায়িত্ব পান এসআই বদিউল আলম। হত্যাকা-ের ১৬ ঘণ্টার মধ্যে হত্যার রহস্য উদঘাটনসহ হত্যার সাথে সরাসরি জড়িত ৬ আসামির মধ্যে ৫ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। গ্রেফতারকৃত আসামিরা হলেন সাকিব, জীবন, নুরুদ্দিন, জাহিদ ও শহীদ। তারা সবাই উঠতি যুবক। এই হত্যাকা-ের ৩ নম্বর আসামি এমদাদ আত্মগোপনে চলে যায়। দীর্ঘ চার মাস ধরে গ্রেপ্তারের চেষ্টা করেও সম্ভব হচ্ছিল না। শনিবার (১৪ মার্চ) গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তদন্ত কর্মকর্তা এসআই বদিউল আলম জানতে পারেন পলাতক আসামি এমদাদ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে অবস্থান করছে। পরে দ্রুততার সাথে আকবরশাহ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমানের নেতৃত্বে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই বদিউল আলম, এসআই এমদাদ হোসেন চৌধুরী, এসআই মো. সায়েম, এএসআই নিখিল চন্দ্র দাস, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়োজিত নায়েক মোহাম্মদ আমির হোসেনের সহায়তায় আসামি এমদাদ হোসেনকে (২৩) গ্রেফতার করেন।
এসময় আসামি জসিম হত্যাকা-ে সরাসরি জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে এবং গত চার মাস ধরে গ্রেফতার এড়ানোর জন্য বিভিন্ন এলাকায় আত্মগোপনে ছিল বলে জানায়। এক পর্যায়ে আসামি এমদাদ জানায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার বাবাকে রক্ত দিতে হবে। সেই রক্ত দিতেই এমদাদ হাসপাতালে এসেছিল। এসময় আসামির বাবার অসুস্থতা এবং তার ও পজেটিভ রক্তের সাথে পুলিশ কর্মকর্তা এসআই বদিউল আলমের রক্তের গ্রুপ মিলে যাওয়ায় এসআই বদিউল আলম নিজেই আসামির আসামির বাবাকে রক্তদান করেন।

ডিসি/এসআইকে/এমএনইউ