শিক্ষা উপমন্ত্রীকে বাংলাদেশ কিন্ডারগার্টেন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ঐক্য পরিষদের স্মারকলিপি

ডেস্ক সংবাদ, দৈনিক চট্টগ্রাম >>>
শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করে করোনা মহামারিতে সংকটে পড়া ব্যক্তিমালিকানাধীন কিন্ডার গার্টেন স্কুল ও কলেজসমূহের পক্ষে স্মারকলিপি দিয়েছে বাংলাদেশ কিন্ডারগার্টেন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ঐক্য পরিষদের নেতারা।  গতকাল শুক্রবার (৩ জুলাই) পরিষদের কেন্দ্রীয় চেয়ারম্যান এম ইকবাল বাহার চৌধুরীর নেতৃত্বে সাক্ষাতের সময় শিক্ষা উপমন্ত্রীর কাছে করোনা ভাইরাসের মহামারি পরিস্থিতিতে কিন্ডারগার্টেনগুলোর নানা দুর্দশার কথা তুলে ধরেন শিক্ষক নেতারা।
এসময় শিক্ষা উপমন্ত্রী বলেন, বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে আপনাদের ব্যাপারে শুনেছি, এখন আপনারা আসাতে প্রকৃত দূরবস্থাটা জানতে পারলাম।  শিক্ষা উপমন্ত্রী শিক্ষকদের অসহায়ত্বের কথা শুনে সমবেদনা প্রকাশ করে বলেন, শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির সঙ্গে শিক্ষকদের দূরবস্থা নিয়ে আলাপ করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে জানানো হবে।  এ বিষয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেনের সঙ্গেও কথা বলবেন বলে আশ্বস্থ করেন তিনি।
সংগঠনের কেন্দ্রীয় চেয়ারম্যান এম ইকবাল বাহার চৌধুরী বলেন, আজ করোনা মহামারিতে কিন্ডারগার্টেন তথা ব্যক্তি মালিকানাধীন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো সবচেয়ে বেশী ক্ষতিগ্রস্ত।  সকলেই জানেন আমাদের এইসব প্রতিষ্ঠানগুলো ৯৯% ভাড়া বাড়িতে প্রতিষ্ঠিত ও পরিচালিত এবং শিক্ষার্থীদের মাসিক টিউশন ফি’র উপর সম্পূর্ণভাবে নির্ভরশীল।  গত ১৭ মার্চ থেকে সরকারি ঘোষণা মতে আমাদের প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ হয়ে যাওয়ায় শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টিউশন ফি আদায় করতে না পারায় গত মার্চ থেকে আমরা প্রতিষ্ঠানের গ্যাস, বাণিজ্যিকহারে বিদ্যুৎ, পানির বিলসহ কোনো কিছুই পরিশোধ করতে পারিনি।  বাড়ি ভাড়া, শিক্ষক-শিক্ষিকাবৃন্দের মাসিক বেতন পরিশোধ করতে পারিনি বিধায় আমাদের ১০ লক্ষ শিক্ষক আজ মানবেতর জীবন যাপন করছে।  বাড়ির মালিকদের বাড়ি ভাড়া দেয়ার অব্যাহত চাপে ৬০ হাজার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরিচালকবৃন্দ আজ দিশাহারা হয়ে অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।  অনেকেই তাদের প্রিয় প্রতিষ্ঠানটি বিক্রি করার জন্য নোটিশ দিয়েছেন।  অনেকেই প্রতিষ্ঠানের আসবাবপত্র বিক্রি করছেন।  খবর এসেছে বাড়ির মালিকের ভাড়ার চাপে অনেকেই তাদের প্রিয় প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ করে দিয়েছেন।  শিক্ষকদের আয়ের আরেকটি উৎস প্রাইভেট টিউশনিও বন্ধ থাকায়, শিক্ষকরা আত্মমর্যাদার কারনে লাইণে দাঁড়িয়ে ত্রাণ নিতে না পারায়, কাউকে বলতে ও ক্ষুধার যন্ত্রণা সইতে না পেরে অনেক শিক্ষক বাধ্য হয়ে জীবন-জীবিকার তাগিদে রিক্সা চালাচ্ছে, রাজমিস্ত্রীর সাথে শ্রমিকের কাজ করছে, সবজি বিক্রি করছে, চা বিক্রি করছেন।  অনেকে নৌকা বাইছেন, দিনমজুরির কাজ করছেন।  শিক্ষক সমাজের জন্য এটা অত্যন্ত লজ্জা, অসম্মান ও অমর্যাদাকর।  এই সব পরিস্থিতি আঁচ করতে পেরে সর্বপ্রথম আমিই মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নিকট একটি আবেদন করি।  এরপর ঐক্য পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির পক্ষ থেকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে গিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করি, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি সাগর রুনি মিলনায়তনে সাংবাদিক সম্মেলন করি, ২ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাননীয় শিক্ষা মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, উপমন্ত্রী, মেয়র, শিক্ষা সচিব, ২ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, সকল বিভাগের বিভাগীয় কমিশনার, সকল জেলা প্রশাসক, ইউএনও মহোদয়বৃন্দকে স্মারকলিপি প্রদান করে যে কোনো ধরনের আর্থিক সহায়তা কামনা করেছি।
ইকবাল বাহার বলেন, আমরা এখনো আশাবাদী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাদের এই দূরবস্থার কথা বিবেচনা করে শিক্ষকের মর্যাদা রক্ষায় আমাদেরকে আর্থিক সহায়তা করবেন।
প্রতিমন্ত্রীর সাথে সাক্ষাৎ ও স্মারকলিপি দেয়ার সময় আরো উপস্থিত ছিলেন ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় নেতা ও কারা পরিদর্শক মো. আজিজুর রহমান আজিজ, পরিষদের কেন্দ্রীয় মহাসচিব মো. সাফায়েত হোসেন, মো. আলতাফ হোসেন, মো. আবু ইউনুচ, মো. মাহাবুবুর রহমান দুর্জয়, ক্যাপ্টেন মো. হাসান প্রমুখ।

ডিসি/এসআইকে/এসএজে