ঝুঁকি নিয়ে দায়িত্ব পালনকারী সাংবাদিকদের ন্যায্য পাওনা থেকে বঞ্চিত করা কাম্য নয় : তথ্যমন্ত্রী

নগর প্রতিবেদক, দৈনিক চট্টগ্রাম >>>
চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়ন (সিইউজে) নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেছেন সরকারের তথ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।  এসময় সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ মন্ত্রীকে সংবাদকর্মীদের প্রতি সম্পাদকদের বঞ্চনার বিবরণসহ বিভিন্ন দাবি-দাওয়া সম্বলিত একটি স্মারকলিপি তুলে দেয়া হয়।
সোমবার (৩ আগস্ট) চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজ মিলনায়তনে এই মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।  চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মোহাম্মদ আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন সাধারণ সম্পাদক ম. শামসুল ইসলাম।  উপস্থিত ছিলেন সিইউজের সিনিয়র সহ সভাপতি রতন কান্তি দেবাশীষ, সহ সভাপতি অনিন্দ্য টিটো, সাংগঠনিক সম্পাদক ইফতেখারুল ইসলাম, নির্বাহী সদস্য মুহাম্মদ মহররম হোসাইন, প্রতিনিধি ইউনিট প্রধান সাইদুল ইসলাম, টিভি ইউনিট প্রধান মাসুদুল হক, দৈনিক পূর্বদেশ ডেপুটি ইউনিট প্রধান সাইমন চুমুক প্রমুখ।
এসময় তথ্যমন্ত্রী বলেন, সাংবাদিকরা করোনাকালে সম্মুখযোদ্ধা হিসেবে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মাঠে ময়দানে কাজ করছেন।  তাদের ন্যায়সঙ্গত পাওনা থেকে বঞ্চিত করা মোটেই কাম্য নয়।  সেই ঝুঁকি নেয়ার বিষয়টি মূল্যায়ন করা দরকার।  তিনি বলেন, সরকার করোনার সংকটকালে সাংবাদিকদের প্রণোদনা দিয়েছে।  করোনায় মৃত্যুবরণকারি সাংবাদিক পরিবারকে ৩ লাখ টাকা করে অনুদান দিয়েছে।  এ ধরনের প্রণোদনা ও অনুদান ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে।  তথ্যমন্ত্রী বলেন, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা সাংবাদিক বান্ধব।  তিনি বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট গঠন করাসহ সাংবাদিকদের কল্যাণে বহু কাজ করেছেন।  তা ভবিষ্যতেও করে যাবেন।
তিনি বলেন, করোনাকালে আমি পত্রিকা মালিকদের বার বার অনুরোধ জানিয়েছিলাম যাতে বেতন ভাতা নিয়মিতভাবে পরিশোধ করেন।  কিন্তু কিছু কিছু পত্রিকা মালিক পরিশোধ করলেও অনেকে তা পরিশোধ করেনি যা দুঃখজনক।  তিনি বলেন, সংবাদপত্র রাষ্ট্রের চতুর্থস্তম্ভ।  সংবাদপত্রকে টিকিয়ে রাখতে সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টা দরকার।  সাংবাদিকদের নিয়মিত বেতন ভাতা পরিশোধ না করলে তাদের মনোবল ভেঙ্গে যায়।  তাদের মনোবল টিকিয়ে রাখতে না পারলে কর্মপরিবেশ থাকবে না।  আমি মালিকদের আবারো অনুরোধ করব যাতে সাংবাদিকদের দেনা পাওনা নিয়মিত পরিশোধ করেন।
স্মারকলিপি গ্রহণকালে মন্ত্রী বলেন, সাংবাদিকদের যৌক্তিক দাবি দাওয়া নিয়ে আমি মালিক পক্ষের সঙ্গে কথা বলব।  ন্যায্য দাবি-দাওয়াগুলো যাতে মেনে নেন সেজন্য অনুরোধ জানাব।
মত বিনিময়কালে সিইউজে নেতৃবৃন্দ বলেন, চট্টগ্রামে কর্মরত সাংবাদিকরা এ বৈশ্বিক মহামারীতেও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তাদের পেশাগত দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন।  কিন্তু এসব সাংবাদিক-কর্মচারী দীর্ঘদিন ধরে তাদের ন্যায্য পাওনা থেকে বঞ্চিত।  বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে সরকার ঘোষিত ওয়েজ বোর্ড রোয়েদাদের বিভিন্ন ফ্রিঞ্চ বেনিফিটসহ অন্যান্য সুযোগ থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে বেতন-ভাতা বকেয়া রাখা হয়েছে কোনো কোনো প্রতিষ্ঠানে।  দেয়া হচ্ছে না নিয়মিত বার্ষিক ইনক্রিমেন্ট।  গত ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহার সময়ও পূর্ণ বোনাস থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে সাংবাদিক কর্মচারীদের।  সাংবাদিকদের ন্যায় সঙ্গত পাওনার দাবিতে সাংবাদিক ইউনিয়নের বিভিন্ন কর্মসূচী পালনের কথা উল্লেখ করে নেতৃবৃন্দ এ বিষয়ে তথ্যমন্ত্রীর সহযোগিতা কামনা করেন।
মতবিনিময়কালে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, অনেকে আশংকা প্রকাশ করেছিলেন করোনা মহামারিতে লাখ লাখ মানুষ মারা যাবে।  কিন্তু তাদের সে আশংকা মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে।  প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ট নেতৃত্বের কারণেই তা হয়েছে।  উন্নত দেশ এমনকি পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্রগুলোর চাইতেও বাংলাদেশে মৃত্যু হার অনেক কম।
তিনি বলেন, কেউ কেউ ঘরে বসে লম্বা লম্বা কথা বলেন, করোনাকালে একদিনের জন্যেও তারা ঘর থেকে বের হননি।  আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা প্রত্যেকেই মাঠে কাজ করেছেন।  কাজ করতে গিয়ে আক্রান্ত হয়েছেন, অনেকে মারাও গিয়েছেন।

ডিসি/এসআইকে/আইএস