বঙ্গবন্ধু চেয়ার : চবির সাবেক ভিসি ইফতেখারের নিয়োগ বাতিল

দৈনিক চট্টগ্রাম ডেস্ক >>>
বিধিলঙ্ঘন করে ‘বঙ্গবন্ধু চেয়ার’ পদ দখল করা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরীর নিয়োগ বাতিল করেছে বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট।  গত শুক্রবার চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে সিন্ডিকেট সদস্য মোহাম্মদ নাসিম হাসান জানিয়েছেন।
পাশাপাশি বঙ্গবন্ধু চেয়ার পদে নিয়োগের জন্য ‘বঙ্গবন্ধু চেয়ার নির্বাহী কমিটিতে’ বর্ধিত নতুন তিন সদস্য অন্তর্ভুক্ত করে এটাকে আট সদস্য বিশিষ্ট কমিটি করা হয়।  কমিটির নতুন সদস্যরা হলেন সমাজবিজ্ঞানী অনুপম সেন, শিক্ষাবিদ আলমগীর মোহাম্মদ সিরাজুদ্দীন এবং কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন।  কমিটি যাচাই-বাছাই করে বঙ্গবন্ধু চেয়ার পদে যোগ্য ব্যক্তির নাম মনোনয়ন করবেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের দুজন সিন্ডিকেট সদস্য বলেন, নীতিমালার তোয়াক্কা না করে সাবেক উপচার্য বঙ্গবন্ধু চেয়ারে নিজেই মনোনীত হন।  বিষয়টি নিয়ে শুরুতেই বির্তক সৃষ্টি হয়।  বঙ্গবন্ধু চেয়ারে গবেষণার জন্য নীতিমালায় যে সকল শর্ত ছিল সেগুলোও মানা হয়নি।  তাই ৫২৬ তম সিন্ডিকেট সভায় সাবেক উপাচার্যের নিয়োগ কনফার্ম না করে বাতিল করা হয়েছে’।
গত বছরের ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু চেয়ার (গবেষণাকেন্দ্র) পদে গবেষক হিসেবে দায়িত্ব নেন তৎকালীন উপাচার্য ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী।  সিন্ডিকেট সভা ও একাডেমিক কমিটির মাধ্যমে নিয়োগের বিষয়টি অনুমোদন না নেওয়ায় উপাচার্যের এই পদে বসা নিয়ে ওই সময় বিতর্ক সৃষ্ট হয়।
চলতি বছরের ১৮ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) কাছে বঙ্গবন্ধু চেয়ার নিয়ে বিতর্ক বন্ধে তদন্ত কমিটি গঠন করার আবেদন জানান ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী।  এর পরিপ্রেক্ষিতে ১৬ জুলাই তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে ইউজিসি।  কমিটিতে আহ্বায়ক করা হয় ইউজিসির সদস্য অধ্যাপক দিল আফরোজ বেগমকে।  ইউজিসি এখনো তদন্ত করছে।
গত বছরের ৩ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু চেয়ার নির্বাহী কমিটির প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হয়।  সভায় ওই পদের জন্য তৈরি নীতিমালার অনুমোদন করা হয়।  একই দিন সাবেক উপাচার্য ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরীকে বঙ্গবন্ধু চেয়ার পদে নিয়োগ দেওয়ার জন্য কমিটি সুপারিশ করে।  কমিটির তৈরি নীতিমালার ৪-এর খ-তে বলা হয়, ‘নিয়োগ দেওয়ার জন্য কমিটির সুপারিশ সিন্ডিকেটে পেশ করা হবে এবং সিন্ডিকেটের অনুমোদনক্রমে চুক্তি ভিত্তিতে উক্ত পদে নিয়োগ প্রদান করা হবে’।
সেই নীতিমালা ভঙ্গ করে সাবেক উপাচার্য এ পদে দায়িত্ব নিয়েছেন বলে সে সময় অভিযোগ করেন বর্তমান উপাচার্য শিরীণ আখতারসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যেষ্ঠ শিক্ষকেরা।
সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্তের বিষয়ে অধ্যাপক ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু চেয়ার নিয়ে বিতর্ক আমার কাছে অসঙ্গত মনে হয়েছে।  এ বিষয়ে আমি প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছি।  বঙ্গবন্ধু চেয়ারের বিষয়টি ইউজিসি তদন্ত করছে।  তাই এখনই এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে পারব না’। 
বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সচিব ও ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এস এম মনিরুল হাসানও এ বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি।
উপাচার্য শিরীণ আখতারকে ফোন করলেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

ডিসি/এসআইকে/এসএজে