সমুদ্র সম্পদ ব্যবহার করে অর্থনীতিকে গতিশীল করার উদ্যোগ নিয়েছি: প্রধানমন্ত্রী

দৈনিক চট্টগ্রাম ডেস্ক >>>
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, প্রতিবেশী দেশ ভারত ও মিয়ানমারের সঙ্গে সুসম্পর্ক রেখেই আমরা সমুদ্রসীমা অর্জন করেছি।  আমরা সমুদ্র সম্পদ ব্যবহার করে অর্থনীতিকে মজবুত, গতিশীল করতে উদ্যোগ নিয়েছি।
রবিবার (৬ মার্চ) মেরিন ফিশারিজ একাডেমি চট্টগ্রামের ৪১তম ব্যাচের মুজিববর্ষের পাসিং আউট প্যারেড অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে শক্তিশালীভাবে এগিয়ে যাচ্ছি।  বঙ্গোসাগরে বিশাল সম্পদ রয়েছে। এ সম্পদ আহরণ করতে হবে।  মৎস্য সম্পদ আহরণে গবেষণা ও উদ্যোগ নিয়েছি।  এখনো আমাদের আরও অনেক কাজ করতে হবে।  বঙ্গবন্ধু ৭ মার্চের ভাষণে স্পষ্ট ভাবে বলেছিলেন, দাবায়া রাখতে পারবে না।  এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।  তিনি স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন।  দেশকে উন্নত সমৃদ্ধ করার জন্য শুধু স্বপ্ন নয়, পথও দেখিয়ে গেছেন বঙ্গবন্ধু।
মেরিন ফিশারিজ একাডেমির ৪১তম ব্যাচের ক্যাডেটদের অভিনন্দন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ প্রতিষ্ঠান সগৌরবে বিস্তৃতি লাভ করেছে।  ৭৫ এর পর এ প্রতিষ্ঠানে নজর দেওয়া হয়নি। জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছিল।  আমরা বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ করে দিয়েছি।  এখানে নারীরাও ভর্তি হচ্ছে।  ক্যাডেটরা যাতে বিদেশি সমুদ্রগামী জাহাজে চাকরি পায় সে লক্ষ্যে কোর্স চালু করা হয়েছে।  চার বছরের ডিগ্রি দেওয়া হচ্ছে।  উচ্চতর ডিগ্রি লাভের সুযোগ রয়েছে।  এখানে সিমুলেটর স্থাপন করা হয়েছে।  ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছি বলেই পাসিং আউটে যোগ দিতে পারছি।  অর্জিত জ্ঞান তোমাদের কর্মক্ষেত্রে সহায়ক ভূমিকা রাখবে।  কঠোর পরিশ্রম, মূল্যবোধ, দেশপ্রেম কর্মক্ষেত্রে সাফল্যের মূলমন্ত্র।  তোমরা সবসময় সাহসের সঙ্গে কাজ করবে।  তোমরাই হবে সমৃদ্ধ বাংলাদেশের কর্ণধার।
অনুষ্ঠানে ক্যাডেটদের উদ্দেশে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অডিও ক্লিপ শোনানো হয়।  সভাপতিত্ব করেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম।  স্বাগত বক্তব্য দেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মুহাম্মদ ইয়ামিন চৌধুরী।
এ বছর একাডেমির ৪১তম ব্যাচে নটিক্যাল বিভাগে ৩৩ জন, মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে ৩১ জন ও মেরিন ফিশারিজ বিভাগে ২০ জন ক্যাডেটসহ মোট ৮৪ জন নারী ও পুরুষ ক্যাডেট পাস আউট হন।
প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম পদক বিতরণ করেন।  করোনাকালেও মেরিন ফিশারিজ একাডেমিতে সেশনজট হয়নি উল্লেখ করে মৎস্যমন্ত্রী ক্যাডেটদের উদ্দেশে বলেন, বাঙালিত্ব, মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে বিসর্জন দেওয়া যাবে না।  স্বাধীনতা না পেলে আপনারা ক্যাডেট হতে পারতেন না।  আপনারা বিদেশে বাংলাদেশের দূত।  আপনি বিশ্বের যেকোনো দেশে জাহাজে বাংলাদেশের প্রতিনিধি।  গর্ববোধ করবেন, আমি বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশের নাগরিক।
এ বছর সব বিষয়ে সর্বোচ্চ মান অর্জনকারী নটিক্যাল স্টাডিজ বিভাগের এইচএম বেনুজির আহমদ বেস্ট অল রাউন্ডার গোল্ড মেডেল পেয়েছেন।  তিন বিভাগে সর্বোচ্চ মান অর্জনকারী নটিক্যাল বিভাগের আসিফ আলম দর্পন, মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের মো. আরিফুল ইসলাম ও মেরিন ফিশারিজে আবদুর রহমান আল ওয়াদুদ বেস্ট ইন প্রফেশনাল ট্রেনিং সিলভার মেডেল পেয়েছেন।  নারী ক্যাডেটদের মধ্যে মেরিন ফিশারিজ বিভাগের রুপায়দা রহমান বেস্ট ফিমেইল ইন প্রফেশনাল ট্রেনিং সিলভার মেডেল পেয়েছেন।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সিটি মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী, নৌবাহিনী, কোস্টগার্ড, নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়, অধিদফতর, মার্কেন্টাইল মেরিন ডিপার্টমেন্ট, বিএসসি, শিপিং এজেন্ট প্রতিনিধি, আমন্ত্রিত অতিথি, ক্যাডেটদের অভিভাবকেরা।

ডিসি/এসআইকে/আরএআর