উত্তর জেলা যুবলীগে পদ পেতে দৌড়ঝাঁপে ব্যস্ত নেতারা

দৈনিক চট্টগ্রাম ডেস্ক >>>
ব্যাপক অপেক্ষা, জল্পনা-কল্পনা শেষে আগামি ২৯ মে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা যুবলীগের সম্মেলন।  দীর্ঘ দুই যুগ পর হতে যাওয়া এই সম্মেলনের পর নতুন কমিটিতে পদ পেতে দৌড়ঝাঁপে ব্যস্ত পদপ্রত্যাশিরা।  সংগঠনটির নেতা-কর্মীদের মাঝে স্বভাবতই দেখা যাচ্ছে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা।  তারিখ ঘোষণার পর থেকে শীর্ষ পদ নিজেদের দখলে রাখতে নেতারা যে যার মতো তদবির করে যাচ্ছেন।  স্থানীয় থেকে শুরু করে জেলা-নগর-বিভাগীয় এবং কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে ধর্ণা দিচ্ছেন তারা।  গত ২৬ মার্চ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে সাংগঠনিক কমিটির জন্য সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক পদে আসতে আগ্রহী নেতাদের জীবনবৃত্তান্ত জমা দিতে বলা হয়।  এতে সভাপতি পদের জন্য ৯ জন ও সাধারণ সম্পাদক পদ প্রত্যাশী ২২ জনের আবেদন জমা পড়ে।  এসব আবেদন বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে যাচাই-বাছাই শেষ করেছেন দায়িত্বপ্রাপ্তরা।  গত ১০ মে আওয়ামী যুবলীগের দফতর সম্পাদক মো. মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা শাখার সাংগঠনিক কার্যক্রম গতিশীল ও শক্তিশালী করার লক্ষ্যে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ব্যতীত অন্যান্য পদ-প্রত্যাশীদের জীবনবৃত্তান্ত আহ্বান করা হয়।  আগামি ১৪ মে থেকে ১৬ মে পর্যন্ত জীবনবৃত্তান্ত জমা নেওয়া হবে।
ইতোমধ্যে কেন্দ্র থেকে বলা হয়েছে যারা প্রকৃত যোগ্য এবং দলের নিবেদিত কর্মী তারাই পদ পাবেন।  সেক্ষেত্রে সাংগঠনিক দক্ষতা এবং দলের প্রতি নিবেদিতরাই পদে আসবেন।  বিতর্কিতরা কোনোভাবেই যেন পদে আসতে না পারে, সে বিষয়ে সজাগ রয়েছে কেন্দ্রীয় কমিটি।
প্রায় ১৯ বছর আগে উত্তর জেলা যুবলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হয়েছিল।  ৭২ সদস্যবিশিষ্ট মেয়াদোত্তীর্ণ এই কমিটির সভাপতি এস এম আল মামুন ইতোমধ্যে চলে গেছেন মূলদল আওয়ামী লীগে।  বর্তমানে তিনি সীতাকুণ্ড উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা চেয়ারম্যান।  এছাড়াও কমিটিতে থাকা সাতজন সহ-সভাপতিও চলে গেছেন মূল দলে।  আবার কমিটির একাধিক সদস্য এখন যুবলীগে থাকতে চান না বলে জানা গেছে।  তারা সবাই জেলা ও উপজেলা আওয়ামী লীগের কমিটিতে পদপ্রত্যাশী।
তৎকালীন যুবলীগ চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর কবির নানক ও সাধারণ সম্পাদক মির্জা আজম ২০০৩ সালের ১৮ ডিসেম্বর সৈয়দ মফিজ উদ্দীন আহম্মদকে সভাপতি ও এস এম শফিউল আজমকে সাধারণ সম্পাদক করে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করেন।  এর মধ্যে সম্মেলন করে নিয়মিত কমিটি করার কথা বলা হলেও গত ১৯ বছরেও কমিটি হয়নি।  ব্যক্তিগত কারণে সভাপতি সৈয়দ মফিজ উদ্দীন আহম্মদ পদত্যাগ করলে কয়েক বছর ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন সহ-সভাপতি জাফর আলম।  ২০১৩ সালের দিকে ওমর ফারুক যুবলীগের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হলে সহ-সভাপতি এস এম আল মামুনকে সভাপতি ও সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এস এম রাশেদুল আলমকে সাধারণ সম্পাদক করে পুরাতন কমিটি বহাল রাখা হয়।
উত্তর জেলা যুবলীগের সভাপতি পদে যাদের নাম শোনা যাচ্ছে তারা হলেন- বর্তমান সাধারণ সম্পাদক ও হাটহাজারী উপজেলা চেয়ারম্যান এস এম রাশেদুল আলম, সাংগঠনিক সম্পাদক মুজিবুর রহমান স্বপন, উত্তর জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি রাজিবুল আহসান সুমন, নুরুল মোস্তফা মানিক, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সম্পাদক ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি নাছির হায়দার বাবুল।
সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থী হিসেবে যাদের নাম শোনা যাচ্ছে তারা হলেন- চবি ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জয়নাল আবেদীন ,উত্তর জেলা যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সন্দ্বীপ মাইটভাঙ্গা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. মিজানুর রহমান মিজান, উত্তর জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. আবু তৈয়ব, এস এম আল নোমান, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সদস্য ও সিটি কলেজের সাবেক ভিপি রাশেদ খান মেনন, রাঙ্গুনিয়ার সরফভাটা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শেখ ফরিদ, রাঙ্গুনিয়া উপজেলা যুবলীগের সভাপতি শামসুদ দোহা সিকদার আরজু, চবি ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এরশাদ হোসেন, চবি ছাত্রলীগের সাবেক ভারপ্রা্প্ত সভাপতি আবুল মনসুর জামশেদ, চবি ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এম এ খালেদ চৌধুরী ও উত্তর ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মনজুর আলম প্রমুখ।
উত্তর জেলা যুবলীগের সভাপতি পদপ্রত্যাশীদের মধ্যে রয়েছেন উত্তর জেলা যুবলীগের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক ও হাটহাজারী উপজেলা চেয়ারম্যান এস এম রাশেদুল আলম, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি রাজিবুল আহসান সুমন, সাধারণ সম্পাদক পদপ্রত্যাশী চবি ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক জয়নাল আবেদীন।

ডিসি/এসআইকে/আরএআর