নৌকাবিহীন নির্বাচন পটিয়ায়

দক্ষিণ চট্টগ্রাম প্রতিনিধি, দৈনিক চট্টগ্রাম >>>
সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের এক রায়ে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মামুনুর রশীদ রাসেলের প্রার্থিতা বাতিল হয়ে গেছে।  ফলে চট্টগ্রামের পটিয়ার ছনহরা ইউনিয়নে নৌকার প্রার্থী ছাড়াই অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে উপ-নির্বাচন।  বুধবার (১৫ জুন) এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
সোমবার (১৩ জুন) দুপুরে বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী, বিচারপতি ওবায়দুল হাসান, বিচারপতি এম এনায়েতুর রহিমের সমন্বয়ে গঠিত আপিল বেঞ্চ এক আদেশে মামুনুর রশীদ রাসেলের প্রার্থিতা বাতিল করে দেন।
 নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা যায়, নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী ছিলেন মামুনুর রশিদ রাসেল।  রাসেলের প্রার্থিতা বাতিল হওয়ায় বর্তমানে তিন স্বতন্ত্র প্রার্থী- সাবেক চেয়ারম্যান আবদুর রশিদ দৌলতী, মো. জাহেদুল হক ও সাহাব উদ্দিন নিবার্চনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।  এর আগের নির্বাচনে আবদুর রশিদ দৌলতি ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী ছিলেন।
গত ১৭ মে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মামুনুর রশিদ রাসেল মনোনয়নপত্র দাখিল করেন।  পরে গত ১৯ মে যাচাই-বাছাইয়ে মামুনুর রশিদের ঋণ খেলাপি হওয়ার কারণে মনোনয়ন বাতিল করেন রিটার্নিং অফিসার।  এরপর ২২ মে চট্টগ্রাম জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কাছে আপিল করলেও শুনানিতে রিটার্নিং অফিসারের আদেশ বহাল রাখেন।  এ আদেশের বিরুদ্ধে রাসেল হাইকোর্টে একটি রিট পিটিশন করেন।
গত ২৫ মে রিট পিটিশনের শুনানি শেষে হাইকোর্ট রাসেলের মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা করলে প্রার্থিতা ফিরে পান তিনি।  পরে তার প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী আবদুর রশিদ দৌলতী হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে সুপ্রীম কোর্টের চেম্বার জজ আদালতে আপিল করেন।  গত ২৯ মে শুনানি শেষে হাইকোর্টের আদেশ ৬ জুন পর্যন্ত স্থগিত করেন।  পরবর্তী সময়ে ৬ জুন শুনানি না হলে আগের স্থগিতাদেশ ১৩ জুন শুনানি পর্যন্ত বর্ধিত হয়।  ১৩ জুন সোমবার আপিল শুনানি শেষে তার প্রার্থিতা বাতিলের আদেশ বহাল রাখেন চেম্বার জজ আদালত।
ওই সময় বাদী পক্ষের আইনজীবী আলী আজম বলেন, চেম্বার জজ আদালতের রায়ের মাধ্যমে রাসেলের নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সুযোগ নেই।
২০২১ সালের ২৬ ডিসেম্বর পটিয়া উপজেলার ১৭ ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।  এতে ছনহরায় ভোটকেন্দ্র দখল করে জোরপূর্বক ভোট নেওয়াসহ বিভিন্ন অভিযোগে দুটি কেন্দ্রের ভোট বাতিল হয়।  পরবর্তী সময়ে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী আবদুর রশিদ দৌলতী আরও তিনটি ভোটকেন্দ্রে কারচুপির অভিযোগ তুলে নির্বাচন কমিশনে একটি লিখিত অভিযোগ করেন।   অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তদন্ত টিম এর সত্যতা পেয়েছে এবং আবদুর রশিদ দৌলতী উচ্চ আদালতে একটি রিট মামলা করেন।
গত ৭ ফেব্রুয়ারি স্থগিত দুটি ভোট কেন্দ্রের নির্বাচন সম্পন্ন করা হয়।  নির্বাচনে নৌকার প্রার্থী মুক্তিযোদ্ধা শামসুল আলম বিজয়ী হলেও স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুর রশিদ দৌলতী ফলাফল প্রত্যাখ্যান করে উচ্চ আদালতে শরণাপন্ন হয়।  ওই মামলায় উচ্চ আদালত গেজেট স্থগিত করেন।
এদিকে, ছনহরা ইউনিয়নের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা শামসুল আলম নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পর গত ২৫ মার্চ মারা যান।  যে কারণে চেয়ারম্যান পদে উপ-নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন।  উপ-নির্বাচনে তার ছেলে মামুনুর রশিদ রাসেল আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পান।

ডিসি/এসআইকে/এসইউ