মুজিব শতবর্ষ : ‘শত বঙ্গবন্ধু ম্যুরাল’ নজীর স্থাপিত হতে যাচ্ছে রাউজানে

রাউজান প্রতিনিধি >>>
প্রথমবারের মতো সারাদেশের মধ্যে নজীর স্থাপন করতে যাচ্ছে উত্তর চট্টগ্রামের আলোকিত উপজেলা রাউজান। মুজিব শতবর্ষকে সামনে রেখে স্থানীয় এমপির উদ্যোগে এই উপজেলার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় স্থাপিত ১০০ বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে অনন্য রেকর্ড হতে যাচ্ছে। ক্ষণগণনার মধ্যদিয়ে এ দিনটির জন্য রাউজানবাসীর অধীর অপেক্ষার অবসান হতে যাচ্ছে আগামি ১৭ মার্চ। স্থানীয় সংসদ সদস্য এবিএম ফজলে করিম চৌধুরীর উদ্যোগে জাতির জনকের ম্যুরালগুলো এখন উদ্বোধনের অপেক্ষায়।
এর আগে কখনো দেশের অন্য কোনো উপজেলায় বঙ্গবন্ধুর এতো সংখ্যক ম্যুরাল স্থাপিত হয়নি। শতকের এই ম্যুরাল স্থাপনের রেকর্ড গড়তে যাচ্ছে রাউজান উপজেলা। এছাড়াও সংসদ সদস্যের উদ্যোগে উপজেলার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চলমান স্কুল ফিডিংয়ের অংশ হিসেবে সেই দিন প্রতিটি স্কুলে আয়োজন করা হয়েছে মেজবান। এতে প্রায় অর্ধ লক্ষ শিক্ষক, শিক্ষার্থী, এতিম ও সংশ্লিষ্টরা উন্নতমানের খাবার গ্রহণ করবেন। যার ফলে ১৭ মার্চ রাউজানবাসী মুজিব বর্ষ শুরু করছে ব্যাপক উৎসবের মধ্য দিয়ে।
জানা গেছে, ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে দেশে মুজিববর্ষের ক্ষণ গণনা শুরু হলেও রাউজানে এই ক্ষণগণনা শুরু হয় ব্যাপক অনুষ্ঠানমালার মধ্যদিয়ে। এসব কর্মসূচিতে রেলপথ মন্ত্রণালয় বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী এমপির আমন্ত্রণে রাউজান সরকারি কলেজ মাঠে ক্ষণগণনা অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে যোগদান করেন ঢাকাস্থ ভারতীয় হাইকমিশনার রীভা গাঙ্গুলী দাশ, ফার্স্ট ভারতীয় সহকারী হাইকমিশনার অনিন্দ্য ব্যানার্জী, সেকেন্ড সহকারী হাই কমিশনার শুভাশিষ সিংহসহ অনেকে। ১০ জানুয়ারি ওইদিন তথা ক্ষণ গণনার শুরুর দিন থেকে রাউজানবাসী অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে ১৭ মার্চের। এই দিন উপজেলায় স্থাপিত বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালগুলোর উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে রাউজান পরিণত হবে টুঙ্গিপাড়ায়।
রাউজানের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, দর্শনীয় স্থান, সরকারি অফিস, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, অডিটোরিয়াম, আওয়ামী লীগের স্থায়ী ১৭টি দলীয় কার্যালয়, ১৪টি স্থায়ী ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্স, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, উচ্চ বিদ্যালয়, কলেজসহ গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় স্থাপিত ম্যুরালগুলো এখন উদ্বোধনের অপেক্ষায়। ম্যুরালগুলোর সাইজ পাঁচ ধরনের। তা হচ্ছে ১২ বর্গফুট, ২০ বর্গফুট, ৩০ বর্গফুট, ৪২ বর্গফুট এবং ৬৩ বর্গফুট। শিল্পী শ্রীকান্ত আচার্য্যরে নেতৃত্বে প্রায় ২০ জন শিল্পী গত ৮ মাস ধরে ম্যুরালগুলোর কাজ শেষ করেছেন।
এ বিষয়ে ম্যুরাল স্থাপনের উদ্যোক্তা ও পৃষ্ঠপোষক এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী এমপি বলেন, ‘জাতির জনক বঙ্গবন্ধু ছিলেন বাঙালি জাতির মুক্তির দিশারী। যার জন্ম না হলে এ দেশ হতো না, মুক্তি পেতনা বাঙালি জাতি। তাই আমি মনে করি, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে প্রতিটা মুহুর্তেই শ্রদ্ধা ও স্মরণ করা উচিত। এসব ম্যুরাল রাউজানবাসীকে এক ঐতিহাসিক মুহুর্তের সাথে সম্পৃক্ত করবে। এবং বঙ্গবন্ধুর প্রতি বিন¤্র শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য বিশেষ ভূমিকা রাখবে।
রাউজানের বিভিন্ন স্থান সরেজমিনে পরিদর্শনকালে স্থানীয়দের মাঝে মুজিব বর্ষের আয়োজনকে ঘিরে বিপুল উৎসাহ ও উদ্দীপনা লক্ষ্য করা গেছে। রাউজানের সাধারণ লোকজন স্থানীয় সাংসদের এই ব্যতিক্রমী উদ্যোগের ভূয়ষী প্রশংসা করে বলেন, নিজস্ব অর্থায়নে দেশে প্রথম প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চলমান স্কুল ফিডিং ও এর অংশ হিসেবে সকল শিক্ষার্থীকে রাষ্ট্রপতি অ্যাড. আবদুল হামিদের মাধ্যমে টিফিন বক্স বিতরণ, ২০১৭ সালের ২৪ জুলাই গ্রীণ ফেস্টিভেলের আওতায় এক ঘণ্টায় পুরো রাউজানে ৪ লক্ষ ৮৭ হাজার ফলজ গাছের চারা রোপণ করে এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী রাউজান জাতীয় পর্যায়ে ও আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে সমাদৃত হন। একই বছরের ১৫ আগস্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শাহাদাৎ বার্ষিকীতে ১ হাজার ৮৪ ব্যাগ রক্ত সংগ্রহ করে তিনি বাংলাদেশে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন। গত বছরের এপ্রিল মাসে ‘প্রাণের টানে পায়ে হেঁটে রাউজানের ঘরে ঘরে’ কমর্সূচি পালন করেছিলেন তিনি। কর্মসূচির আওতায় একটানা চারদিনে ৪৫ ঘণ্টায় উপজেলার ১৫০ কিলোমিটার পথঘাটে ঘুরে ঘুরে এলাকাবাসীর খবর নিয়েছিলেন তিনি। এবার মুজিববর্ষকে ঘিরে আধুনিক রাউজানের রূপকার এবিএম ফজলে করিম চৌধুরীর ব্যক্তিগত উদ্যোগে বঙ্গবন্ধুর এক’শটি ম্যুরাল বসানোর বিষয়টিও পুরোদেশেই দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে।

ডিসি/এসআইকে/এমজে