বাঁশখালীতে সহকারী শিক্ষক-শিক্ষিকার বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ

বাঁশখালী প্রতিনিধি, দৈনিক চট্টগ্রাম >>>
বাঁশখালী উপজেলার বৈলছড়ি ইউনিয়নের পূর্ব চেচুরিয়া খদুল্লাহপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ও শিক্ষিকার বিরুদ্ধে ছাত্র-ছাত্রী ও অভিভাবকদের সাথে অসদাচরণ, পারিবারিক পেশিশক্তির প্রভাব খাটিয়ে স্কুলে অনুপস্থিত থাকা এবং প্রায় সময় স্কুল ফাঁকি দেওয়াসহ নানান অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে।  এ বিষয়ে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি (এসএমসি) সভাপতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।  পাশাপাশি স্থানীয় সংসদ সদস্য, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস, উপ-পরিচালক, মহাপরিচালক, সচিব ও প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রীকে অভিযোগের অনুলিপি দেওয়া হয়েছে।
পরিচালনা কমিটি সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ৫৭ নম্বর পূর্ব চেচুরিয়া খদুল্লাহপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রায় সাড়ে তিনশজনের অধিক শিক্ষার্থী রয়েছে।  শিক্ষক রয়েছেন ছয়জন।
বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি মো. নজরুল ইসলামের দেওয়া লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, বিদ্যালয়ের সহকারী ২ শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিভাবকদের ভিন্ন ভিন্ন অভিযোগ সম্পর্কে সতর্ক করার পরও সতর্ক না হওয়ায় স্কুলের শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে বিধায় এসএমসির সকল সদস্যদের মতামতের ভিত্তিতে লিখিত অভিযোগ জানানো হয়েছে।
এলাকাবাসী ও স্কুল কমিটি সূত্রে আরো জানা গেছে, সরকার বিরোধী একটি মহলের সাথে সহকারী শিক্ষক আব্দুল মাবুদ ও শামিমা আক্তার হাত মিলিয়ে স্কুলের নিয়মিত পাঠদান কর্মসূচিকে ব্যাহত করার পাশাপাশি স্থানীয় পেশি শক্তির প্রভাব খাটিয়ে এলাকাবাসী ও স্কুল পরিচালনা কমিটির তোয়াক্কা না করে বিভিন্ন কটুক্তিমূলক মন্তব্য করে।  কর্তৃপক্ষের অনুমতি না নিয়ে বিদ্যালয়ে সঠিক সময়ে অনুপস্থিত থাকা এবং ক্লাস ফাঁকি দিয়ে কৃষি কাজে ব্যস্ততা ও স্কুল ছুটির পূর্বেই বিদ্যালয় ত্যাগ করেন তারা।  এছাড়াও ছাত্র-ছাত্রী, অভিভাবকদের সাথে অসদাচরণ, পারিবারিক পেশিশক্তির প্রভাব দেখানো, বিভিন্ন সময়ে ছাত্র-ছাত্রীদের মারধরের অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। একই সাথে সহকারী শিক্ষিকা শামিমা আক্তারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন কু্টক্তি, ক্লাস ফাঁকি দিয়ে প্রাক-প্রাথমিক রুমে ঘুমানো, এসএমসি কমিটির ভূমিকা নিয়ে বিভিন্ন খারাপ মন্তব্য এবং ছাত্রীদের নিজের পারিবারিক কাজে ব্যবহার করানোসহ বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে।
এ ব্যাপারে সহকারী শিক্ষক মো. আব্দুল মাবুদ বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে আনা বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা।  এসএমসি কমিটির সাবেক সভাপতির সাথে আমার পারিবারিক দ্বন্দ্ব থাকায় হয়তো তিনি বর্তমান সভাপতিকে ভুল বুঝিয়ে এসব রটাচ্ছেন।  সাবেক সভাপতির চাচাতো ভাই বর্তমান সভাপতি।  বর্তমান সভাপতি একজন স্বনামধন্য ব্যবসায়ী এবং ভালো মানুষ।  হয়তো কেউ তাকে ভুল বুঝিয়ে এসব করাচ্ছেন।  উক্ত কমিটি পূর্বেও আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়েছিল।  সেই অভিযোগের প্রেক্ষিতে এটিও স্যার স্কুল পরিদর্শনে আসেন।  আমি তখন স্যারকে বলেছি আমার কারনে যদি স্কুলের সুনাম ক্ষুণ্ণ হয়, তাহলে আমাকে যেন অন্য কোথাও ট্রান্সফার/বদলি করা হয়।  বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত থাকা ও কৃষি কাজে জড়িতে থাকার অভিযোগ মিথ্যা ও বানোয়াট।  প্রকৃত পক্ষে আমি কোনো কৃষি কাজ করি না।  আমাকে বিপাকে ফেলার জন্য স্কুল কমিটির কতিপয় কয়েকজন সদস্য সভাপতিকে ভুল বুঝিয়ে এ অপবাদ রটিয়েছেন’।
অভিযুক্ত অপর সহকারী শিক্ষিকা শামিমা আক্তার বলেন, আমার বিরুদ্ধে আনা বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা।  এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষকই ভালো বলতে পারবেন।
এ ব্যাপারে জানতে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পানুলাল দত্তের মুঠোফোনে বেশ কয়েকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার মোবাইল ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোমেনা আক্তার বলেন, ‘এ সংক্রান্ত একটি লিখিত অভিযোগ আমি পেয়েছি।  তদন্ত করে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে’।

ডিসি/এসআইকে/এমএমবিটি