শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি বাণিজ্য বন্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি ক্যাবের

অভিযুক্ত সিটিসি

নিজস্ব প্রতিবেদক >>>
চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন শহরে নামীদামী বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহে শিক্ষার্থী ভর্তির ক্ষেত্রে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অনুসরণীয় নীতিমালা উপেক্ষা করে ভর্তি ও পুনঃভর্তির নামে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে নিয়মবহির্ভূতভাবে অর্থ আদায়ের প্রতিবাদ জানিয়েছে দেশের ক্রেতা-ভোক্তাদের স্বার্থ সংরক্ষণকারী প্রতিষ্ঠান কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) চট্টগ্রামের নেতৃবৃন্দ।
চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ইলিয়াছ হোসেন এর কাছে দাখিলকৃত এক পত্রে ক্যাব নেতৃবৃন্দ বলেন, নগরীর বিভিন্ন বেসরকারি স্কুলে ভর্তির সময় পুনঃভর্তি, উন্নয়ন ফি, টিসি গ্রহণের সময় পুরো বছরের ফি আদায়, নতুন সেশনে ভর্তি- ইত্যাদির নামে-বেনামে হাজার টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে।
অন্যদিকে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ও চট্টগ্রাম বন্দর, সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বেপজাসহ বিভিন্ন স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠান কর্তৃক পরিচালিত স্কুলেও নানা অযুহাতে ভর্তি, পুনঃভর্তি এবং টিউশন ফি দ্বিগুন করার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে এ সমস্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ, বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহে ভর্তি বাণিজ্য কঠোরভাবে মনিটরিং করে তা বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান।
নেতৃবন্দ বলেন, একজন সাধারণ নাগরিককে ভর্তি, পুনঃভর্তি, টিউশন ফি, বাই-খাতা ইত্যাদির নামে এতো খরচের বোঝা চাপানো হচ্ছে- যার ভারে মধ্যবিত্তের জীবন অসহ্য হয়ে উঠছে। নেতৃবৃন্দ অভিযোগ করেন, ভর্তি, পুনঃভর্তি, টিউশন ফি ও টিসির ফি আদায়ের কোনো নিয়ম-নীতি মেনে চলার নজির পাওয়া যাচ্ছে না, যে যার ইচ্ছামতো গলাকাটা অর্থ আদায় করে পকেট ভর্তি করছে। সরকারের শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক জারীকৃত বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহে শিক্ষার্থী ভর্তির ক্ষেত্রে অনুসরণীয় নীতিমালা উপেক্ষা করে যে যার মতো ফি আদায় করছে।

সিআইইটি’র এমন অনৈতিক টাকা আদায়ের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়েছে।

নেতৃবৃন্দ আরো উল্লেখ করেন, ডিসেম্বর শুরুর বহু পূর্বেই শুরু হয়েছে ভর্তি কোচিং বাণিজ্য, আবার সরকারি স্কুলে ক্লাসের সাথেই চলছে কোচিং বাণিজ্য। অথচ এগুলো তদারকির দায়িত্বে নিয়োজিত- জেলা শিক্ষা অফিস, শিক্ষা বোর্ড ও শিক্ষা প্রশাসন যেন দেখেও ঘুমিয়ে আছেন। জেলা প্রশাসন কিছু কিছু উদ্যোগ নিলেও তা আরো বাড়ানো এবং জোরদার করা দরকার এবং একই সাথে শিক্ষা প্রশাসনের নজরদারি বাড়ানো দরকার।
সরেজমিনে তদন্তসাপেক্ষে দেখা গেছে, চট্টগ্রামের সিডিএ অ্যাভিনিউ, মুরাদপুরে অবস্হিত চিটাগাং টেকনিক্যাল কলেজ (সিটিসি)’র দশম শ্রেণির ছাত্র মোস্তাক মোহাম্মদ তানভীরের অভিভাবক মো. ইমতিয়াজ আহমেদ চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) আবু হাসান সিদ্দীকি বরাবরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেও কোনো সমাধান পাননি বলে আমাদের প্রতিবেদকের কাছে অভিযোগ করেছেন। তিনি আরো বলেন, দুদকের সহকারী পরিচালককেও তিনি অভিযোগ জানিয়েছেন। সাথে সাথে জেলা শিক্ষা অফিসার জসিম উদ্দীন ও থানা শিক্ষা অফিসার সাইফুল আলমকেও তিনি মুঠো ফোনে অভিযোগ জানিয়েছেন।কিন্তু এখনোও কোনো প্রতিকার বা সমস্যার সমাধান পাননি বলে আক্ষেপের সুরে জানান।
ক্যাব নেতৃবন্দ বলেন, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন, সিডিএ, বন্দর, সেনা, নৌ, বিমান বাহিনীসহ বিভিন্ন সরকারি ও স্বায়ত্বশাসিত সেবা সংস্থাগুলো পরিচালিত স্কুলগুলোও এ ধরণের অনৈতিক কর্মকান্ডে জড়িত হয়ে সাধারণ ও ব্যাক্তি উদ্যোগে গড়ে ওঠা

অভিযুক্ত সিটিসি

প্রতিষ্ঠানের মতো বাণিজ্যিক কর্মকান্ড পরিচালনা করলে অন্যান্য ব্যক্তি উদ্যোক্তারা অবশ্যই জনগণের পকেট কেটে নিজের পকেট ভারী করবে। তাই তাদের এ ধরণের আচরণ পরিহার করা উচিত বলে মনে করেন তারা।
জেলা প্রশাসককে চিঠি হস্তান্তরের সময় উপস্থিত ছিলেন ক্যাব কেন্দ্রিয় নির্বাহী কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন, ক্যাব চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাধারণ সম্পাদক কাজী ইকবাল বাহার ছাবেরী, ক্যাব মহানগরের সভাপতি জেসসিন সুলতানা পারু, দক্ষিণ জেলা সভাপতি আলহাজ্ব আবদুল মান্নান, ক্যাব মহানগরের যুগ্ম সম্পাদক তৌহিদুল ইসলাম, ক্যাব নেতা সেলিম জাহাঙ্গীর প্রমুখ।

ডিসি/এসআইকে/আইএ