এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেনের ৮ম সমাবর্তন ৯ মে

মো. নুর উদ্দিন, নগর প্রতিবেদক >>>
আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয় এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেনের (এ ইউ ডব্লিউ) ৮ম সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হবে আগামি ৯ মে। সমাবর্তনের স্মারক বক্তা হিসেবে উপস্থিত থাকবেন মার্কিন নাগরিক নিউ ইয়র্ক ইউনিভার্সিটির ১৫তম প্রেসিডেন্ট জন সেক্সটন। যার সুনিপূণ নেতৃত্বে চীনের সাংহাই ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের আবুধাবীতে নিউ ইয়র্ক ইউনিভার্সিটির (এনওয়াইইউ) ক্যাম্পাস স্থাপিত হয়েছে। জন সেক্সটন আইন বিষয়ের একজন অধ্যাপক। তিনি ইতোপূর্বে নিউ ইয়র্ক ইউনিভার্সিটির (এনওয়াইইউ) স্কুল অব ল্ এর ডিন হিসেবে দায়িত্বরত ছিলেন। জন সেক্সটন আমেরিকার শীর্ষস্থানীয় সিভিল আইন প্রক্রিয়া বিষয়ক অনেক বইয়ের প্রণেতা। তারমধ্যে ‘বেস্বল এজ এ রোড টু গড: সিং বিয়ন্ড দ্য গেম’ এবং ‘স্ট্যান্ডিং ফর রিজন : দ্য ইউনিভার্সিটি ইন এ ডগম্যাটিক এজ’ অন্যতম। সমাবর্তনে জন সেক্সটনকে সম্মান সূচক ডক্টর অব হিউম্যান লেটার ডিগ্রী প্রদান করা হবে।
৮ম সমাবর্তনে এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেন (এইউডব্লিও) তিনজন বিশিষ্ট ব্যাক্তিকে সম্মানসূচক ডিগ্রী প্রদান করবে। তাদের মধ্যে সুইজারল্যান্ডের শিক্ষাবিদ ইউনিভার্সিটি অব ব্রাসেল এর প্রেসিডেন্ট আন্ড্রেয়া শেন্কার- উইকি এবং ভারতের কলকাতায় জন্মগ্রহণকারী ইন্টারন্যাশনাল মনিটরী ফান্ডের প্রথম নারী প্রধান অর্থনীতিবিদ গীতা গোপী নাথকে সম্মানসূচক ডক্টর অব লজ্ ডিগ্রী প্রদান করা হবে। এছাড়াও হলিওডের সিনেমা ‘এ রিলাকট্যান্ট ফান্ডামেন্টালিস্ট’ এর প্রযোজক বিখ্যাত পাকিস্তানী অভিনেত্রী ও গায়িকা মিশা শফিকে সম্মানসূচক ডক্টর অব আর্টস ডিগ্রী প্রদান করা হবে।
এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেন (এইউডব্লিও) এ অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের মধ্যে ১২টি দেশের ১২৩ জন শিক্ষার্থী এবারের ৮ম সমাবর্তনে গ্র্যাজুয়েট হিসেবে ডিগ্রী লাভ করবে। সমাবর্তনে সভাপতিত্ব করবেন এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেনের চ্যান্সেলর চেরী ব্লেয়ার এবং বোর্ড অব ট্রাস্টিজ এর চেয়ারম্যান বাংলাদেশ সরকারের শিক্ষামন্ত্রী ডা. দিপু মনি। সমাবর্তন কার্যক্রম পরিচালনা করবেন এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেন (এইউডব্লিও) এর ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর নির্মলা রাও (ওবিই,এফএইচএসএস)।
এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেন (এইউডব্লিউ) এর রেজিস্ট্রার ড. ডেভ ডোল্যান্ড দৈনিক চট্টগ্রামকে জানিয়েছেন, বাংলাদেশের মহান জাতীয় সংসদের মাধ্যমে চার্টার প্রাপ্ত এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেন (এইউডব্লিউ) ২০০৮ সালে চট্টগ্রামে যাত্রা শুরু করে। বিশ্ববিদ্যালয়টি এতদাঞ্চলের প্রথম আঞ্চলিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, যেটি আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নারীদের শিক্ষা ও নেতৃত্ব উন্নয়ন ও বিকাশে অবদান রাখছে, যার শেকড়ে রয়েছে এশিয়ার জনগণের আকাঙ্খা ও প্রত্যাশা। বাংলাদেশের মহান জাতীয় সংসদের মাধ্যমে চার্টার প্রাপ্ত এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেনে (এইউডব্লিউ)। এই বিশ্ববিদ্যালয়টি এতদাঞ্চল তথা এশিয়ার নারীদের নারী নেতৃত্ব, উদ্যোক্তা এবং সমাজ পরিবর্তনের অবদানের জন্য নারী নেটওয়ার্ক তৈরি করার জন্য অসাধারণভাবে সহযোগিতা করে আসছে। পাশাপাশি এটি এমন সব নারীদের জন্য কাজ করছে, যাদের মধ্যে রয়েছে অসাধারণ শিক্ষার সম্ভাবনা, সাহসী মনোভাব এবং সকল প্রকার অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধে গিয়ে সমাজ বিনির্মাণে নিজেদের তৈরি করার অপার আগ্রহ।
এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেনে (এইউডব্লিউ) বর্তমানে বিশ্বের ১৯ টি দেশের ৯০০ জনের অধিক নারী শিক্ষার্থীরা অধ্যায়ণ করছে। তারমধ্যে রয়েছে আফগানিস্তান, বাংলাদেশ, ভুটান, কম্বোডিয়া, চীন, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, লাওস পিডিআর, মিয়ানমার, নেপাল, পাকিস্তান, ফিলিস্তিন, সেনেগাল, মালয়েশিয়া, শ্রীলংকা, সিরিয়া, পূর্ব তিমুর, ভিয়েতনাম এবং ইয়েমেন। এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেনের ছাত্রীদের মধ্যে বেশীর ভাগই হলো তাদের পরিবারের ১ম সন্তান যে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত পড়াশোনা করেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮৫% ছাত্রী এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেনের সাথে সম্পৃক্ত বিশ্বের বিভিন্ন সহযোগী ব্যাক্তি ও সংগঠনের প্রদত্ত স্কলারশীপের আওতায় ১০০% বৃত্তি বা প্রায় ১০০% বৃত্তি নিয়ে পড়া লেখা করে আসছে। এই পর্যন্ত প্রায় ৮০০ জনের অধিক শিক্ষার্থী এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেন (এইউডব্লিউ) হতে গ্র্যাজুয়েট ডিগ্রী অর্জন করেছে। এবং বেশির ভাগ ছাত্রী তাদের নিজ নিজ দেশে সরকারি ও বেসরকারি ক্ষেত্রে সুনামের সাথে কাজ করছে।
বিশ্ববিদ্যালয়টির সার্ভিস লার্ণিং এন্ড কমিউনিটি এ্যানগেজম্যান্ট এর ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ ওবায়দুর রহমান জানান, ২৫% ছাত্রী উচ্চতর শিক্ষার জন্য সুযোগ গ্রহণ করেছে। এই বিশ্ববিদ্যালয় হতে স্নাতক ডিগ্রীপ্রাপ্ত ছাত্রীরা বা ইতোপূর্বে অধ্যয়ণরত ছাত্রীরা বিশ্বের বড় বড় নামীদামি বিশ্ববিদ্যালয় যেমন অক্সফোর্ড, স্ট্যানফোর্ড, কলম্বিয়া, নিউ ইয়র্ক ইউনিভার্সিটি, ডিউক, ব্র্যান্ডে, সাত্তে, সোয়াস, ইওয়াহা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির এবং অধ্যয়ন করার সুযোগ পেয়েছে।

ডিসি/এসআইকে/এমএনইউ