চট্টগ্রামে ডেকোরেটার্স খাতে ক্ষতি শতকোটি টাকা, প্রণোদনার দাবি

প্রতীকী ছবি।

নগর প্রতিবেদক >>>
মানুষের জীবনে জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত সামাজিক অনুষ্ঠানে যে শিল্প বা প্রতিষ্ঠানটির নাম সর্ব প্রথম উচ্চারণ হয় তা হলো ডেকোরেশন।  জীবনের প্রথম ধাপে নাম রাখার আনন্দঘন মূহুর্তগুলোকে স্মরণীয় করে রাখতে এবং জীবনের শেষের দিকে ব্যক্তির মৃত্যুর পর তার রুহের মাগফেরাত কামণার্থে ফাতেহা বা মেজবানে পর্যন্ত এই ডেকোরেশন শিল্পের ভূমিকা অতুলনীয়।  দেশে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের কারণে সরকারি নির্দেশনায় গত মার্চ মাস থেকে চট্টগ্রামে সব রকম পারিবারিক, সামাজিক, রাজনৈতিক অনুষ্ঠান বন্ধ রয়েছে।  পবিত্র রমজানের আগ মূহুর্তের মৌসুমটিকে ডেকোরেটার্স ব্যবসায়ীরা বিয়ে, গায়ে হলুদ, মেজবান, সেমিনার, রাজনৈতিক জনসভা ও অন্যান্য সামাজিক অনুষ্ঠানে ব্যস্ত থাকতেন।  এবার সেই মৌসুমে ধ্বস নামে।

হাজী মোহাম্মদ শাহাবুদ্দিন।

চট্টগ্রাম ডেকোরেটার্স মালিক সমিতির সভাপতি হাজী মোহাম্মদ শাহাবুদ্দিন দৈনিক চট্টগ্রামকে জানান, করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে এই ব্যবসায় বড় আকারের ধ্বস নেমেছে।  চট্টগ্রামের প্রায় দুইশত ডেকোরেটার্স মালিক এবং মিস্ত্রি, বয়, মুছালজি ধোয়ার লোক, মালামাল বহন করা গাড়ির চালক, সংশ্লিষ্ট শ্রমিকসহ প্রায় অর্ধলক্ষ কর্মজীবী মানুষ এই ব্যবসার সাথে জড়িত।  এছাড়াও ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট প্রতিষ্ঠান, ফুলের দোকান, লন্ড্রী, কাপড় ব্যবসায়ী, বাঁশ ব্যবসায়ী, চেয়ার, টেবিল ইত্যাদি ব্যবসায়ীরাও আজ দিশেহারা ও বিপদগ্রস্ত।  এই শিল্পের বর্তমান মালিকরা প্রতি মাসে তাদের স্থায়ী কর্মকর্তা-কর্মচারী, সিকিউরিটি গার্ডসহ চালকদের বেতন, গোডাউন ভাড়া, অফিস ভাড়া বাবদ বিরাট অংকের লোকসানের সম্মুখীন।  প্রতিমাসে ব্যাংক ঋণের সুদ দিতে হচ্ছে।  দেশ এগিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতামূলকভাবে বাজারে টিকে থাকার জন্য ছোট-বড় প্রায় দোকান মালিক ভাইয়েরা উন্নত মালামাল সংগ্রহ করে, ডেকোরেটার্স শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা করে।
তিনি জানান, ডেকোরেটার্স ব্যবসায়ীরা পূঁজি বিনিয়োগ করে সমাজ তথা দেশের শিক্ষিত বেকার যুবকদের বহু কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছে।  তারা নিজেদের অবস্থান থেকে দেশের, সমাজের তথা মানুষের কল্যাণে নীরবে কাজ করে গেছে।  বর্তমানে করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় ডেকোরেটার্স দোকানগুলো বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এই শিল্পের প্রায় ১০০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।
তিনি বলেন, এমতাবস্থায় আমরা প্রতিটি ডেকোরেটর এর মালিকরা আর্থিক ও মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়েছি এবং এক অনিশ্চয়তার মধ্যে দিন অতিবাহিত করছি।  বর্তমান পরিস্থিতিতে ডেকোরেটার্স ব্যবসায়ীদের পরিস্থিতি খুব নাজুক আকার ধারণ করছে।  এই শিল্পকে ও এই বিপদগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের বাঁচিয়ে রাখতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছে চট্টগ্রাম ডেকোরেটার্স মালিক সমিতি।

ডিসি/এসআইকে/আইএস