মানিকছড়িতে বাড়ছে সম্ভাবনাময় শিমুল আলু’র চাষ

মো. জাকির হোসেন, মানিকছড়ি প্রতিনিধি >>>
প্রকৃতির অপরুপ সৌন্দর্যের প্রতীক পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়ি। চেঙ্গী নদীকে ঘিরে এ জেলার অবস্থান।  এ জেলায় ছোট-বড়, উঁচু-নিচু অসংখ্য পাহাড় রয়েছে।  এসব পাহাড়ে চাষকৃত হলুদ পৃথিবীতে বিখ্যাত।  হলুদের পাশাপাশি ব্যাপকভাবে চাষ করা হচ্ছে আনারস ও আম্রপালি আম।  এখন অপার সম্ভাবনা নিয়ে উঁকি দিচ্ছে শিমুল আলু চাষ।
অনাবাদি উঁচু-নিচু পাহাড়ে এসব আলু খুব সহজে চাষ করা যায় বলে অনেকে আলু চাষে উদ্ভুদ্ধ হচ্ছেন।  কম বিনিয়োগ ও অল্প সময়ে ভালো ফলন পাওয়ায় কয়েক বছর ধরে মানিকছড়ির অনেক কৃষক শিমুল আলু চাষ করা শুরু করেছেন।
জানা গেছে, দেশের কৃষিখাতে সম্ভাবনার নতুন দ্বার খুলে দিয়েছে উন্নত খাদ্যগুণসমৃদ্ধ ‘শিমুল আলু’।  এটির বৈজ্ঞানিক নাম কাসাবা।  তবে স্থানীয় কৃষকদের কাছে এটি ‘কাঠ আলু’ নামে বেশি পরিচিত।  অন্যান্য চাষাবাদ থেকে অধিক লাভ এবং তুলনামূলক খরচ কম হওয়ায় এটি চাষাবাদের পরিমাণ বাড়ছে।  এগুলো দেখতে শিমুল গাছের মতো।  আলু ফলে মাটির অভ্যন্তরে।  উচ্চ শর্করাসমৃদ্ধ কাঠ আলু কন্দ জাতীয় ফসল।  লাভজনক হওয়ায় এখানকার কৃষকেরা এ চাষে ঝুঁকছে।
কৃষকদের অনেকে জানান, ‘কাসাবা কী সেটা এখনো অনেকেই জানে না।  স্থানীয়রা বিকল্প খাদ্য উপযোগী এ ফল সম্পর্কে অবগত নন।  তবে দেশের প্রতিষ্ঠিত কনজ্যুমার ও ওষুধ কম্পানিগুলো কাসাবা দিয়ে গ্লুকোজ, চিপস্ ও ওষুধের কাঁচামাল তৈরি করছে’।  তারা জানান, মোটা শেকড়ের মতো মূলই হচ্ছে কাসাবা।  এটি কাঁচা খাওয়া যায়।  কাঁচা খেতে এটি পানিযুক্ত এবং আঁশ জাতীয়।  এটির উপরিভাগ (গাছ) দেখতে অনেকটা শিমুল গাছের মতো।  মাটির অভ্যন্তরের অংশই কাসাবা ফল।  উপরের চামড়া আলাদা করে এটি খাওয়া যায়।  আলুর মতো মাটির তলে ফল আসে কাসাবার।  ফলন শুরু হওয়ার পর সারা বছরই মাটি খুঁড়ে কাসাবা সংগ্রহ করা যায়।  একটি গাছ কমপক্ষে ৩ বছর ফলন দেয়, আবার গাছের পুষ্ট ডাল থেকে বীজ তৈরি করে খুব অল্প দিনেই গড়ে তোলা সম্ভব কাসাবার বাগান।  বর্ষা মৌসুমে মাটিতে যখন আর্দ্রতা থাকে তখন কাসাবার চারা রোপণ করা হয়।
মানিকছড়ি উপজেলার গচ্ছাবিল এলাকার অদূরে এভাবে শত শত হেক্টর জমিতে শিমুল আলু চাষ যে কারো নজর কারবে।  শিমুল আলু চাষে কৃষকদের উৎসাহিত করা হলে বিস্তৃত পাহাড়ে ফুটে উঠতে পারে একখন্ড বাংলাদেশ, খুলে যেতে পারে অপার সম্ভাবনার আরেকটি দুয়ার।

ডিসি/এসআইকে/এমজেএইচ