‌‘সর্বোচ্চ পরিমাণ পেঁয়াজ আমদানি করা হবে’

দৈনিক চট্টগ্রাম ডেস্ক >>>
বাজার স্থিতিশীল রাখতে এবার সর্বোচ্চ পরিমাণ পেঁয়াজ আমদানি করা হবে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।  বৃহস্পতিবার (১০ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে হাঙ্গেরির পররাষ্ট্র ও বাণিজ্য বিষয়ক মন্ত্রী পিটার সিজার্তোর নেতৃত্বে তিন সদস্যের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নে এ কথা বলেন তিনি।
গত কয়েকদিন ধরে পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধির প্রতিক্রিয়ায় বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের দামটা একটু বেড়েছে।  এ বিষয়ে আমাদের মিনিস্ট্র ফলোআপ করছে।  আজকেই আমাদের মিনিস্ট্রি থেকে বেশ কয়েকটি টিম ইম্পোর্টিং পজিশনগুলো, যেমন বেনাপোল ও হিলিতে যাবে।  সেখানে দেখবে আমদানির কি অবস্থা।  একটু দাম ভারতেও বেড়েছে, বন্যার কারণে চলাচলে সমস্যা হয়েছে’।
পেঁয়াজ আমদানির প্রস্তুতির কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা খুব চেষ্টা করছি। টিসিবি বড় পরিসরে নামছে।  আগামি ১৩ তারিখ থেকে টিসিবি খোলাবাজারে পেঁয়াজ বিক্রি শুরু করবে।  এবার আমরা সর্বকালের রেকর্ড ভঙ্গ করে সর্বোচ্চ পরিমাণ পেঁয়াজ ইম্পোর্ট করব।  আমরা ফুল মনিটর করছি, দেখা যাক’।
গতবছর ভারত পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করায় নতুন বাজার থেকে পেঁয়াজ আমদানির পথ খুলেছে জানিয়ে টিপু মুনশি বলেন, ‘গতবছরের আর এ বছরের মধ্যে পার্থক্য হলো গতবছর ভারত পেঁয়াজ বন্ধ করে দিয়েছিল ২৯ সেপ্টেম্বর।  এবার ভারত কিন্তু বন্ধ করেনি।  গত বছর বন্ধ করে দেওয়ায় আমাদের এখানকার ব্যবসায়ীরা সুযোগ নিয়েছে।  ভারতও তখন ১৫০ রুপিতে পেঁয়াজ বিক্রি করেছিল।  এ অঞ্চলে সমস্যা হয়েছিল, আমাদের হয়ত সাফারিং বেশি হয়েছে।  ভালো দিক হল ভারত বন্ধ করে দেওয়ার কারণে আমরা নতুন বাজার থেকে আমদানি করতে শিখেছি।  টার্কি, ইজিপ্ট, ইন্দোনেশিয়া থেকে গতবার পেঁয়াজ আসার কারণে এবারও আমাদের লোকজনের যোগাযোগ ভালো আছে।  আমরা টার্কি থেকে আমদানির জন্য টেন্ডারও করেছি টিসিবির মাধ্যমে’।
 পেঁয়াজ আমদানিতে ট্যাক্স কমানোর জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে চিঠি দেওয়া হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আশা করছি পাঁচ শতাংশ ট্যাক্স প্রত্যাহার করা হবে’।
মিয়ানমার থেকে গতবছর যে পরিমাণ পেঁয়াজ পাওয়া গিয়েছিল এবার কোভিড-১৯ এর কারণে ধীরগতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘গতকাল মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতের সাথে আমাদের সচিবে কথা হয়েছে।  আমরা সবগুলো পথ খুলে দিতে চাই।  যত দ্রুত ও বেশি পেঁয়াজ আমদানি করা যায়, আমাদের তরফ থেকে সেই চেষ্টাই করা হচ্ছে’।
কৃষি মন্ত্রণালয় বলছে দেশে এবছর পেঁয়াজ উৎপাদন বেশি হয়েছে তাহলে দাম বাড়ছে কেন জানতে চাইলে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বেশি হওয়া মানেই আমাদের ফুল টার্গেট হয়েছে তা কিন্তু নয়।  আমাদের উৎপাদন বেড়েছে ফলে কৃষক কিছু দামও পেয়েছে।  তারপরও আমাদের ঘাটতি রয়েছে পাঁচ থেকে সাড়ে পাঁচ লাখ টন।  আশা করি আগামি বছরগুলোতে উৎপাদন আরও বাড়বে।  তবে এখনও নির্ভর করতে হচ্ছে বাইরের বাজারের ওপর’।
হাঙ্গেরির পররাষ্ট্রমন্ত্রী সঙ্গে আলোচনার বিষয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বিনিয়োগ ও বাণিজ্য বাড়াতে বাংলাদেশ ও হাঙ্গেরি একটি জয়েন্ট ট্রেড কমিশন করতে আগ্রহী।  তারা বলেছে আগামি সপ্তাহের মধ্যে একটি জয়েন্ট ট্রেডের আইডিয়া প্রপোজাল পাঠাবে।  আমরা বলেছি প্রপোজাল পাঠানোর এক সপ্তাহের মধ্যে সিদ্ধান্ত নেব।  এছাড়া ফুড প্রোসেসিং ইন্ডাস্ট্রি, ওয়াটার ম্যানেজমেন্ট এবং ফার্মাসিউটিক্যাল খাতে বিনিয়োগে আগ্রহ প্রকাশ করেছে হাঙ্গেরি’।

ডিসি/এসআইকে/এমএসএ