বৃহত্তর স্বার্থে সরকার ব্যবসায়ীদের পক্ষে : অর্থমন্ত্রী

দৈনিক চট্টগ্রাম ডেস্ক >>>
মহামারি করোনার কারণে ব্যাংকের ঋণগ্রহীতাদের খেলাপি না করার বিশেষ সুবিধা আরেক দফা বাড়িয়ে ৩১ ডিসেম্বর করার প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, করোনার জন্যই আগামি ডিসেম্বর পর্যন্ত ঋণের কিস্তি না দিলেও খেলাপি হওয়া থেকে মুক্তি দেয়া হয়েছে।  বিষয়টি শুধু ব্যাংকগুলোর আয় নয়, অনেকগুলো বিষয় বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।  বর্তমানে আমরা বৃহত্তর স্বার্থে ব্যবসায়ীদের পক্ষে আছি।
বুধবার (৩০ সেপ্টেম্বর) অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি এবং সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভার কমিটির বৈঠক শেষে অনলাইনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী এই কথা বলেন।
মুস্তফা কামাল বলেন, করোনার জন্যই এটা বাড়ানো হয়েছে।  এখন আমরা মোটামুটিভাবে- সুযোগ দিয়েছি টাকাতো মাফ করে দেয়নি, টাকা আমরা পাব।  কিন্তু সময় বাড়িয়ে দিয়েছি।  সময় না বাড়িয়ে এ সময় যদি আমরা বাধা সৃষ্টি করি তাহলে এক্সপোর্ট অর্ডারগুলো (রফতানি আদেশ) বাস্তবায়ন করা যাবে না।  আমরা আমদানি করছি, এখনও এলসিগুলোর নিষ্পত্তি করতে পারবো না।  বিভিন্ন জায়গায় বাধাগ্রস্ত হবে।
তিনি বলেন, যেই মুহূর্তে লোনটি ক্লাসিফাইড হয়ে যাবে, সেই মুহূর্তে স্বাভাবিক কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হবে।  এই মুহূর্তে আমরা মনে হয়- এটা করা ঠিক হবে না।  করোনাকালে তাদেরকে (ব্যবসায়ীদের) সাহায্য করার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।
সরকারি ও বেসরকারি উভয় ব্যাংক কর্তৃপক্ষই বলছে- এ সিদ্ধান্তের ফলে তাদের আয়ের ওপরে প্রভাব ফেলছে।  এমন প্রশ্নে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘বিষয়টি শুধু আয় নয়, অনেকগুলো বিষয় বিবেচনা করে করা হয়েছে।  এখন কোনো না কোনোভাবে কিছু হলে কেউতো ক্ষতিগ্রস্ত হবে।  কিন্তু আমরা এখন বৃহত্তর স্বার্থে ব্যবসায়ীদের পক্ষে আছি।  আমি মনে করি- ব্যবসায়ীরা যদি ভালো থাকে ব্যাংকগুলোও ভালো থাকবে’।
তিনি আরও বলেন, গতবছর প্রত্যেকটি ব্যাংকই ভালো করেছে, তাদেরকে ধন্যবাদ।  প্রত্যেকের ব্যালেন্স সিট অনেক ভালো।  খেলাপি ঋণের পরিমাণও কমের দিকে।  আমি মনে করি যে, এটাই সময় তাদের ক্লায়েন্টদের সাহায্য করার জন্য।  ক্লায়েন্টগুলো তাদের (ব্যাংকের), সরকারের না।  ক্লায়েন্ট কোনোভাবে উপকৃত হলে দিনের শেষে লাভবান হবে ব্যাংকগুলো।  বাংলাদেশ ব্যাংকতো তাদের কোনো কাস্টমারকে খেলাপি ঘোষণা করে কষ্ট দিচ্ছে না।  সুতরাং তাদের ব্যবসায় প্রভাব পড়ার কোনো কারণ নেই।
এদিকে গত সোমবার (২৮ সেপ্টেম্বর) এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।  এতে বলা হয়, আগামি ডিসেম্বর পর্যন্ত ঋণের কিস্তি না দিলেও কোনো ব্যবসায়ীকে ঋণ খেলাপি ঘোষণা করা যাবে না।  আবার এই সময়ে ঋণের ওপর কোনো ধরনের দণ্ড সুদ বা অতিরিক্ত ফি আরোপও করা যাবে না।  তবে যদি কেউ ঋণ শোধ করে নিয়মিত গ্রাহক হন, তাকে খেলাপি গ্রাহকের তালিকা থেকে বাদ দিতে হবে।
করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এই সুযোগ দিয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংক।  সোমবার এই সুযোগ বাড়িয়ে ডিসেম্বর পর্যন্ত করা হয়েছে।  এই সময়ে কেউ কিস্তি শোধ দিলে ওই গ্রাহককে সুদ ছাড় দিতে পরামর্শ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

ডিসি/এসআইকে/এমএসএ