তরল প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানিতে টাকা পাচ্ছে না পেট্রোবাংলা

দৈনিক চট্টগ্রাম ডেস্ক >>>
তরল প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানিতে এক হাজার ৯৪ কোটি টাকা চেয়েও পাচ্ছে না পেট্রোবাংলা।  পেট্রোবাংলা সূত্র বলছে, দেশের দুটি এলএনজির ভাসমান টার্মিনালের কাজ পরিচালনার জন্য অর্থ বিভাগের কাছে গত ২০ জানুয়ারি এই টাকা চাওয়া হয়েছিল।  অর্থ বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগ করেও তা পাওয়া যায়নি বলে জ্বালানি বিভাগ জানায়।
দেশে এখন মার্কিন কোম্পানি এক্সিলারেট এনার্জি ও দেশীয় বেসরকারি প্রতিষ্ঠান সামিট গ্রুপের দুটি এলএনজি টার্মিনাল রয়েছে।
গত কয়েকমাস ধরে এলএনজি আমদানিতে অর্থ যোগানের ঘাটতি রয়েছে বলে জানা গেছে।  এখন প্রকাশ্যে জ্বালানি বিভাগের বিভিন্ন বৈঠকে পেট্রোবাংলার পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে এলএনজি আমদানিতে যে পরিমাণ আর্থিক সক্ষমতা দরকার, পেট্রোবাংলার তা নেই।  ভবিষ্যতে এলএনজির সরবরাহ বাড়াতে কী ভাবে ও কোন উৎস থেকে এত টাকা যোগাতে হবে তাও জানে না পেট্রোবাংলা।  এই পরিস্থিতিতে অর্থ বিভাগের কাছে এক হাজার ৯৪ কোটি টাকা চেয়ে গত ২০ জানুয়ারি চিঠি দেয় সংস্থাটি।
সম্প্রতি জ্বালানি বিভাগে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে পেট্রোবাংলার পরিচালক (অর্থ) হারুন-অর-রশীদ জানান, দুটি টার্মিনাল চালু রাখতে আমদানিকৃত পণ্য ডেফার্ড পেমেন্টে খালাসের বিপরীতে অর্থ বিভাগের কাছে এক হাজার ৯৪ কোটি টাকা চাওয়া হয়েছিল। বিষয়টি নিয়ে অর্থ বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগ করেও কোন সাড়া পাওয়া যায়নি।
জ্বালানি বিভাগের সিনিয়র সচিব আনিছুর রহমানের সভাপতিত্বে ওই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।  গত ৯ ফেব্রুয়ারি বৈঠকের কাগজপত্রে সই করেন জ্বালানি সচিব।  সেখানে বলা হচ্ছে আমদানিকৃত এলএনজির সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে টাকা ছাড় করায় অর্থ বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে হবে।
এ বিষয়ে কথা বলার জন্য পেট্রোবাংলার পরিচালক (অর্থ) হারুন-অর-রশীদের সঙ্গে যোগাযাগ করেও বুধবার তাকে পাওয়া যায়নি।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সেচ মৌসুম ও গ্রীষ্মে বিদ্যুতের চাহিদা বাড়তে শুরু করেছে।  এখন বিদ্যুৎ উৎপাদনে এলএনজির সরবরাহ না বাড়ালে লোডশেডিং সামাল দেওয়া কঠিন হবে। অন্যদিকে দিনের বেলাতেও তরল জ্বালানি নির্ভর বিদ্যুৎকেন্দ্র চালিয়ে রাখতে হলে সরকার বিপাকে পড়বে।  এতে বিদ্যুৎ উৎপাদনে ভর্তুকি বাড়বে।
সাধারণত ডিজেলচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্রে প্রতি ইউনিটের উৎপাদন ব্যয় ২০-২২ টাকার মধ্যে।  ফার্নেস অয়েলে উৎপাদন খরচ ৮-৯ টাকার মতো।  কিন্তু গ্যাসে উৎপাদন খরচ সর্বোচ্চ চার টাকা।  সরকারি কেন্দ্রগুলোতে এই খরচ দুই টাকা ৩০ পয়সা থেকে দুই টাকা ৫০ পয়সা।
সঙ্গত কারণে সরকার যদি এলএনজি আমদানিতে ভর্তুকি না দেয়, তবে তরল জ্বালানি নির্ভর বিদ্যুৎ উৎপাদনে ভর্তুকি বাড়াতে হবে।
জ্বালানি বিভাগের এক কর্মকর্তা বলেন, কোন জ্বালানিতে বিদ্যুৎ উৎপাদন করলে সরকারের ভর্তুকি কম লাগবে তা আগে নিশ্চিত করতে হবে।  এখানে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি বিভাগের সঙ্গে অর্থ বিভাগের সমন্বয় প্রয়োজন।  তবেই বোঝা যাবে আমরা এলএনজিতে অর্থ ছাড় করবো না বেশি দামে তরল জ্বালানির বিদ্যুৎ কিনবো।

ডিসি/এসআইকে/এমএস