চাউলের বাজার নিয়ন্ত্রণহীন, উর্ধ্বমুখী নিত্যপণ্যের মূল্যও

দৈনিক চট্টগ্রাম ডেস্ক >>>
অব্যাহতভাবে গত দুই সপ্তাহ ধরে বেড়েই চলেছে চাউলের দাম।  নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়েছে চাউলের বাজার।  যেনো কেউই উধ্বগতির এই লাগাম টেনে ধরতে পারছেন না।  একইভাবে কয়েকসপ্তাহ ধরে টানা বেড়েছে ব্রয়লার মুরগির দামও।  আর নতুন করে বেড়েছে পেঁয়াজ, আলু ও ভোজ্যতেলের দাম।  এমন পরিস্থিতিতে নিত্যপণ্যের দাম নিয়ে বেশকিছু দিন ধরেই অস্বস্তিতে ভুগছেন ভোক্তারা।
শুক্রবার (৫ মার্চ) বেশ কয়েকটি বাজার ঘুরে এবং ভোক্তাদের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, সব ধরনের চাউলের দাম কেজিতে ২-৩ টাকা করে বেড়েছে।  প্রতি কেজি নাজিরশাইল চাউল এখন ৬৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।  গত সপ্তাহে এই চাউলের দাম ছিল ৬৬ টাকা কেজি।  একইভাবে মিনিকেট চাউলও বিক্রি হচ্ছে ৬৮ টাকা কেজিতে।  এছাড়া জিরা নাজির ৭৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।  কাটারিভোগ ৯০ টাকা, চিনিগুড়া পোলাও চাউল ৯৫ টাকা, পাইজাম ৫৫ টাকা।  আর গরিবের মোটা চাউল বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা কেজি দরে।
সরকারি বিপণন সংস্থা টিসিবি বলছে, গত এক সপ্তাহে মোটা চাউলের দাম বেড়েছে ৪ শতাংশ।  মাঝারি চাউলের দাম বেড়েছে ২ শতাংশ।  চাউলের দাম বৃদ্ধি নিয়ে কথা হয় রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকার বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করা তানভীর রহমানের সঙ্গে।  তিনি বলেন, ‘সীমিত আয়ের মানুষদের পক্ষে ৭০ টাকা কেজি চাউল খাওয়া অসম্ভব।  কিন্তু বাধ্য হয়ে অনেকেই ৬৮ থেকে ৭০ টাকা কেজি চাউল খাচ্ছেন’।  চাউলের দাম কেজিতে অন্তত ২০ টাকা কম হওয়া উচিত বলেও মনে করেন তিনি।
রাজধানীর পুরান ঢাকার চাউল ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাজারে নতুন চাউল না আসা পর্যন্ত চাউলের বাজার এখন যেমন আছে, তেমনই থাকবে।  আমদানি করা চাউলের দাম বেশি হওয়ার কারণে দাম কমছে না বলেও জানান তারা।
এদিকে এক সপ্তাহের ব্যবধানে ব্রয়লার মুরগির দাম কেজিতে বেড়েছে ১০ টাকা।  পাকিস্তানি কক মুরগির দাম কেজিতে বেড়েছে ৫০ থেকে ৭০ টাকা পর্যন্ত।  রাজধানীর বিভিন্ন বাজারের তথ্য বলছে, খুচরা পর্যায়ে ব্রয়লার মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৬০ থেকে ১৬৫ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ১৫০ টাকা।  আর দুই সপ্তাহ আগে ছিল ১৪০ থেকে ১৪৫ টাকার মধ্যে।  যদিও দুই মাস আগে এই মুরগির দাম ছিল ১২০ টাকা কেজি।
গত সপ্তাহে ২৮০ থেকে ৩০০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া সোনালী মুরগির দাম বেড়ে ৩৫০ থেকে ৩৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।  দুই সপ্তাহ আগে এই মুরগির দাম ছিল ২৩০ থেকে ২৫০ টাকা কেজি।  অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে সোনালী মুরগির দাম কেজিতে বেড়েছে ৭০ টাকা এবং দুই সপ্তাহের ব্যবধানে বেড়েছে ১২০ টাকা।
মানিক নগর এলাকার মুরগি ব্যবসায়ী রাকিবুল হাসান বলেন, ‘পাইকারি বাজারে এখন মুরগি কম আসছে।  এছাড়া এখন বিভিন্ন অনুষ্ঠানে মুরগির চাহিদা বাড়ছে।  এ কারণে বাড়তি দামে মুরগি কিনতে হচ্ছে, ফলে বাড়তি দামেই বিক্রি করতে হচ্ছে’।
বাজারে দেশি মসুর ডাল ১০০ টাকা ও ক্যাঙ্গারু মসুর ডাল ১৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।  প্রতি লিটার তেল রূপচাঁদা ১৩৫-১৪০ টাকা, তীর মার্কা তেল ১৩২ টাকা, বসুন্ধরা ১৩০-১৩৫ টাকা, চাঁন তেল ১৩০ টাকা ও পুষ্টি তেল ১৩৫-১৪০ টাকায় প্রতি লিটার বিক্রি হচ্ছে।  প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ২২ টাকা, পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে কেজি ৩০ থেকে ৪০ টাকায়।
বাজারের তথ্য বলছে, গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে দেশি পেঁয়াজের দাম কেজিতে বেড়েছে ১০ টাকার বেশি।  টিসিবি বলছে, এক সপ্তাহে দেশি পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ৩৬ শতাংশ।  আর আমদানি করা পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ১৮ শতাংশ।  এছাড়া রসুন ১১০ টাকা ও আদা ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বাজারে অধিকাংশ সবজি বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকার কাছাকাছি।  প্রতি পিস পাতাকপি ও ফুল কপি ২০ টাকা, আকারভেদে লাউ প্রতি পিস ২০-৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।  প্রতি কেজি কাঁচামরিচ ও ধনিয়া ২০-৫০ টাকা, টমেটো ৪০ টাকা, শিম ৩০ টাকা ও বেগুন ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।  সরিষা শাক ১০ টাকা, পালং শাক ৮-১০ টাকা, ডাটা হালি প্রতি ১৫ টাকা, লাল শাক ১০ টাকা, পুই শাক ২০ টাকা, কলমি শাক ১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

ডিসি/এসআইকে/এমএসএ