সাড়ে ৩ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ মূল্যসূচক ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে

দৈনিক চট্টগ্রাম ডেস্ক >>>
ফ্লোর প্রাইস উঠিয়ে দেওয়ায় সার্কিট ব্রেকারের নতুন নিয়মের বিষয়ে ভয় কেটেছে বিনিয়োগকারীদের।  সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবস সোমবার (২১ জুন) সূচকের তেজিভাবের মধ্যদিয়ে দেশের দুই পুঁজিবাজার ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে লেনদেন শেষ হয়েছে।  অবশ্য আতঙ্ক কাটিয়ে রবিবার লেনদেনের শেষের দিকেই ঊর্ধ্বমুখী ধারায় ফেরে শেয়ার বাজার।  আর সোমবার (২১ জুন) শেয়ার বাজারের মূল্যসূচকে রীতিমতো উল্লম্ফন হয়েছে।  এর মাধ্যমে প্রায় সাড়ে তিন বছর বা ২০১৮ সালের ৩০ জানুয়ারির পর প্রধান শেয়ার বাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান মূল্যসূচক সর্বোচ্চ অবস্থানে উঠে এসেছে।  এর সঙ্গে বেড়েছে লেনদেনের পরিমাণ।
সোমবার লেনদেন শুরু হয় প্রায় সবকটি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার মাধ্যমে।  এতে প্রথম মিনিটের লেনদেনেই প্রধান শেয়ার বাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান মূল্যসূচক ২১ পয়েন্ট বেড়ে যায়।  সময়ের সঙ্গে সূচকের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতাও বাড়তে থাকে।
অনেকেই বলছেন, ফ্লোর প্রাইস উঠিয়ে দেওয়ার মাধ্যমে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) অত্যন্ত বিচক্ষণতার পরিচয় দিয়েছে।  এতে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বিনিয়োগকারীদের অপশন বেড়ে যাবে।  যার ফলে লেনদেনের গতি বাড়ার পাশাপাশি সার্বিক বাজারেও ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।
গত বছর দেশে মহামারি করোনা ভাইরাসের প্রকোপ শুরু হলে শেয়ার বাজারে ভয়াবহ ধস নামে।  শেয়ার বাজারের পতন ঠেকাতে গত বছরের ১৯ মার্চ সেই সময়ের কমিশন প্রতিটি কোম্পানির শেয়ারের সর্বনিম্ন দাম বেঁধে দিয়ে ফ্লোর প্রাইস নির্ধারণ করে দেয়।
তবে প্রায় এক বছর ধরে শেয়ার বাজার ভালো অবস্থানে থাকায় গত বৃহস্পতিবার ফ্লোর প্রাইস তুলে দেয় নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।  সেই সঙ্গে সার্কিট ব্রেকারের নতুন নিয়ম আরোপ করা হয়।
সোমবার দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৫৬ পয়েন্ট বেড়ে ৬ হাজার ১২৫ পয়েন্টে উঠে এসেছে।  এর মাধ্যমে ২০১৮ সালের ৩০ জানুয়ারির পর সূচকটি সর্বোচ্চ অবস্থানে উঠে আসলো।  ২০১৮ সালের ৩০ জানুয়ারি সূচকটি ৬ হাজার ১২৭ পয়েন্টে ছিল।
প্রধান মূল্যসূচকের পাশাপাশি বড় উত্থান হয়েছে অপর দুই সূচকে।  এর মধ্যে বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক ১৩ পয়েন্ট বেড়ে দুই হাজার ২২০ পয়েন্টে অবস্থান করছে।  আর ডিএসইর শরিয়াহ্ সূচক ৮ পয়েন্ট বেড়ে এক হাজার ৩০৫ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
মূল্যসূচকে বড় উত্থানের পাশাপাশি বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বেড়েছে।  ডিএসইতে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে ২২৪টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট।  বিপরীতে দাম কমেছে ১১৯টির এবং ২৯টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে দুই হাজার ৪৩ কোটি ৪৮ লাখ টাকা।  আগের দিন লেনদেন হয় এক হাজার ৮৩৫ কোটি ২৫ লাখ টাকা।  সেই হিসাবে লেনদেন বেড়েছে ২০৮ কোটি ২৩ লাখ টাকা।
টাকার অঙ্কে ডিএসইতে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে বেক্সিমকোর শেয়ার।  কোম্পানিটির ১১১ কোটি ৯৪ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে।  দ্বিতীয় স্থানে থাকা মালেক স্পিনিংয়ের ৬৩ কোটি ৮২ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে।  ৬০ কোটি ৭৩ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ন্যাশনাল ফিড।
এদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ১৭৮ পয়েন্ট।  বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৭৯ কোটি ৩৭ লাখ টাকা।  লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩০৯টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১৯৫টির দাম বেড়েছে।  বিপরীতে দাম কমেছে ৯৬টির এবং ১৮টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

ডিসি/এসআইকে/এমএসএ