আবারো গৃহকর বাড়ানোর উদ্যোগ নিলো চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন, আন্দোলনের হুমকি

নগর প্রতিবেদক, দৈনিক চট্টগ্রাম >>>
বন্দরনগরী চট্টগ্রামে আবারো গৃহকর (হোল্ডিং ট্যাক্স) বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক)।  এজন্য স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের কাছে অনুমতি চেয়ে আবেদনও করেছে চসিক।  তবে গৃহকর বাড়ানো হলে আন্দোলনের হুমকি দিয়েছে বিভিন্ন সংগঠন।
এর আগেও এর আগের মেয়র ও নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন কয়েক দফায় গৃহকর বাড়ানোর উদ্যোগ নিলে প্রয়াত মেয়র ও নগর আওয়ামী লীগের তৎকালীন সভাপতি এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী প্রতিহতের ঘোষণা দিয়ে মাঠে নামেন।  এক পর্যায়ে সিটি কর্পোরেশন সে সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে।
জানা গেছে, সিটি কর্পোরেশনসমূহ ১৯৮৬ এর ২১ নম্বর কর বিধিমতে প্রতি পাঁচ বছর পর কায়িক অনুসন্ধানের মাধ্যমে গৃহকর পুনর্মূল্যায়ন করতে পারে।  সবশেষ বন্দরনগরীতে ২০১০-১১ অর্থবছরে এই কর পুনর্মূল্যায়ন করা হয়েছিল।  এরপর ২০১৭ সালের ৩১ আগস্ট নগরের ৪১ ওয়ার্ডে গৃহকর পুনর্মূল্যায়ন করে জনসম্মুখে প্রকাশ করা হয়।  তারপর থেকে আন্দোলনে নামে ভবন মালিক ও বিভিন্ন সংগঠন।
আন্দোলনের মুখে ওই বছরের ১০ ডিসেম্বর স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় গৃহকর পুনর্মূল্যায়ন স্থগিত করে চসিককে চিঠি দেয়।  গত ২ জানুয়ারি চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ শহীদুল আলম স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিবকে সেই স্থগিত আদেশ প্রত্যাহারের চিঠি দিলে গৃহকর বাড়ানোর বিষয়টি আবার সামনে আসে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ শহীদুল আলম বলেন, ২০১০-২০১১ অর্থবছরের পর এই কর আর বাড়ানো হয়নি।  এর মধ্যে চসিকের বিভিন্ন খাতে ব্যয় বেড়েছে। সার্বিক বিষয় বিবেচনা করে গৃহকর পুনর্মূল্যায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।  এজন্য মন্ত্রণালয়ে স্থগিত আদেশ প্রত্যাহারের আবেদন করা হয়েছে।  অনুমতি পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে নতুন করে আবার গৃহকর বাড়ানো হলে আন্দোলনের হুমকি দিয়েছে ‘করদাতা সুরক্ষা পরিষদ’ নামে একটি সংগঠন।  ২০১৭ সালেও গৃহকর বাড়ানোর উদ্যোগের বিরোধিতা করে আন্দোলন করেছিল সংগঠনটি।
জানতে চাইলে সংগঠনটির সমন্বয়ক হাসান মারুফ রুমী বলেন, ১৯৮৬ সালে স্বৈরশাসক এরশাদের করা একটি আইনের মাধ্যমে গৃহকর বাড়াতে চায় চসিক।  বিএনপির সমর্থনে নির্বাচিত মেয়র এম মনজুর আলম বাদে চসিকের অতীতের কোনো মেয়র এই আইনের বাস্তবায়ন করেনি।  ২০১০-২০১১ অর্থবছরে তিনিও মোটামুটি সহনীয় পর্যায়ে বাড়ানোয় জনগণ আন্দোলন করেননি।  আবার যদি এই আইনের দোহাই দিয়ে গৃহকর বাড়ানোর চেষ্টা করা হয়, তবে তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।

ডিসি/এসআইকে/এমএসএ