চট্টগ্রামে জমে উঠেছে শেষ মুহূর্তের কেনাকাটা, বেচাবিক্রির রেকর্ড

বিশেষ প্রতিনিধি, দৈনিক চট্টগ্রাম >>>
শেষ মুহূর্তের ঈদ কেনাকাটায় ব্যস্ত সময় পার করছেন নগরবাসী।  শনিবার (৩০ এপ্রিল) সকাল থেকেই নগরীর শপিং মল ও বিপনী বিতানগুলোতে উপচে পড়া ভিড় ছিল ক্রেতাদের।  বিভিন্ন দোকানে ঘুরে ঘুরে পছন্দের জিনিসপত্র কিনছেন ক্রেতারা।  অনেকে পোশাক কেনার পর কিনতে এসেছেন প্রসাধনী সামগ্রী।  আবার কেউ কেউ কম দামে কেনার আশায় শেষ মুহূর্তে ভিড় জমাচ্ছে মার্কেটে।  করোনা বিধি-নিষেধ না থাকায় এবার বিক্রিও ভালো হয়েছে বলে জানালেন ব্যবসায়ীরা।  অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার বেচাবিক্রিতেও রেকর্ড গড়েছে বলে সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা স্বীকার করেছেন।
সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, নগরীর তামাকমুন্ডি লেইন, রিয়াজউদ্দিন বাজার, স্যানমার ওশান সিটি, আফমি প্লাজা, ইউনেস্কো সেন্টার, আমীন সেন্টার, মিমি সুপার মার্কেট, নিউমার্কেট, আখতারুজ্জামান সেন্টার, সেন্ট্রাল প্লাজা, চিটাগাং শপিং কমপ্লেক্স, লাকি প্লাজা, সিঙ্গাপুর মার্কেট, ভিআইপি টাওয়ার, মতি টাওয়ার, হাইওয়ে প্লাজা, স্বজন সুপার মার্কেট, গুলজার টাওয়ার, কেয়ারী ইলিশিয়াম, চকভিউ মার্কেট, মতি টাওয়ার, মতি কমপ্লেক্স, সৈয়দ টাওয়ার, বালি আর্কেডসহ সব মার্কেটেই ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড় দেখা গেছে। তবে থান বা সেলাইবিহীন কাপড়ের দোকানে ভিড় কম ছিল।
নগরীর তামাকমুন্ডি লেইন থেকে ছেলের জন্য গেঞ্জির সেট নিচ্ছিলেন গৃহিনী উম্মে সালমা।  তিনি জানান, পরিবারের সবার শপিং শেষ।  ছোট ছেলের জন্য একটা গেঞ্জির সেট নিতে আসলাম।  ছোটদের এক কাপড়ে হয় না।  এখান থেকে দুই সেটা নিলাম।  ঈদের বাজার হওয়ায় দামও একটু বেশি।
শেষ দিকে লুঙ্গির বেচা-বিক্রিতেও খুশি দেখা গেল দোকানিদের। টেরিবাজারে লুঙ্গি কিনতে আসা জাহাঙ্গীর আলম জানান, প্রতিবছরই ঈদে অন্যান্য পোশাকের সঙ্গে লুঙ্গিও কিনতে হয়।  বাড়িতে থাকলে লুঙ্গিতেই স্বাচ্ছন্দবোধ করি।  ঈদ উপলক্ষে ছেলে ও আমার জন্য দুটি লুঙ্গি নিলাম।
এদিকে ঈদ যতই ঘনিয়ে আসছে শহর ছেড়ে গ্রামে পাড়ি জমাচ্ছেন শহরের অনেক বাসিন্দা।  অন্যদিকে নগরের স্থায়ী বাসিন্দারা চাঁদরাতের কেনাকাটার জন্য মার্কেটে ভিড় করছেন।  অনেকের ধারণা চাঁদ রাতের কেনাকাটায় পণ্য সস্তায় পাওয়া যায়।  তাই অনেকের শপিং শেষ হলেও আবারও মার্কেটে ঢু মারছেন শেষবারের মত।  আবার কেউ কেউ জুয়েলারির দোকানে ভিড় করছেন।
এবার করোনা বিধি-নিষেধ না থাকায় বেচাবিক্রিও ভালো হয়েছে বলে জানালেন চকবাজার গোলজার টাওয়ারের ব্যবসায়ী আহমদ জনি।  তিনি বলেন, গত দুই বছরের লোকসানে ছিলাম।  ধারদেনা করে দোকানে মালামাল তুললেও বিক্রি হয়নি।  তবে এবার করোনার বিধি-নিষেধ না থাকায় বিক্রি ভালো হয়েছে।  এবার ঈদ উপলক্ষে ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত থেকে মালামাল এনেছিলাম।  বেশিরভাগ পণ্যই বিক্রি হয়েছে গেছে।
মতি টাওয়ার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ জামাল উদ্দীন বলেন, প্রতি ঈদেই আমাদের মার্কেটে ক্রেতাদের ভিড় থাকে।  এ বছরও ব্যতিক্রম নয়।  রোজার শুরু থেকেই বেচা-বিক্রি ভালো ছিল।  শেষ মুহূর্তেও জমে উঠেছে কেনাকাটা।  আমরা যেমন আশা করেছিলাম এর চেয়ে ভালো চলছে।  ঈদের আগে জুতা-স্যান্ডেল ও কসমেটিকসের বেচাবিক্রি বেশি হয়।  বিশেষ করে নারীদের পণ্যগুলো বেশি চলে।  আমাদের মার্কেটে এসে ক্রেতারা বিশ্বের বিভিন্ন নামীদামি ব্র্যান্ডের পণ্য কিনতে পারছেন।  কসমেটিকস সামগ্রীর আমদানি ব্যয় বাড়ার কারণে দাম আগের বছরের তুলনায় কিছুটা বেড়েছে।  ঈদের বাকী আর বেশিদিন নেই।  অনেক মানুষ গ্রামে চলে গেছেন।  শেষ মুহূূর্তে স্থানীয় ক্রেতারাই দোকানে ভিড় জমাচ্ছেন।  তাই মার্কেটে শেষ মুহূতের্ও একটু ভিড় দেখা যাচ্ছে।

ডিসি/এসআইকে/সিসি