বাড়ছে বিদ্যুতের দামও

দৈনিক চট্টগ্রাম ডেস্ক >>>
উৎপাদন পর্যায়ে জ্বালানির দাম বাড়লে বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির কোনও বিকল্প থাকে না।  এবার গ্যাসের দাম বৃদ্ধির ঘোষণার মধ্য দিয়ে বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির বিষয়টি স্পষ্ট করেছে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন।  আজ কমিশনের ঘোষণায় সব ধরনের গ্যাসের দাম প্রায় ১৩ ভাগের কাছাকাছি (১২ দশমিক ৮১) বাড়ানো হয়েছে।
কমিশনের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আবু ফারুক এ প্রসঙ্গে সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, বিদ্যুৎ উৎপাদনে গ্যাসের দাম বাড়ায় বিদ্যুতের দামও বাড়বে।  তবে সেটি কত ভাগ বাড়বে তা এখনও স্পষ্ট হয়নি।
সরকারের তরফ থেকে গত অর্থ বছরে বিদ্যুৎ উৎপাদনে প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকার ভর্তুকি দেওয়া হয়েছে।  চলতি বছরের বাজেটেও বিদ্যুৎ উৎপাদনে ২৮ হাজার কোটি টাকার ভর্তুকি থাকছে।  দেশের শতভাগ মানুষ বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় থাকাতে ভর্তুকির পরিমাণ দিন দিন বাড়াতে হচ্ছে।
গত ১৮ মে পিডিবির পাইকারি বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর ওপর গণশুনানি করে কমিশন।  পিডিবির পাইকারি বিদ্যুতের দাম বর্তমানে প্রতি কিলোওয়াট ঘণ্টা ৫ টাকা ১৭ পয়সা।  পিডিবি এই দাম ৬৬ ভাগ বাড়িয়ে ৮ টাকা ৫৮ পয়সা করার প্রস্তাব দিয়েছিল।  তাদের প্রস্তাব মূল্যায়ন করে বিইআরসির কারিগরি কমিটি এই দাম ভর্তুকি দিলে আগের দাম অর্থাৎ ৫ টাকা ১৭ পয়সা এবং ভর্তুকি না দিলে ৮ টাকা ১৬ পয়সা করার সুপারিশ করে।  যদিও সরকারের ভর্তুকির ওপর নির্ভর করছে কতটা বিদ্যুতের দাম বাড়বে।  তবে গ্যাসের দাম বাড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে বিদ্যুতের দাম বাড়লে মানুষের ওপর চাপ পড়বে বলে মনে করা হচ্ছে।
সাধারণত জ্বালানির দাম ১০ ভাগ বাড়লেই বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি করা হয়।  এবার সেখানে ১৩ ভাগের কাছাকাছি গ্যাসের দাম বাড়ানো হলো।  দেশের মোট বিদ্যুতের এখনও ৫৫ থেকে ৬০ ভাগ গ্যাস দিয়ে উৎপাদন করা হয়।
জ্বালানি বিশেষজ্ঞ শামসুল আলম বলেন, কমিশন তাদের গতানুগতিক ধারা থেকে বের হয়ে পড়ছে।  অযৌক্তিক ব্যয়বৃদ্ধির বিরুদ্ধে কমিশন কাজ করতে পারছে না।  আমরা ক্যাবের পক্ষ থেকে যে ২৫ দফা প্রস্তাব দিয়েছিলাম সেখানে সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়নে কাজ করা এবং আন্দোলনে যাবার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।  তিনি বলেন, কমিশনকে এই ধারার বাইরে আনা না গেলে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি কমবে না।  হঠাৎ করেই গ্যাসের দাম এই পরিমাণ বাড়ানোর ফলে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব দেওয়ার বিষয়টি এখন কোম্পানিগুলোর জন্য সহজ হয়ে গেলো।
এদিকে বিদ্যুতে গ্যাসের দাম বাড়ানোর পাশাপাশি বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর জন্য নতুন করে আরোপিত হলো ডিমান্ড চার্জ।  এতদিন গ্যাসের কোম্পানিগুলো বিদ্যুৎকেন্দ্রেগুলোর কাছ থেকে ডিমান্ড চার্জ চাইলেও তারা বিষয়টিকে পাত্তা দিচ্ছিলো না।  এবারের গ্যাসের শুনানিতে আবারও বিষয়টি তুলে ধরে কোম্পানিগুলো।  তারই প্রেক্ষিতে এবার গ্যাসের দাম বৃদ্ধির আদেশে বলা হয়, প্রতি ঘনমিটারে ০ দশমিক ১০ টাকা ডিমান্ড চার্জ পরিশোধ করতে হবে তাদের।  এর অর্থ এখন থেকে গৃহস্থালি ছাড়া অন্য সব গ্যাস গ্রাহককে প্রতি ঘনমিটারে ০ দশমিক ১০ টাকা ডিমান্ড চার্জ পরিশোধ করতে হবে।
প্রসঙ্গত, এর আগে অন্যান্য গ্রাহক শ্রেণি ডিমান্ড চার্জ পরিশোধ করলেও সরকারি বেসরকারি ছোট বড় বিদ্যুৎকেন্দ্র ডিমান্ড চার্জ পরিশোধ করতো না।

ডিসি/এসআইকে/এমএসএ